সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

কেনার ১০ দিনেই ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত ইসির ৪২ হাজার ট্যাব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

নির্বাচনে ভোট দ্রæত গণনার লক্ষ্যে ট্যাব কেনা হয়। কিন্তু দ্রæত গণনার বদলে ভোট গণনায় দীর্ঘ সময় নেয়ায় ট্যাব কেনার ১০ দিনের মাথায় সেগুলো ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ১৮ মার্চ ইসি ৪২ হাজার ২০০টি ট্যাব গ্রহণের জন্য একটি কমিটি গঠন করে। এর ১০ দিন পর ২৮ মার্চ ইসি সিদ্ধান্ত নেয় ৪২ কোটি টাকা মূল্যের ট্যাবগুলো নির্বাচনে আপাতত ব্যবহার করা হচ্ছে না। এমনকি এসব ট্যাব দিয়ে প্রশিক্ষণ ও মক (অনুশীলনমূলক) ভোটিং না করার জন্যও নির্দেশ দেয়া হয়।
নির্বাচন কমিশনকে ওই ৪২ হাজার ট্যাব সরবরাহ করছে কম্পিউটার সার্ভিসেস লিমিটেড। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ফল দ্রæত পাঠানোর জন্য এ ট্যাবগুলো অনেকটা তড়িঘড়ি করে কেনার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। দরপত্র অনুযায়ী, ট্যাবগুলোর গ্যারান্টি তিন বছর। অথচ সরবরাহের ৭দিনের মাথায় ব্যবহার করতে গেলে ট্যাবগুলোয় সমস্যা ধরা পড়ে। ট্যাবের ত্রæটির কারণে ভোটের ফল দ্রæত আসার পরিবর্তে সাধারণ কেন্দ্রের চেয়ে দেরিতে আসে। ফলে ট্যাবগুলোর গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, কোনো কারণে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের ট্যাব সরবরাহ করলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ট্যাব সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার সার্ভিসেস লিমিটেডের কাছ থেকে নিম্নমানের ট্যাব গ্রহণ করার কোনো সুযোগ নেই বলে জানান ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেছুর রহমান। তিনি জানান, খারাপ ট্যাব গ্রহণ করলে ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বিপদে পড়বেন। ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, আর যদি এমনটি ধরা পড়ে, অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে খারাপ জিনিস ধরা পড়েছে কিনা- সেটা আমি জানি না।
ট্যাবের সফটওয়্যারে সমস্যা দেখা দিলে সেটাকে নিম্নমানের বলতে রাজি নন অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেছুর রহমান। তার মতে, সফটওয়্যারে কোনো সমস্যা হতে পারে। নষ্ট বা খারাপ- এটাতো বলা যায় না। সফটওয়্যার কী করছে, না করছে, সেটা সফটওয়্যার প্রকৌশলীরা বলতে পারবেন। আমাদের আইটি বিশেষজ্ঞ যারা আছেন, তারা কী সফটওয়্যার ইনস্টল করছে, সেগুলো তারা বলতে পারবেন। সিস্টেম এনালিস্ট ফারজানা আখতার আছেন, তারা বলতে পারবেন। ট্যাবে ত্রæটি ধরা পড়লেও সিস্টেম এনালিস্ট ফারজানা আখতার বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই ট্যাবগুলো গ্রহণ করা হচ্ছে।
সুত্র জানায়, গত ১৮ মার্চ কম্পিউটার সার্ভিসেস লিমিটেডের কাছ থেকে ৪২ হাজার ২০০টি ট্যাব গ্রহণের জন্য সিস্টেম ম্যানেজার মো. রফিকুল হককে প্রধান করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট ট্যাব রিসিভিং কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশন। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সহকারী পরিচালক (তথ্য অনুসন্ধান) মো. রশিদ মিয়ার সই করা নথি থেকে জানা যায়, পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় পর্যায়ে গত ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত গোপালগঞ্জ সদর ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভোটে এসব ট্যাব ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ট্যাব ব্যবহার করে ঠিক মতো ফলাফল পাঠানো যায়নি।
এরপর ২৮ মার্চ উপজেলার চতুর্থ পর্যায়ের ভোটে ময়মনসিংহ সদর, পটুয়াখালী সদর, বাগেরহাট সদর, কক্সবাজার সদর, ফেনী সদর ও মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় এসব ট্যাব ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। রশিদ মিয়ার সই করা নথিতে বলা হয়, ট্যাব ও সফটওয়্যার ব্যবহার করে ফল পাঠানোয় কারিগরি সমস্যা পরিলক্ষিত হয়েছে।
ট্যাবের সমস্যা ব্যাখ্যা করে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমি যখন আইফোনটা কিনি, কেনার পরই কি ব্যবহার করতে পেরেছি? এখানে তো কিছু সফটওয়্যার ইনস্টল করা লাগে, তাই না? আমরা ট্যাবগুলো কিনেছি। ট্যাব কেনার পরে কিছু সফটওয়্যার ইনস্টল করতে গেলে যদি কোনো কারণে ঝামেলা হয়, তাহলে ট্যাবও ঝামেলা করবে। দুই জায়গায় এ ধরনের ঝামেলা হয়েছে। মানে সফটওয়্যারে কিছুটা জটিলতা ছিল। তিনি বলেন, এটা ট্যাব কিন্তু একটা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারকে ভিত্তি করে তাকে কাজ করতে হবে। ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারকে সিনক্রোনাইজ হতে হবে ট্যাবের সফটওয়্যারের সঙ্গে। ট্যাবের সঙ্গে ম্যানেজমেন্টের সফটওয়্যার সিনক্রোনাইজ না হলে ঝামেলা হবে। ট্যাবে সমস্যা দেখা দিয়েছে, এটা সংশোধন করে দিলেই হবে। আর ট্যাব ব্যবহারের ক্ষেত্রে দুই পক্ষের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। যে ট্যাব পাঠাচ্ছে এবং যারা গ্রহণ করছে- এ দুই পক্ষকেই প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন। তাদের যতক্ষণ পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দেয়া না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ট্যাবগুলো ব্যবহার করব না। প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে আমরা ট্যাবগুলো ব্যবহার করব।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
Ariful Islam Talukdar ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৫৮ এএম says : 0
হাইরে ডিজিটাল চুরি সবাই মিলে খায় এই জাতি কিছু শিখুক বা না শিখুক চুরি কিন্তুুু ঠিকই শিখবে?
Total Reply(0)
Pabel ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৫৯ এএম says : 0
দেশের টাকা লুটেপুটে খাচ্ছে,কোন জবাবদিহীতা নাই,সরকার নিজেই অবৈধ এরা কার বিচার করবে।
Total Reply(0)
Durul Huda ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৩:০০ এএম says : 0
42 hajar kenar koro dorker chilona 42ta kine porikha kore nile hoto...... ata durniti korar akta upoy matro.....amra sob jani.. akon manus r boka nai je nijer iccha moto bujabe
Total Reply(0)
Sadek Ahmed ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৩:০০ এএম says : 0
সরকারী টাকা সরকারী লোক সরকারী ভা‌বে খরচ কর‌ছে তা‌বে বেসরকারী জনগ‌নের কি করার আছে?
Total Reply(0)
Rakibul Islam ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৩:০১ এএম says : 1
এই ৪২ কোটি টাকা নষ্ট না করে বর্ষার মৌসুমে যে এলাকায় বাধ দেওয়া প্রয়োজন সেই বাধ গুলো দিলে সেই এলাকাগুলোর মানুষ দোয়া করত !
Total Reply(0)
Md Iqbal Hossain Odrhi ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:১৬ এএম says : 0
এক মাত্র বাংলাদেশে ই পারে জনগনের টাকা ইচ্ছে করে নদীর পানিতে ভাসিয়ে দিতে।আর জনগন সেটা মুখ বুজে সহ্য করতে।
Total Reply(0)
Kamal Hossain ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:১৮ এএম says : 0
সমস্যা ট্যাবে না, সমস্যা তাদের মধ্যে যারা এগুলো দুর্নীতি করার জন্য কিনে এনেছে।
Total Reply(0)
Murtuza Chowdhury ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:২৮ এএম says : 0
দেশের জনগনের টাকায় কেনা কোটি কোটি টাকার টেব অপচয়ের দায় কে নেবে?
Total Reply(0)
Mirajul Islam ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:৩০ এএম says : 0
কাজের অর্ধেক সফলতা আসে সঠিক Plan এর মাধ্যমে
Total Reply(0)
শুভ্র ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:৩২ এএম says : 0
এই টাকাগুলো সবার বেতনের থেকে কেটে নেয়া হোক
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন