গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, আমি যতদিন এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি, আমি চাইব মন্ত্রণালয়সহ দপ্তর-সংস্থার সবাইকে সততার সঙ্গে, স্বচ্ছতার সঙ্গে, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের এ মন্ত্রণালয়ে জায়গা হবে না। হয় আমি থাকবো আর না হয় দুর্নীতিবাজরা থাকবে। তিনি বলেন, আমি নিজে ঘুষ খাই না, কমিশন নেই না।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সেবা সহজীকরণ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রী এসব বলেন।
গৃৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, শুনতে চাই কারা দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। জানতে চাই কাদের কারণে মানুষ কাংখিত সেবা পাচ্ছে না। বুঝতে চাই মানুষ কতটা সেবা পাচ্ছে। কারণ, আমাদের দায়িত্ববোধের জায়গা আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না।
তিনি বলেন, আমরা আসবো যাবো, কাঁধে কোনো দায় নেবো না, এটা হতে পারে না। যারা সচ্ছতার সঙ্গে কাজ করবেন, তারা চাকরিতে থাকবেন। যারা অস্বচ্ছ হবেন, দুর্নীতির সঙ্গে থাকবেন, তাদের চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে যেতে হবে অথবা অন্য কোথাও চলে যেতে হবে। দুর্নীতিবাজদের এখানে ঠাঁই হবে না। সেবা সহজীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হলে আমরা মন্ত্রণালয়সহ প্রতিটি দপ্তরে একটা অভিযোগ বাক্স রাখবো।
গৃহায়ন মন্ত্রী বলেন, আবাসন নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার। সকলের জন্য আবাসন, কেউ থাকবে না গৃহহীন। সেই লক্ষ্যে শেখ হাসিনা সরকার কাজ করছে। যখন দেখি নাগরিকরা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় অথবা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাংখিত আচরণ না পেয়ে অসহায় অবস্থায় ঘুরছে, তখন মনে হয় ওই জায়গায় আমি থাকলে একই কষ্ট আমার হতো। সেজন্য দীর্ঘসূত্রিতার অবসান ঘটাতে হবে, মানুষের ভোগান্তির অবসান ঘটাতে হবে, সেবাকে সহজ করতে হবে, স্বচ্ছতা আনতে হবে, সততা আনতে হবে। সুশাসন যদি আমরা নিশ্চিত করতে না পারি, মানুষের কাংখিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না, নাগরিকগণ মৌলিক অধিকার পাবে না। যারা দায়িত্বে আছি সকলকে ভাবতে হবে জনগণ মালিক, তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে অনেক ভোগান্তির অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। দেড় কাঠা বা পৌনে দুই কাঠা জমির মালিকের একটা বিক্রয় অনুমতি বা একটা মিউটেশনের জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়।
তিনি বলেন, নাগরিক সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে আমরা চিন্তা করলাম, গবেষণা করা দরকার মানুষের ভোগান্তি কেনো। নাগরিক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অচলায়তন ভাঙার জন্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ১২টি সংস্থা নিয়ে আমরা কাজ করছি। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের পিয়ন থেকে শুরু করে চেয়ারম্যান প্রত্যেকে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ।
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করার জন্য আগামী ১ মে থেকে রাজউকে এবং ১ জুন থেকে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সব ব্যবস্থাপনাকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এ দুটি প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে তথা অনলাইনের মাধ্যমে হবে। দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থে সেবা সহজীকরণের প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি। বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়েই প্রথম মানুষের সেবা সহজ করার জন্য, ভোগান্তি কমানোর জন্য আমরা নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছি। এটা একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন