সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল্লাহপাক নিজের জন্য মেহেরবানিকে অপরিহার্য করে নিয়েছেন

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের একটি গুণবাচক নাম হলো ‘রাহিম’, যার অর্থ হলো করুণাময়। কোরআন পাকে ওই করুণাময়তার অনেক ব্যবহার লক্ষ করা যায়। যেমন- কোরআন মাজিদে উল্লেখ আছে, ‘খায়রুর রাহিমীন’। অর্থাৎ সর্বোত্তম করুণানিধান। আরো লক্ষ করা যায় ‘আরহামুর রাহিমীন’। অর্থাৎ সর্বাপেক্ষা বেশি কৃপানিধান। তাই তো দুনিয়ায় পাপী-তাপীগণ যখন তার নাফরমানি করতে থাকে, তারপরও তাদের ওপর তিনি শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেন না। বরং অবকাশ দিয়ে রেখেছেন তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের। পার্থিব জীবন শেষ হওয়ার আগে আগেই যদি তারা তাদের কৃত পাপের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং নিজের আচরণ সংশোধন করে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পারে, তাহলে সে তার আজাব থেকে অব্যাহতি পেয়ে যেতে পারে। সেজন্যই তিনি ধরপাকড় এবং প্রতিদান ও শাস্তির জন্য এ পার্থিব জীবনাবসানের পর একটি সময় নির্ধারিত করে রেখেছেন।
এ বিষয়টিই সূরা আনয়ামে এভাবে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ নিজের জন্য রহমত ও করুণাকে অবধারিত করে রেখেছেন। (সেজন্য তিনি অপরাধীদেরকে এখানে অর্থাৎ, এ পার্থিব জীবনে শাস্তি দান করেন না; বরং তিনি সবাইকে গোটা এ জীবনের অবকাশ দিয়ে রেখেছেন, যাতে যার ইচ্ছা ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং নিজেকে সংশোধন করে আজাব থেকে অব্যাহতি লাভ করতে পারে।) তিনি এ-ও নির্ধারণ করে রেখেছেন, (বিচার ও প্রতিদানের জন্য) তোমাদের সবাইকে কিয়ামতের দিন সমবেত করবেন (এবং সেদিনই প্রত্যেকে প্রত্যেকের কৃতকর্মের বদলা পেয়ে যাবে। এ বিষয়টি অতি নিশ্চিত ও অটল বিষয়)। তাতে কোনো সন্দেহ-সংশয়ের অবকাশ নেই।’ (সূরা আনয়াম : আয়াত ১২)।
সুবহানাল্লাহ। এ আয়াতের প্রথম ‘কাতাবা আলা নাফসিহির রাহমাহ’ (আল্লাহ তায়ালা রহমতকে নিজের ওপর আবশ্যিকভাবে নির্ধারণ করে রেখেছেন) আমাদের বান্দাদের জন্য কতই না আশ্বাস ও আশার বাণী বহন করছে। এমন রহমতের অধিকারী পালনকর্তার প্রতি নিরাশ হওয়া কুফর না হয়ে আর কী হতে পারে?
তারপর এ সূরাতেই চতুর্থ রুকুর পর মহানবী সা.কে লক্ষ্য করে কেমন মমতার সুরে বলা হয়েছে, ‘আর যখন আপনার কাছে আমার সেসব বান্দা আসে, যারা আমার আয়াতসমূহ বিশ্বাস পোষণ করে, তখন হে নবী, আপনি (প্রীতি ও ভালোবাসার সাথে তাদের স্বাগত জানান এবং) বলুন, তোমাদের প্রতি সালাম। (আর তাদেরকে সুসংবাদ দিন যে,) তোমাদের পরওয়ারদেগার নিজের ওপর রহমত ও মেহেরবানিকে অপরিহার্য করে নিয়েছেন। (অতএব, তোমাদের আশ্বস্ত থাকা উচিত যে,) তোমাদের মধ্যে যে লোক অজ্ঞতাবশত কোনো মন্দকাজ করার পর তা থেকে তাওবা করে নেবে এবং নিজেকে সংশোধন করে নেবে, তাহলে নিঃসন্দেহে তোমাদের পালনকর্তা অত্যন্ত ক্ষমাশীল, একান্ত করুণাময়।’ (সূরা আনয়াম : আয়াত ৫৪)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
লাভলু ৩১ মার্চ, ২০১৯, ২:৩৬ এএম says : 0
প্রত্যেক মানুষ আল্লাহ তাআলার নিকট ক্ষমা ও রহমতের প্রত্যাশী। সুখে-দুঃখে, আনন্দ-বেদনায় সর্বাবস্থায় আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভ মানুষের জন্য অনেক বড় নিয়ামাত। আল্লাহ তাআলা নিজেই বান্দাকে শিখিয়েছেন কিভাবে তার কাছে রহমত ও ক্ষমা লাভের আবেদন করতে হবে।
Total Reply(0)
মেহেদী হাসান ৩১ মার্চ, ২০১৯, ২:৩৭ এএম says : 0
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তার রহমত ও ক্ষমা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
Total Reply(0)
সফিক আহমেদ ৩১ মার্চ, ২০১৯, ২:৩৮ এএম says : 0
আল্লাহ তাআলার কাছে বান্দার সেরা চাওয়া-পাওয়া হচ্ছে ক্ষমা। বান্দার ক্ষমা লাভ মহান আল্লাহর একান্ত রহমতও বটে। কোনো মানুষই তার আমল দিয়ে ক্ষমা লাভ করবে, এটা একেবারেই ভুল। বরং আল্লাহ তাআলার ক্ষমা লাভে তার রহমতের বিকল্প নেই।
Total Reply(0)
রবিউল ইসলাম ৩১ মার্চ, ২০১৯, ২:৩৯ এএম says : 0
আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু, তিনি ক্ষমা ও দয়া করতে পছন্দ করেন । তাই আল্লাহ্‌র রহমতের উপর নিরাশ না হয়ে বেশি বেশি আল্লাহ্‌র দয়ার উপর ভরসা করা উচিত এবং জীবনের প্রতিটা মুহূর্তের উপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার উপর কৃতজ্ঞ থাকা উচিত ।
Total Reply(0)
মুহম্মাদ সাহেব আলী ৩১ মার্চ, ২০১৯, ২:৪০ এএম says : 0
গুনাহের কাজে লিপ্ত হওয়া মানুষের স্বভাবের অন্তর্গত। শয়তানের ধোকায় মানুষ ভুল পথে পরিচালিত হয়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আদম সন্তান সবাই অপরাধ করে। অপরাধীদের মধ্যে উত্তম তারাই যারা তওবা করে।’ (তিরমিজি)
Total Reply(0)
বুলবুল আহমেদ ৩১ মার্চ, ২০১৯, ২:৪২ এএম says : 0
আল্লাহতায়ালা অতিশয় ক্ষমাশীল, মহাক্ষমাশীল। বান্দা জেনে অথবা না জেনে যত বড় অপরাধই করুক না কেন আল্লাহ গাফুরুর রাহিমের কাছে ফিরে এলে তিনি ক্ষমা করে দেন। তিনি বান্দাদের ক্ষমাশীল দৃষ্টিতে দেখেন। সুতরাং কোনো অবস্থাতেই হতাশায় নিমজ্জিত নয়, সর্বাবস্থায় ভরসা রাখতে হবে আল্লাহ গাফুরুর রাহিমের ওপর। তিনিই আমাদের শেষ আশ্রয়, তার দরবারই আমাদের চূড়ান্ত ঠিকানা।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন