ঋতু পরিক্রমায় সময় না হলেও নাটোরের লালপুর উপজেলার বসত বাড়ির আঙ্গিনায় ও বাগনের আম গাছ গুলিতে আসতে শুরু করেছে আগাম মুকুল। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে একটি সুন্দর গন্ধ। মুকুলের মৌ মৌ মিষ্টি গন্ধ জানান দিচ্ছে মধুমাস সমাগত। এবার শীতের তেমন তীব্রতা না থাকায় ও আবহাওয়াগত কারনে নির্ধারিত সময়ের একমাস আগেই গাছগুলিতে আগাম মুকুলের দেখা মিলেছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।
পৌষের শুরুতেই আগাম মুকুলের দেখা দেয়ায় আমচাষীদের মনে আশার আলো দেখা দিয়েছে। তবে ঘন কুয়াশা হলে এই সকল আগাম মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানান কৃষি বিভাগ। আমের রাজধানী হিসেবে রাজশাহী ও চাপাই নবাবগঞ্জ বিখ্যাত হলেও নাটোর জেলাও এখন কোনো অংশে কম নয়। লালপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, গত বছর এই উপজেলায় ১ হাজার ৭ শত ২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের বাগান ছিলো। তবে এবছর বাগানের পরিমাণ কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।এখানকার চাষকৃত উল্লেখযোগ্য জাতের আম হলো, ফজলি, নেংড়া, খেরসাপতি, গোপালভোগ, আম্রপালি, লকনা অন্যতম।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে লালপুর উপজেলার ধুপইল ও ওয়ালিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে বাড়ির আঙ্গিনায় ও বাগানের কিছু কিছু গাছে আগাম মুকুল এসেছে। গাছে আগাম মুকুল আসায় বাগান মালিকরা পরিচর্যার কাজ শুরু করেছেন। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন চাষী ও বাগান মালিকরা।তবে আরো কিছু দিন পরে বাগান গুলিতে মুকুল আসবে বলে জানান তারা।
এসময় কথা হয় আমচাষী ভাস্কর সরকারের সঙ্গে তিনি ইনকিলাব কে বলেন, ‘এবছর লালপুর শীতের তীব্রতা কম থাকায় এবং অন্য মৌসুমের চেয়ে এবার তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকায় সময় না হলেও অসমেয়ই কিছু কিছু গাছে মুকুল এসেছে। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে এবার গাছগুলোতে মুকুলের সমারোহ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।’
আম চাষী সান্তুনু বলেন, ‘ফেব্রয়ারী মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুকুল আসার কথা থাকলেও জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহেই এখানকার অনেক গাছেই মুকুল এসেছে। তবে চলতি মাসের শেষের দিকেই প্রতিটি গাছেই পুরোপুরিভাবে মুকুল ফুটতে শুরু করবে বলে জানান তিনি।’
নাটোর জেলা অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) অফিসার হাবিবুল ইসলাম খাঁন বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের প্রায় একমাস আগেই আবহাওয়াগত ও জাতের কারণেই মূলত আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। ঘন কুয়াশা বা শৈত্য প্রবাহ নামলে আগাম মুকুলের ক্ষতিহবে। বর্তমানে তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে। আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত এ রকম থাকলে আমের ফলনে কোনো সমস্যা হবে হবে না বলে আশা করা যাচ্ছে।› তিনি আরো বলেন, ‘মূলত তিনটি পর্যায়ে আমের মুকুল আসে। যার প্রথম পর্যায় শুরু হয়েছে।পুরনো জাতের গাছগুলোতে মুকুল ধরেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চলতি মাসের শেষ সময় পর্যন্ত সব গাছে মুকুল দেখা যাবে। গত বছর ডিসেম্বরের শেষের দিক থেকেই গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছিল বলে তিনি জানান।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন