এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন আদেশ বাতিলসহ ৩ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে কলেজ শিক্ষক পরিষদ, সিলেট। এক মাসের মধ্যে দাবি মানা না হলে দুর্বার আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ জানান তারা। বুধবার বেলা ২টায় সিলেট এক সংবাদ সম্মেলনে সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজ শিক্ষক পরিষদ, সিলেটের সভাপতি জ্যোতিষ মজুমদার। লিখিত বক্তব্যে জ্যোতিষ মজুমদার বলেন, ‘কলেজ শিক্ষক পরিষদ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করছি। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। মানসম্মত শিক্ষা ও দক্ষ জনসম্পদ গড়ার প্রধান শক্তি দক্ষ ও নিবেদিত প্রাণ শিক্ষকরা। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন-১৯৯০ এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা আইন-২০০২ দ্বারা গঠিত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড গঠিত হওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে প্রতি মাসে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা থেকে ৬ শতাংশ হারে কর্তন করা হচ্ছে। তবে শিক্ষক কর্মচারীগণ অবসরে যাওয়ার দীর্ঘদিন পরও তাদের এ প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। অনেকের এ সুবিধা পেতে ৭/৮ বছর সময়ও পার হয়ে যায়। এমনকি অনেক শিক্ষক কর্মচারী অবসর সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক পরিপত্র জারির মাধ্যমে বেতন-ভাতা ১০ শতাংশ হারে কর্তন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, যা চলতি এপ্রিল মাস থেকে কার্যকর করা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘‘জাতিগড়ার কারিগর শিক্ষকরা বর্তমান সরকারের ‘ভিশন-২০২১’ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। মাল্টিমিডিয়া ক্লাস বাস্তবায়নেও সরকারি শিক্ষকদের তুলনায় বেসরকারি শিক্ষকদের অংশগ্রহণ অনেকগুণ বেশি। কিন্তু তারা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রায় ৯৫ ভাগ দায়িত্ব পালন করেন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকগণ। শিক্ষার মূল কারিগর হলেন শিক্ষক সমাজ, অথচ তাদের বেতন-ভাতা খুবই নগণ্য। এই নগণ্য বেতন-ভাতা থেকেও প্রতি মাসে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করে ১০ শতাংশ কর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এমন সিদ্ধান্ত শিক্ষক সমাজ মেনে নিতে পারছে না। আমাদের সামান্য বেতন থেকে যদি অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কেটে নেয়া হয়, তাহলে শিক্ষকদের মনে ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম নেবে। ফলে শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ বিঘ্নিত হবে।’’ ‘শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে’ সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে তিনটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো- অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তনের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে, পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া ও উৎসব ভাতা প্রদান করতে হবে এবং কলেজ শিক্ষকদের ৫ঃ২ অনুপাত প্রথা বাতিল করতে হবে। আগামী এক মাসের মধ্যে দাবি মানা না হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অন্যান্য শিক্ষক সংগঠনের সাথে জোটবদ্ধ হয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন কলেজ শিক্ষক পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এসব দাবির সাথে সকল বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকগণ একাত্ম বলে জানিয়েছেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে কলেজ শিক্ষক পরিষদ, সিলেটের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামরুল আনাম চৌধুরী, সহসভাপতি নন্দ কিশোর রায়, মো. আব্দুল আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক শংকর কুমার দাস, প্রচার সম্পাদক সুব্রত রায়, অর্থ সম্পাদক শান্ত ভট্টাচার্য প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন