শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

উত্তরাঞ্চলে কেটেছে শংকার মেঘ

বৃষ্টিতে স্বস্তি সিক্ত হয়েছে তপ্তভূমি

রেজাউল করিম রাজু | প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৯, ২:৩১ পিএম | আপডেট : ২:৫০ পিএম, ৪ মে, ২০১৯

উত্তরাঞ্চলে স্বস্তি আর শংকা মধ্যদিয়ে শেষ হলো ঘূর্ণিঝড় ফণীর যাত্রা। ঝড় রাজশাহী ও রংপুরের উপর দিয়ে শেষ হওয়ার বিষয় নিয়ে এ অঞ্চলের মানুষ ছিল উৎকণ্ঠায়। বিশেষ করে মাঠ ভরা ধান আর গাছে গাছে থোকা থোকা আম নিয়ে শংকাটা ছিল বেশী। এ পর্যন্ত এ দুটো ফসলের আবাদ হয়েছে ভাল। ধান গোলায় ওঠার অপেক্ষায়। আর আমও ধীরে ধীরে রসালো শাঁশালো হয়ে উঠছে।

এদিকে বৈশাখের শুরু থেকে হঠাৎ করে এ অঞ্চলের আবহাওয়া তেঁতে ওঠে। তাপমাত্রার পারদ চড়ে যায় চল্লিশ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। গরম বাতাসের ঝাপটায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ঘরে বাইরে সর্বত্র ছিল এক অস্বস্তিকর পরিবেশ। মানুষ বৃষ্টির জন্য আল্লাহর রহমতের জন্য নামাজ আদায় করে। এরমধ্যে খবর আসতে থাকে সাগরে ঘূর্নিঝড় ঘনীভূত হতে যাচ্ছে। এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে প্রত্যাশা ছিল এর প্রভাবে বৃষ্টি হবে। বাঁচবে মানুষ প্রকৃতি আর ফসলের ক্ষেত।

কিন্তু প্রবল ঘূর্নিঝড় ফণীর ফনার ছোবল রাজশাহী ও রংপুরের উপর দিয়ে যাবে। এমন খবরে মানুষ শংকায় পড়ে। সাধারন ঘূর্নিঝড় আর নিন্চামপের ঝড় ঝাপটা উপকুলে আঘাত হানে। এবার এ অঞ্চলে এর প্রভাব পড়বে এমন খবরে সর্বত্র ছিল শংকা। ঝড়ের গতিপথ হিসাবে বলা হচ্ছিল ভারতের কোলকাতা হতে মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশে আসবে। আর মুর্শিদাবাদ মানে রাজশাহী- চাপাইনবাবগঞ্জের পাশ্ববর্তি এলাকা। এখান দিয়ে ঝড় গেলে আমের রাজধানী চাপাইনবাবগঞ্জের আমের সর্বনাশ হয়ে যাবে। রাজশাহী-চাপাইনবাবঞ্জ মিলে বরেন্দ্র অঞ্চলের বির্স্তীন বোরোর পাকা ধানের ক্ষেত ঝড়ের তান্ডবে ধ্বংস হয়ে যাবে। এমন সব শংকার মাঝে গত তিনদিনের বদলে যায় এ অঞ্চলের আবহাওয়া। ঝমঝমিয়ে নামে রহমতের বৃষ্টি। সাথে ছিল হাল্কা ধরনের ঝড়ো হাওয়া। বৃস্টিতে প্রকৃতিতে আসে শীতলতা। গরম আবহাওয়া হয় নরম। তপ্ত আবহাওয়ার জন্য আধা পাকা ধানের ক্ষেতে যে সেচ দেয়া হচ্ছিল তার আর প্রয়োজন হয়নি। এ যেন রহমতের বৃষ্টি।

অন্যাদিকে ঘূর্নিঝড় ফণী গতিপথ বদল করে কোলকাতার পাশদিয়ে মুর্শিদাবাদ না গিয়ে নদীয়া হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলে এ অঞ্চলের মানুষ। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত দু’দিনে রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত হয়ে প্রায় সত্তর মিলিমিটার। তাপমাত্রা চল্লিশ থেকে নেমে এসেছে চব্বিশ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। বৃষ্টিতে তপ্ত মাটি সিক্ত হয়েছে। প্রকৃতিতে এসেছে সজীবতা। আজ শনিবার দুপুর সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত ঝড়ো বাতাস আর বৃষ্টির মধ্যেও উকি দিয়েছে দুদিন মুখ লুকিয়ে থাকা সূর্য। কেটে গেছে শংকার মেঘ। ঘরের মধ্যে আটকে পড়া মানুষ বের হচ্ছে। ফাঁকা রাস্তায় যানবাহনও বাড়ছে।
সাধারন মানুষ শোকরিয়া আদায় করে বলছেন হযরত শাহমখদুম (রূ:) আর শাহনেয়ামতুল্লার পূন্যভূমিকে আল্লাহ রক্ষা করলেন। আসন্ন রমজানের শুরুতেই আবহাওয়া থাকবে সহনীয়। রংপুর থেকে হালিম আনছারি জানান, ঘূর্নিঝড় ফনির রংপুর আগমন নিয়ে মানুষ ছিল শংকিত। বিশেষ করে ধান আর আম নিয়ে। ঝড়ের তান্ডব কেমন হয় এনিয়ে শংকা ছিল মানুষের মধ্যে। এখন ঝড়ো বাতাস কমে গেলে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন