বাগেরহাটের শরণখোলার সাউথখালীতে শনিবার সকাল ১০টার দিকে ঘূর্ণিঝড় ফনির জোয়ারের তোড়ে পাউবো’র ৩৫/১ পোল্ডারের দুটি পয়েন্ট বিধ্বস্ত হয়ে ৬টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্ততঃ পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এছাড়া, ফনি আতংকে শুক্রবার রাতে উপজেলার ৮৫ টি সাইক্লোন শেল্টার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয়া আনুমানিক ২০ হাজার মানুষ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় শনিবার সকাল থেকে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। উপজেলার কোথাও কোন প্রানহানী কিংবা উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে, জেলা প্রশাসন ও এনজিও জেজেএস’র পক্ষ থেকে শুক্রবার রাত এবং শনিবার সকালে ও দুপুরে শেল্টারগুলোতে আশ্রয় নেয়া মানুষদের মাঝে চিড়া, গুড়, মোমবাতি ও দিয়াশলাই বিতরণ করেছেন।
শনিবার সকাল ১০টায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সাউথ-খালী ইউনিয়নের বগী ও দক্ষিণ সাউথিখালী এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর ওই বেড়িবাঁধের দুটি স্থান জোয়ারের পানির তোড়ে বিধ্বস্ত হয়ে আলাদা হয়ে গেছে। প্রবল চাপে ওই স্থান দুটি থেকে ফসলের মাঠে পানি ঢুকে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে বগী, দশ ঘর, সাত ঘর, দক্ষিণ সাউথ-খালী, গাবতলা ও চালিতাবুনিয়া গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
চালিতাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান, মোশারেফ হোসেন, দক্ষিণ সাউথাখালী গ্রামের নুর মোহাম্মদ খাঁন, নান্না হাওলাদার, জাকির হোসেন, বগী গ্রামের সাইয়েদুর রহমান, সফেজ খাঁন, দেলোয়ার বয়াতী, সফিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান ও রুস্তুম হাওলাদার ছয় গ্রামের মানুষ পানিবদী হয়ে পরায় অনেকে চুলা জ্বলাতে না পারায় তাদের রান্নাবান্না বন্ধ রয়েছে। নদী শাসন ব্যবস্থা না করে সরকার বেরিবাঁধ নির্মান করায় নির্মানাধীন এ বেরিবাঁধের স্থায়ীত্ব নিয়ে তারা শংকা প্রকাশ করেছেন।
দক্ষিন ইউপি সদস্য জাকির হোসেন ও বগী এলাকার ইউপি সদস্য রিয়াদুল পঞ্চায়েত জানান, সাউথখালীতে বেরিবাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে সিডরে প্রায় এক হাজার মানুষের প্রানহানি ঘটেছিল। সে আলোকে সরকার টেকসই ও উঁচু বেরিবাঁধ নির্মান করছে। কিন্তু নদী শাসন ব্যবস্থা না রেখে এ প্রজেক্টের কাজ শুরু হয়েছে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহিন হোসেন দু’দিন শরণখোলায় অবস্থান করে সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেয়া মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরন করেছেন। নির্মানাধীন বেরিবাঁধে নদী শাসন ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি জানান, বিধ্বস্ত হওয়া বেরিবাঁধ এলাকায় যাতে দ্রুত মেরামত করা হয়, তার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নির্মানাধীন বেরিবাঁধ প্রকল্পের দায়ীত্বে থাকা প্রকৌশলী শ্যামল দত্ত জানান, খুব শীঘ্রই ভেঙ্গে যাওয়া বেরিবাঁধ মেরামত করা হবে। আপাততঃ ওই দুটি পয়েন্টের বালু বোঝাই ২০ হাজার সিনথেটিক ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ ও পানি প্রবেশ বন্ধ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন