বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

প্রথম তুর্কি সুলতান উসমান খানের অদ্ভুত স্বপ্নকাহিনী

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

স্বপ্নজগতের রহস্য ভেদ করা সহজ নয়। এ সম্পর্কে আল্লাহ যাদের বিশেষ জ্ঞান দান করেছেন, তারাই কেবল স্বপ্নের আসল রহস্য বলতে পারেন। যুগে যুগে রাজা-বাদশা, মনীষী এবং মহামানবসহ সাধারণ স্বপ্ন দেখা মানুষের উপস্থিতি সর্বদাই বিদ্যমান ছিল, আছে এবং থাকবে। স্বপ্নের ব্যাখ্যাও হতে থাকবে। কিন্তু কিছু কিছু স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যার বিস্ময়কর প্রতিফলন লক্ষ করা যায়।
এমন একজন স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন প্রথম তুর্কি সুলতান উসমান খান। তার স্বপ্নের বাস্তবতার সাথে বিশেষজ্ঞরা খুঁজে বের করেছেন তার ইসলাম গ্রহণের অপূর্ব যোগ সূত্র। আমরা এখানে তার স্বপ্ন বিবরণটি তুলে ধরছি। হিজরী ৬৮৭/১২৮৮ সালে তুর্কি বীর বাহাদুর অর তোঘরলের মৃত্যুর পর জ্যেষ্ঠ পুত্র উসমান তার স্থলাভিষিক্ত হন এবং উসমানই ছিলেন উসমানীয় সা¤্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা এবং নিজের গোত্রে সর্বপ্রথম তিনিই ইসলাম গ্রহণ করেন। এ উসমানই এমন একটি সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তন করেন, যার ফলে পরবর্তী ১৫০ বছর ধরে বিশ্বের জবরদস্ত শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো অন্তর্ভুক্ত হতে থাকে এবং ৩০০ বছরে তা সর্ববৃহৎ এক আজিমুশশান সাম্রাজ্যে পরিণত হয়ে যায়, যার অন্তর্ভুক্ত ছিল এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিশাল বিস্তীর্ণ এলাকা।
উসমান খানের স্বপ্নের কথায় আশা যাক, যার সাথে তার সাম্রাজ্যের ও তার ইসলাম গ্রহণের যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করা হয়ে থাকে। আর কী ছিল তার স্বপ্ন, যার ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন এক সাধকের নিকট। আসকি শহর নামক একটি স্থানের নিকট একটি ছোট্ট অবতরণী নামক গ্রামে ওবালি নামক এক সুফি সাধক বাস করতেন।
মাল খাতুন নামক তার এক কন্যা ছিল। উসমান তার যৌবনকালে প্রায়ই সেই সাধকের নিকট যাতায়াত করতেন। তিনি মাল খাতুনের অপূর্ব রূপগুণে ভীষণভাবে মুগ্ধ হয়ে পড়েন এবং সাধক ওবালির নিকট মাল খাতুনের সাথে তার বিয়ের প্রস্তাব পেশ করেন এবং তাকে এক অদ্ভুত স্বপ্নের বর্ণনাও প্রদান করেন।
স্বপ্ন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি এক রজনীতে দেখি, একটি চাঁদ হেলাল আকার ধারণ করে তার বক্ষ হতে বের হয় এবং ধীরে ধীরে ‘বদর’ আঁকড়ে আমার বক্ষে অবতরণ করে। অতঃপর আমার বাহু হতে এক বিশাল বৃক্ষ বের হয় এবং তা বিস্তার লাভ করতে থাকে এমনকি তার শাখাগুলো জলে-স্থলে ছড়িয়ে পড়ে। বৃক্ষটির শাখাগুলো চারটি পর্বত বহন করে নিয়ে যায়। কিছু বলকান পর্বতে, কিছু তুর পর্বতে এবং আটলান্টিক পর্বতে।
তাছাড়া বৃক্ষটির মূল হতে চারটি বিষয় বের হয় দাজলা, ফোরাত, নীল ও দানিউব। তাছাড়া তীব্র বাতাস প্রবাহিত হয় এবং ওই বৃক্ষের তরবারির মতো পাতাগুলোর দিক এক বিশাল শহরের দিকে ফিরে যায়, যা সাগরগুলো ও দু’টি মহাদেশের মিলনক্ষেত্রে অবস্থিত এবং যা একটি আংটিসদৃশ দেখা যাচ্ছিল। আমি আংটিখানা পরিধান করতে চাইছি। হঠাৎ আমার নিদ্রা ভঙ্গ হয়ে যায়।
সাধক ওবালি এ স্বপ্নে উসমানের শানদার ভবিষ্যৎ লক্ষ করে তার কন্যাকে বিয়ে দেন এবং সাধক ওবালির উপদেশ ও তাবলীগে উসমান ও তার গোত্রের সব লোক ইসলাম গ্রহণ করে এবং পরবর্তীকালে স্বপ্নের ব্যাখ্যা অত্যন্ত চমৎকারভাবে বাস্তবরূপ লাভ করেছিল।
সাতশ’ বছর ধরে উসমানীয় খেলাফতের স্থায়িত্বকাল ইসলামী ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় এবং ১৯২৩ সালে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খেলাফত উচ্ছেদের ঘটনা বৃহত্তর মুসলিম ঐক্য ধ্বংসের এক করুণ অধ্যায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
মোঃ বেলায়েত হোসেন ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
সুবহানাল্লাহ। আল্লাহতায়াল এই মহাবীরকে জান্নাতে উচু মাকাম দান করুন।আমীন
Total Reply(0)
সাদ বিন জাফর ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
আরতুগ্রুল গাজী ছিলেন অটোমান সাম্রাজ্য বা উসমানীয় প্রতিষ্ঠাতা প্রথম উসমানের পিতা। বলা হয়ে থাকে তিনিই অটোমান সাম্রাজ্যের ভিত প্রতিষ্ঠা করে যান। তাই তাকে এখনও মুসলিম বিশ্বে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়। আরতুগ্রুল গাজীকে ঐতিহাসিকরা শনাক্ত করেন প্রথম উসমানের সময়ের মুদ্রায় তার নাম দেখে। এই তথ্য ছাড়া ইতিহাসে তার কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। তার নামের শেষে গাজী উপাধিটি মুসলমান যোদ্ধাদের দেওয়া হয় যারা ইসলামের জন্য যুদ্ধ করে বিজয়ী হয়ে ফিরে আসে।
Total Reply(0)
Nahid hasan ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৯ এএম says : 0
আরতুগ্রুলের বিবাহ হয় সেলজুক সাম্রাজ্যের শাহজাদা নোমানের কন্যা হালিমা খাতুনের সাথে। ৬৫৭ হিজরিতে আরতুগ্রুলের একটি পুত্র সন্তান হয় তার নাম রাখা হয় উসমান খান। উনারই নামানুসারে তুর্কি বাদশাদের উসমানীয় সুলতান বা অটোমান সুলতান বলা হয়ে থাকে। ১২৮৭ সালে আরতুগ্রুল গাজী মারা যায়। তখন উসমান খানের বয়স ছিল ত্রিশ বছর। । তখন সেলজুক সুলতান, আরতগ্রুলের পর উসমান খানকেই তার স্থলাভিষিক্ত করেন। উসমান খানের যোগ্যতার দরুন সুলতান আকৃষ্ট হন এবং তাই তাকে নিজ সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিয়োগ করে তার সাথে নিজের মেয়ের বিবাহ দেন। খুব অল্প সময়ের মাঝেই তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উন্নীত হন।
Total Reply(0)
Ameen huda ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৫০ এএম says : 0
সাগুত গ্রামে প্রথম উসমান কর্তৃক নির্মিত একটি গম্বুজ ও মসজিদ আরতুগ্রুলের স্মৃতির উদ্দেশ্যেই বানানো হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু অনেকবার পুনর্নির্মাণের ফলে এর উৎস সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়না। বর্তমান দরগাটি উনিশ শতকের শেষ দিকে সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদ কর্তৃক নির্মিত হয়। প্রথম দিকের উসমানীদের স্মরণে সাগুত শহরে বাৎসরিক উৎসবের আয়োজন করা হয়।
Total Reply(0)
Mamun ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৬:১৮ পিএম says : 0
আমরাতো জানতাম উর্তুগুল মুসলমান ছিলো,তার পিতা,দাদাও ছিল মুসলমান। সম্ভবত উর আমরাতো জানতাম উসমানের পিতা,উর্তুগুল ,এবং তার পিতার ঊর্ধতম বংশধর অনেকেই মুসলমান ছিলেন,তো উর্তুগুলের পুএ উসমান নতুন করে ইসলাম গহন ?বিষয়টা কেমন?
Total Reply(0)
Md Sakhawath ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:৪৬ পিএম says : 0
আর্তগোল তো মুসলমান ছিলো।তার ছেলে তাহলে কিভাবে নতুন করে ইসলাম গ্রহন করে?
Total Reply(0)
MD. FARID AKOND ২৩ জানুয়ারি, ২০২১, ৯:৪১ এএম says : 0
লিখাটিতে ইতিহাস অনেকটাই বিকৃত হয়েছে। পূর্ববর্তী কমেন্টগুলোতে বেসিক সঠিক ইনফরমেশন থাকায় আমি সেগুলো উল্লেখ করছি না।
Total Reply(0)
আল মাসুদ ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৬:৫৫ পিএম says : 0
আরতুগ্রুল গাজী মুসলিম ছিলেন । সুগুতে তার করব রয়েছে।
Total Reply(0)
জয়নাল আবেদীন ১১ অক্টোবর, ২০২১, ৩:১০ এএম says : 0
ইতিহাস বিক্রিত করেন কেন।উসমান ছিলেন জন্মগত ভাবে মুসলমান। আর সূফির নাম এদেব আলী। তার মেয়ে বালা হাতুন কে বিয়ে করেন উসমান। তাঁর দাদা সুলেমান শাহ।বাবা আরতুগ্রুল গাজি উনাদের নাম দেখে কি অমুসলিম মনে হয়
Total Reply(0)
Shahinur Rahman Dictator Shahin ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৪:১৯ পিএম says : 0
Shahinur Rahman er Bangladesh * Shahin: Dictator of Bangladesh
Total Reply(0)
মোঃ সাদিক ইবনে জাহাঙ্গীর ৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:০৮ পিএম says : 0
উসমান মুসলমান ছিলেন না তার পিতা পিতা মহ প্রপিতা কেও মুসলমান ছিলেন না তারা ছিলেন ওগুজ তুর্কি তারা কো কখনোই ইসলাম গ্রহণ করে থাকে নে
Total Reply(0)
মোঃ সাদিক ইবনে জাহাঙ্গীর ৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:০৮ পিএম says : 0
উসমান মুসলমান ছিলেন না তার পিতা পিতা মহ প্রপিতা কেও মুসলমান ছিলেন না তারা ছিলেন ওগুজ তুর্কি তারা কো কখনোই ইসলাম গ্রহণ করে থাকে নে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন