বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো

অভিবাসী কর্মীদের নাভিশ্বাস

শামসুল ইসলাম : | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক এয়ারলাইন্সগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছে। যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করায় বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের নাভিশ্বাস উঠছে। এয়ার লাইন্সের ভাড়া অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় ওমরাযাত্রীদেরও অতিরিক্ত অর্থ গুণতে হচ্ছে। সিভিল এভিয়েশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করায় এসব এয়ারলাইন্সগুলো আসন সংকটের দোহাই দিয়ে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে যাচ্ছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ও এ ব্যাপারে নির্বিকার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারী মাস থেকে বাংলাদেশ থেকে পরিচালনাকারী মধ্যপ্রাচ্যগামী জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম মদিনা, দুবাই দোহা, বাহরাইন মাস্কাট, কুয়েত, সারজাহসহ বিভিন্ন রুটে আসন সংকট চরম আকার ধারণ করছে। এ আসন সংকটের সুযোগ নিয়ে এয়ারলাইন্সগুলো বিভিন্ন রুটের ভাড়া দ্বিগুণ করছে। এর ফলে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যগামী কর্মী ও ওমরাযাত্রীগণ। দ্বিগুণ টাকা খরচ করেও তারা অনেক সময়ে ফ্লাইটে সিট পাচ্ছে না। যথা সময়ে কর্মস্থলে যেতে না পারার কারণে বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীরা চাকুরি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া টিকিটের মূল্য বৃদ্ধির কারণে দেশ প্রচুর পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে। পরিস্থিতি এমন দিকে গড়াচ্ছে যে এসব বিষয় দেখার কেউ নেই।
ব্যবসায়ীক লস হওয়ায় ইত্তেহাদ এয়ারওয়েজ, ফ্লাই দুবাই , ওমান এয়ার ও জেট এয়ারওয়েজ ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সপ্তাহে প্রায় ১ হাজার ক্যাপাসিটি লস হয়েছে। এমিরেটস এয়ারওয়েজ তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে আগামী ১৬ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশে ফ্রিকুয়েন্সী কমিয়ে দিবে। কাতার এয়ারওয়েজও সউদী আরবে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারছে না। এতে এয়ারলাইন্সগুলোর টিকিট সংকট দীর্ঘস্থায়ী রুপ নিতে পারে। আটাব-এর যুগ্ম মহাসচিব ও আল-গাজী ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী সায়েম মো. হাসান এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানের ওমরাযাত্রীর সংখ্যা পূর্বের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আসন্ন মাহে রজমানে ওমরাযাত্রীর সংখ্যাও বেড়ে যাবে। ঈদ উপলক্ষ্যে মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত কর্মীদের ভ্রমণ বেড়ে যাবে। তিনি উল্লেখিত সংকট নিরসনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ অন্যান্য এয়ারলাইন্সগুলোকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট চালুর জোর দাবী জানান।
এদিকে, কসমিক হজ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও আটাবের উপ-মহাসচিব নরুল আলম শাহীন জানান, এয়ারলাইন্সের টিকিট সংকট চরম আকার ধারণ করায় অভিবাসী কর্মী ও ওমরাযাত্রীদের নাভিশ্বাস উঠছে। তিনি দেশের স্বার্থে অনতিবিলম্বে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট চালুর বাস্তবমুখী উদ্যোগ নেয়ার জোর দাবী জানান।
আটাব সভাপতি এস এন মঞ্জুর মোর্শেদ (মাহবুব) বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের রুটে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সগুলো আসন সংকটের সুযোগ দেখিয়ে ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ আদায় করছে। এতে বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ও সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে সৃষ্ট সংকট দ্রুত নিরসন এবং মধ্যপ্রাচ্যের রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার উদ্যোগ নেয়ার জোর দাবী জানানো হয়েছে। বিমান মন্ত্রণালয় সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার নিদের্শ দেয়া হলেও সিভিল এভিয়েশন নীরব ভূমিকা পালন করছে। তিনি বিমানের লোকসনা হয় এমন রুটে ফ্লাইট অপারেশন সীমিত করে মধ্যপ্রাচ্যের রুটে ফ্লাইট বৃদ্ধির দাবী জানিয়েছেন। এভিয়েশন সেক্টরে দুর্নীতি বন্ধে বিমানের রিজার্ভেশন ব্যবস্থা অটোমেশন ও নজরদারি বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন আটাব সভাপতি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন