তাবলীগ জামাতের সা’দ পন্থী গ্রুপ ও বেফাকুল মাদারিসিদ দ্বীনিয়া আল কওমীয়া বাংলাদেশ নাটোর জেলা শাখার উত্তেজনার মধ্যেই নাটোরে ১দিনের আঞ্চলিক ইজতেমা (জেলা ইজতেমা) শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহষ্পতিবার বাদ জোহর থেকে নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে মল্লিকহাটি এলাকায় শুরু হয় একদিনের ইজতেমা আজ বাদ জুমআ আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
এদিকে ইজতেমা বন্ধে বুধবার দুপুরে নাটোর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে জেলা ঈমান আকীদা সংরক্ষণ কমিটি। মানববন্ধন শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপিও দেন কমিটির নেতারা। বেফাকুল মাদারিসিদ দ্বীনিয়া আল কওমীয়া বাংলাদেশ নাটোর জেলা শাখা ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামিআতের সভাপতি মাওলানা মো. শিহাব উদ্দিন বলেন বিশ্বব্যপী তাবলীগ জামাতের অভ্যন্তরীণ সংকট ও বিভাজনের অংশ হিসেবে গত বছরের পয়লা ডিসেম্বরে টঙ্গীর ময়দানে আলেমদের উপর হামলা ও হত্যাকান্ড চালায় সা’দ পন্থীরা। তবুও ধর্মীয় স¤প্রীতির স্বার্থে সরকার দুই পক্ষকে নিয়েই টঙ্গীতে ৬৪ জেলার ইজতেমা করিয়েছেন। ফলে আমরা সিদ্ধান্ত নিই নতুন করে জেলা ইজতেমা না করার। কিন্তু কাকরাইল মার্কাজের অনুমতি ব্যতিত সা’দ পন্থীরা এপ্রিলের ৪-৫ তারিখে নাটোরে স্থানীয়ভাবে ইজতেমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সমস্ত জেলার সংখ্যাগরিষ্ঠ তাবলীগের সাথী ও ওলামায়ে কেরামগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিতর্কিত এ ইজতেমা সফল হলে বাতিল পন্থী তাবলীগ নামধারীদের দৌরাত্ম্য ও অহমিকা বৃদ্ধি পাবে। সাথে হকপন্থী ও শান্তি প্রিয় ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় কার্যক্রমে বাধাপ্রাপ্ত হবে। বিতর্কিত এ ইজতেমা বাতিল করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
অপরদিকে সা’দ পন্থী তাবলীগ সাথীদের দাবী, তারা উভয় পক্ষের সম্মতিতেই ইজতেমা আয়োজন করছেন। গত ৩১শে মার্চ দুপক্ষের ৫ জন করে প্রতিনিধি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয় ১ দিনের ইজতেমা আয়োজনের। ওই সভায় ঈমান আকীদা সংরক্ষণ কমিটির নেতা মাওলানা আবুল কালাম আজাদও উপস্থিত ছিলেন। তবুও বুধবার মানববন্ধন করে তারা সে সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির প্রধান হাজী শরীয়তুল্লাহ জানান, বেফাকুল মাদারিসিদ দ্বীনিয়া আল কওমীয়া বাংলাদেশ ও ঈমান আকীদা সংরক্ষণ কমিটিসহ সমমনা বেশ কয়েকটি সংগঠনের সম্মিলিত সিদ্ধান্তেই এক দিনের ইজতেমা আয়োজন করা হয়েছে যেখানে প্রায় লক্ষাধিক মুসুল্লী অংশগ্রহণ করবেন। তবুও আবার কেন তারা ইজতেমা বন্ধের দাবী জানাচ্ছে তা বোধগাম্য নয়।
জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন বলেন, তাবলীগ জামাতের দুপক্ষের সম্মতিতেই ইজতেমা আয়োজন হচ্ছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুরো ইজতেমা পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন