সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল্লাহতায়ালা তাওবা গ্রহণকারী এবং নিতান্ত ক্ষমাশীল

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

গত নিবন্ধে আমরা আল্লাহ তায়ালার রহম ও করম নিয়ে আলোচনা করছিলাম। তার দয়ামায়া ও বান্দাদের জন্য তার করুণা বর্ষণের বর্ণনা করছিলাম। আজ সে সম্পর্কে কোরআনে কারিম থেকে আরো কিছু আয়াত নিয়ে কথা বলতে চেষ্টা করব। যেমন- সূরা আনয়ামের এক জায়গায় বান্দাদের ভালো-মন্দ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালার অবগত থাকার বিষয় বর্ণনার পর বলা হয়েছে, ‘আর তোমাদের পালনকর্তা সব থেকে পরাক্সমুখ, (তার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তা ছাড়া কারো নিকট তার কোনো প্রয়োজন আটকে নেই। তবে) রহমত ও করুণা হলো তার বিশেষ বৈশিষ্ট্য। (এ রহমতের কল্যাণেই তোমরা নিজেদের অপকর্ম সত্ত্বেও বেঁচে আছো। অন্যথায় তার এ ক্ষমতা রয়েছে,) ইচ্ছা করলে তিনি তোমাদেরকে ধ্বংস করে দিয়ে তোমাদের পরে যা ইচ্ছা তোমাদের জায়গায় পৃথিবীতে আবাদ করতে পারেন।’ (সূরা আনয়াম : ১৩৩)।
তেমনিভাবে সূরা কাহফের এক জায়গায় বলা হয়েছে, ‘আর তোমার পালনকর্তা নিতান্ত ক্ষমাশীল এবং বড়ই করুণাময়। তিনি যদি তাদের কর্মের জন্য তাদেরকে পাকড়াও করতে চাইতেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের জন্য আজাব পাঠিয়ে দিতেন। বরং তিনি সেজন্য একটি সময় নির্ধারিত করে রেখেছেন। বস্তুত তাকে ছাড়া তারা কোনো আশ্রয়স্থল হতে পারে না।’ (সূরা কাহফ : আয়াত ৫৮)।
অর্থাৎ, পৃথিবীতে দেখা যায়, অনেক দুষ্ট-দুর্বিনীত আল্লাহর নাফরমানি করে, তার নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করে এবং তার বিধিবিধানের প্রকাশ্য বিরোধিতা করা সত্তে¡ও বেঁচে থাকে; আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের ওপর কোনো আজাব নেমে আসে না। না তাদের ওপর আকাশ থেকে বাজ পড়ে, না ভ‚মি তাদেরকে গিলে ফেলে। কোরআন বলে, এমনটি আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা গুণেরই কল্যাণ। যদি আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি এতখানি মেহেরবান না হতেন, তাহলে এ ধরনের অপকর্মী, অবাধ্যদের ওপর সঙ্গে সঙ্গে আজাব এসে যেত, তাদেরকে এতটুকু অবকাশ দেয়া হতো না। কিন্তু যেহেতু তিনি বান্দাদের প্রতি রহমত ও ক্ষমার আচরণ করতে চান, তাই তিনি পাপী-তাপীদেরকে গোটা এ পার্থিব জীবনে অবকাশদানের সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন। যাতে তাদের মধ্যে যে কেউ নিজের কৃত পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, নিজের আচরণ সংশোধন করে নিয়ে কখনো কোনো সময় আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে চাইলে তা করতে পারে এবং তার আজাব থেকে অব্যাহতি পেয়ে যেতে পারে। সেজন্যই তিনি ধরপাকড় এবং প্রতিদান ও শান্তির জন্য এ পার্থিব জীবনাবসানের পর একটি সময় নির্ধারিত করে রেখেছেন। সে সময় সবাইকে সেখানে উপস্থিত হতে হবে। কারো জন্য কোথাও আত্মগোপন করে সে সময় এবং সে স্থানে উপস্থিত হওয়া থেকে বেঁচে থাকার অবকাশ নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Mohammed Sirajul ২৮ মার্চ, ২০১৯, ২:৪৮ এএম says : 0
তাওবা হলো অতীতের গুনাহের অনুশোচনা, দুনিয়ার কোন উপকারিতা অর্জন অথবা ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য নয় একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যই সার্বক্ষণিকভাবে সে গুনাহ ছেড়ে দেওয়ার উপর দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা। জবরদস্তির মাধ্যমে নয় বরং শরী‘আতের বিধি-নিষেধ তার উপর বহাল থাকবে ততক্ষণ স্বেচ্ছায় এ প্রতিজ্ঞা করবে।
Total Reply(0)
মোঃ নাজীব ২৮ মার্চ, ২০১৯, ২:৪৮ এএম says : 0
ইবাদতসমূহের মধ্যে তাওবা অতি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তাওবার আবশ্যকীয়তা, ব্যাপকতা ও তাতে নিয়মানুবর্তিতার পরিমণ্ডল থেকে পাপী-তাপী যেমন বহির্ভূত নয়, তেমনি আল্লাহর ওলীগণ ও নবীগণও তার পরিসীমা থেকে বাইরে নন। এটি সর্বাবস্থায় সর্বত্র সকলের জন্য প্রযোজ্য। তাওবা মানুষের জীবনের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
Total Reply(0)
সাদ বিন জাফর ২৮ মার্চ, ২০১৯, ২:৪৯ এএম says : 0
‘হে মুমিনগণ! তোমরা সকলেই আল্লাহর কাছে তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’[3] মুফতী মুহাম্মদ আমীমুল ইহসান বলেন: التوبة: هو الرجوع إلى الله بحل عقد الإصرار عن القلب ثم القيام بكل حقوق الرب. ‘অন্তর হতে গোনাহ না করার সংকল্পের মাধ্যমে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করা। অতঃপর প্রতিপালকের যাবতীয় বিধানকে পালন করা।’[4]
Total Reply(0)
তাসলিমা বেগম ২৮ মার্চ, ২০১৯, ২:৪৯ এএম says : 0
যে সকল কথা ও কাজ মানুষকে আল্লাহর নৈকট্য থেকে দূরে সরিয়ে দেয় তা থেকে ফিরে এসে ঐ সকল কথা ও কাজে লেগে যাওয়া,যা দিয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় ও তাঁর অসন্তুষ্টি থেকে বেঁচে থাকা যায়।
Total Reply(0)
নাফিজ খান রেজা ২৮ মার্চ, ২০১৯, ২:৫০ এএম says : 0
হাদীস-১৩. আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,আমি রাসূলুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে বলতে শুনেছি : আমি দিনের মধ্যে সত্তর বারেরও বেশী আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা (ইস্তেগফার) করি ও তাওবা করি।বর্ণনায় : বুখারী
Total Reply(0)
Anwar Hossain ২৮ মার্চ, ২০১৯, ১০:৪৭ এএম says : 0
আর তোমার পালনকর্তা নিতান্ত ক্ষমাশীল এবং বড়ই করুণাময়। আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,আমি রাসূলুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে বলতে শুনেছি : আমি দিনের মধ্যে সত্তর বারেরও বেশী আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা (ইস্তেগফার) করি ও তাওবা করি।বর্ণনায় : বুখারী
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন