বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

তিনিই সবার স্রষ্টা, রিজিকদাতা, পালনকর্তা ও কর্মসম্পাদক

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

কুরআন মাজীদ অত্যন্ত প্রবল ও বিস্তারিতভাবে এ বিষয়টিও বাতলে দিতে এবং অন্তরে এ প্রত্যয় সৃষ্টি করতে চাইছে যে, সমগ্র জগতের সৃষ্টি এবং নাস্তি থেকে অস্তিত্ব দানও আল্লাহ তায়ালাই করেছেন। তিনি এই জগৎ-সংসারের যাবতীয় ব্যবস্থাপনা কারও শরিকানা ব্যতিরেকে চালিয়ে যাচ্ছেন।
জীবন ও রিজিক প্রভৃতি জীবনের যাবতীয় উপায়-উপকরণ যে যা পাচ্ছে, তা আল্লাহ তায়ালাই সরবরাহ করছেন। তাকে ছাড়া কারো হাতে না আছে জীবন, না আছে জীবনোপকরণ। বরং তিনিই যাকে যতক্ষণ যে পরিমাণ দিতে চান, দেন। আর যাকে দিতে চান না, দেন না। কুরআনের অনেকটা অংশ এ সম্পর্কিত আলোচনায় পূর্ণ। এখানে এ প্রসঙ্গে কয়েকটি আয়াত দেখে নেয়া যেতে পারে। সূরা আ’রাফে বলা হয়েছে, ‘শুনে নাও, সৃষ্টি করা এবং নির্দেশ প্রদান করা তারই কর্ম। আল্লাহ কল্যাণময়, যিনি পালনকর্তা সমগ্র সৃষ্টির।’ (সূরা আ’রাফ : আয়াত ৫৪)। সূরা যুমারে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহই যাবতীয় বস্তুসামগ্রীর সৃষ্টিকর্তা এবং তিনিই যাবতীয় বিষয়ের দায়িত্বশীল। নভোমন্ডল ও ভু-মন্ডলের (সমস্ত ভান্ডার ও তার) চাবি তারই হাতে।’ (সূরা যুমার : আয়াত ৬২-৬৩)।
সূরা রূমে মুশরিকদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে, ‘তিনিই আল্লাহ যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তিনিই তোমাদের রিজিকদাতা। তারপর (সময়মত) তিনিই তোমাদেরকে মৃত্যু দান করবেন এবং অতঃপর তিনিই তোমাদের পুনরুত্থিত করবেন। তোমাদের সেসব অংশীদারদের মাঝে (যাদেরকে তোমরা ইবাদত-উপাসনায় আল্লাহ তায়ালার শরিক করছ) কেউ আছে কি, যে এসব কাজের কোনোটি সম্পাদন করবে? সে আল্লাহ পবিত্র এবং তাদের শিরক ও শরিকদের ঊর্ধ্বে।’ (সূরা রূম : আয়াত ৪০)।
সূরা শূরায় ইরশাদ হয়েছে, ‘ সে আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা। তিনিই তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য এবং চতুষ্পদদের মাঝেও জোড়া সৃষ্টি করেছেন। তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে বিস্তৃত করেছেন এবং বর্ধিত করেছেন। তার কোনা তুলনা নেই। তিনি শ্রবণকারী ও দর্শনকারী (সবসময় সবার কথা শোনেন এবং দেখেন)। আকাশ ও পৃথিবীর (যাবতীয় ভান্ডার ও তার) চাবি তারই হাতে রয়েছে। তিনি যাকে ইচ্ছা জীবিকার প্রশস্ততা দান করেন। আর যাকে ইচ্ছা সঙ্কীর্ণতায় নিপতিত করেন। নিঃসন্দেহে তিনি সবকিছু সম্যক অবগত।’ (সূরা শূরা : আয়াত ১১-১২)।
সূরা ইবরাহীমে বলা হয়েছে : ‘আল্লাহ তিনিই যিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশ ও পৃথিবী এবং পানি অবতীর্ণ করেছেন আকাশ থেকে। তারপর তার মাধ্যমে তোমাদের জীবিকাস্বরূপ দান করেছেন খাদ্যশস্য ও ফলমূল। আর তোমাদের আয়ত্বে এনে দিয়েছেন জলযানসমূহকে যাতে সেগুলো তার নির্দেশক্রমে (তোমাদের কাজে) সাগর বক্ষে চলমান থাকে। তিনি তোমাদের কাজে লাগিয়েছেন নদী-নালাকে (যাতে তোমরা নিজেদের নৌকা ভাসিয়ে থাক এবং তার পানিতে নিজেদের বিবিধ কাজ সম্পন্ন করো)। আর তিনি তোমাদের কাজে নিয়োগ করেছেন দিবস ও রজনীকে। (অর্থাৎ, তিনি দিন ও রাতের ব্যবস্থাপনাকে এমনিভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন যেমন তোমাদের চাহিদা ও কল্যাণের দাবি।
তা ছাড়া তোমাদের কল্যাণের এসব সামগ্রীই শুধু তিনি তৈরি করেননি, বরং এগুলো ছাড়াও তোমাদের জীবনের জন্য যা কিছু প্রয়োজন ছিল) এবং অবস্থা ও ভাষার মাধ্যমে যা কিছু তোমরা তার কাছে চেয়েছ, তিনি তোমাদের তা দান করেছেন। আর (আল্লাহ তায়ালার সেই দয়া ও অনুকম্পার মাধ্যমে তোমাদের জীবনের ব্যবস্থাপনা সচল রয়েছে। উপরন্তু তোমাদের প্রতি তার আশীর্বাদ এত বিপুল যে,) যদি তোমরা সেগুলো গণনা করতে চাও, তবে তা শেষ করতে পারবে না। বলতে গেলে মানুষ হল, নিতান্ত অবিচারী ও অকৃতজ্ঞ।’ (সূরা ইবরাহীম : আয়াত ৩২-৩৪)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Zulfiqar Ahmed ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩২ এএম says : 0
এ পৃথিবীতে মানুষের সবচেয়ে বেশি পেরেশানি হলো খাবার নিয়ে। এছাড়া মানুষ সমাজে নিজে সব চেয়ে বড় করে তুলে ধরে সম্মানের পাত্র হতে চায়। অথচ এ দুটি জিনিসেরিই মালিক মহান আল্লাহ।
Total Reply(0)
আমিন মুন্সি ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩৩ এএম says : 0
পবিত্র কোরআনের সূরা সাবার ৩৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে ‘বল, আমার প্রতিপালক তো তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা রিজিক বর্ধিত করেন এবং যাহার প্রতি ইচ্ছা সীমিত করেন। তোমরা যাহা কিছু ব্যয় করিবে তিনি তার প্রতিদান দিবেন। তিনিই শ্রেষ্ঠ রিজিকদাতা।’ আল্লাহ জীবিকা বা রিজিকের মালিক। তিনিই মানুষকে রিজিক দেন।
Total Reply(0)
আমির হামজা ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩৪ এএম says : 0
আল্লাহ ইচ্ছা করলেই যে কোনো ব্যক্তির রিজিক বাড়িয়ে দিতে পারেন, তেমনি তিনি তা কমিয়ে দিতেও পারেন। আল্লাহ যেহেতু মানুষকে সম্পদ দেন, সেহেতু মানুষ যদি আল্লাহর নির্দেশিত পথে সে সম্পদ ব্যয় করে তবে তিনি বান্দাকে তার বিনিময় দান করার ব্যাপারেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আল্লাহ ইচ্ছা করলেই যে কাউকে পর্যাপ্ত রিজিক দিতে পারেন। সব মানুষের জন্য পর্যাপ্ত রিজিকের ব্যবস্থা করতে পারেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে এক মানুষের সঙ্গে অন্য মানুষের নির্ভরতার সম্পর্ক নষ্ট হতো। মানুষের মধ্যে একে অপরকে তোয়াক্কা না করার মনোভাব দেখা দিত।
Total Reply(0)
খবির উদ্দিন মোল্লা ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩৪ এএম says : 0
আল্লাহ রিজিকের মালিক বিধায় পাথরখণ্ডের মধ্যে বসবাসকারী ক্ষুদ্র পতঙ্গের ক্ষুধাও তিনি নিবারণ করেন। ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থার মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে তিনি যে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেছেন তা কেবল অলৌকিক সত্তার পক্ষেই সম্ভব। তাই জীবিকার জন্য অযথা অস্থিরতা কাম্য নয়। সবাই তার বরাদ্দকৃত সময় ও জীবিকা শেষ করেই দুনিয়া থেকে বিদায় হবে।
Total Reply(0)
খবির উদ্দিন মোল্লা ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩৪ এএম says : 0
আল্লাহ রিজিকের মালিক বিধায় পাথরখণ্ডের মধ্যে বসবাসকারী ক্ষুদ্র পতঙ্গের ক্ষুধাও তিনি নিবারণ করেন। ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থার মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে তিনি যে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেছেন তা কেবল অলৌকিক সত্তার পক্ষেই সম্ভব। তাই জীবিকার জন্য অযথা অস্থিরতা কাম্য নয়। সবাই তার বরাদ্দকৃত সময় ও জীবিকা শেষ করেই দুনিয়া থেকে বিদায় হবে।
Total Reply(0)
Amdad ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩৫ এএম says : 0
যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসা করবে, সে তার সব প্রয়োজনের জন্য যথেষ্ট এবং তার সব অকল্যাণ ও ক্ষতিকর বিষয় তিনি প্রতিহত করবেন এবং ধারণাতীতভাবে তাকে জীবিকা দান করবেন। হাদিসে এসেছে, ‘যদি তোমরা আল্লাহ তায়ালার ওপর সঠিক ও যথাযথভাবে ভরসা করো, তাহলে তিনি তোমাদের পাখির মতো জীবিকা দান করবেন, ক্ষুধার্ত অবস্থায় সবাই বের হয় আর পেটপূর্তি করে বিকালে বাসায় ফিরে।’ (আহমাদ, তিরমিজি)।
Total Reply(0)
Tasfia Jahan Mim ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩৬ এএম says : 0
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, আল্লাহপাকই সৃষ্টি জগতের স্রষ্টা, পালনকর্তা এবং রিজিকদাতা। পৃথিবীতে বিচরণকারী সব সৃষ্ট জীবের রিজিকের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহপাক গ্রহণ করেছেন। এটি সৃষ্টি জগতের প্রতি তার করুণা। কোনো প্রাণীকে যতক্ষণ তিনি জীবিত রাখার ইচ্ছা করেন ততক্ষণ রিজিক যে কোনো উপায়ে তার কাছে পৌঁছতে থাকে।
Total Reply(0)
Kabir Sardar ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩৬ এএম says : 0
আমাদের সবাইকে আল্লাহর রিজিক পেয়ে ধন্য হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন