পবিত্র রমজান মাসের রোজাকে মহান আল্লাহ তা’য়ালা মুসলমানদের জন্য ফরজ করে দিয়েছেন। তাই রোজা রাখার ব্যাপারে কোন শ্রেণী-পেশা, ধনী-গরীব, কালো-সাদা ও পুরুষ-মহিলা নির্দিষ্ট নেই। মুসলমান! তো সকলকে অবশ্যই রোজা পালন করতে হবে। যেহেতু সবাই রোজাদার। সারাদিন না খাওয়ার কারণে সাধারণত মানব দেহ একটু দূর্বল ভাবতো লাগবেই। অর্থাৎ শরীরে গøুকোজের পরিমান কমে গিয়ে এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তাই ইফতারের সময় খেজুর খেলে কমে যাওয়া গøুকোজের পরিমান দ্রæত পূরণে সাহায্য করে।
ইফতার বললেই খেজুর থাকা চাই এটা যেন নিয়ম। এছাড়া খেজুর দিয়ে ইফতার সুন্নাতে রাসূল (সা.) ও বটে। আমাদের এখানে আবার খেজুর ছাড়া ইফতারের কথা যেন চিন্তাই করা যায়না। ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের এই খেজুর আরব দেশের ফল সে কারণেও রোজাদারদের কাছে তা বেশ প্রিয়।
পুষ্টিগুণের দিক থেকেও সমৃদ্ধ এ খেজুর। খেজুর পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এবং প্রাকৃতিক আঁশে পূর্ণ। তাই পেটের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কওে খেজুর। আর যাঁরা নিয়মিত খেজুর খান তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকিটাও কম থাকে। খালি পেটে খেজুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর হয়। খেজুর মুখের লালাকে ভালোভাবে খাবারের সঙ্গে মিশতে সাহায্য করে। ফলে মানুষের বদহজম দূর হয়। খেজুর উচ্চমাত্রার শর্করা, ক্যালরি ও ফ্যাট সম্পন্ন কণ্ঠনালির ব্যথা বা ঠান্ডাজনিত সমস্যা, শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এছাড়া সারাদিন রোজা রাখার পর ক্লান্ত শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তির যোগান দেয় এ খেজুর।
গবেষনায় পাওয়া যায়, খেজুরের মধ্যে ক্যালসিয়াাম, সালফার, আয়রন, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি-৬, ফলিক অ্যাসিড, অ্যামাইনো এসিড, চিনি, আমিষ, শর্করা জাতীয় দ্রব্যেও গুনাগুন রয়েছে। তাই খেজুর শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিকর ও শক্তি বর্ধকও বটে। তবে যাঁদের রক্তে চিনির পরিমাণ খুব বেশি শুধু তাঁদেও বেলায় খেজুর খাওয়া নিয়ে সামান্য বিধিনিষেধ রয়েছে। এ ছাড়া খেজুর হৃৎপিন্ডের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে, এর ফলে শরীরে রক্ত প্রবাহেও গতির সঞ্চার করে। মুটিয়ে যাওয়া রোধে এই ফল কার্যকরী ভূমিকা রাখে। অল্প কয়েকটা খেজুর খেলে খিদা’র (ভোগ) তীব্রতা কমে যায়। এই ফল পাকস্থলীকে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণে নিরুৎসাহিত করে। অন্যদিকে শরীরের প্রয়োজনীয় র্শকরার ঘাটতি পূরণে যতেষ্ট সহযোগিতা করে।এ ছাড়া খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। যা শরীরের হাঁড়কে মজবুত করে। অন্ত্রের কৃমি প্রতিরোধে খেজুর বড় ভূমিকা রাখে। খেজুরে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে, তার সাথে রাতকানা রোগ প্রতিরোধেও খেজুর অত্যন্ত কার্যকর। এছাড়া বিভিন্ন ধরণের জ্বর, সর্দি এবং ঠান্ডার বিরুদ্ধে লড়াই করার এক অসাধারণ ক্ষমতা আছে খেজুর নামক এ ছোট ফলটির। তাই রমজান শরীফের রোজার ইফতারের সময় তো খাবেনই। অন্য সময়েও নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করা গেলে অনেক রোগ-ব্যাধি থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে। মনে রাখতে হবে এ খেজুর শুধু একটি ফল নয়। এটি একদিকে যেমন ঔষুধি গুনে ভরা, অন্য দিকে এটা রাসূল (সা.) দোয়া ও দয়ার নিদর্শন স্বরুপ। আল্লাহ আমাদের সকলকে সুস্থ রাখুন। দ্বীনের অনুশাসনে জীবন পরিচালনার তৌফিক দান করুণ।
সাংবাদিক ও নিকাহ রেজিস্ট্রার,
বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম।
০১৮১২৮১১১৯৭।
amrankaderi@gmail.com Ramadan
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন