শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ঘরে ফিরেছে আতংকিত মানুষ

কুয়াকাটায় ফণী প্রভাব কেটে গেলেও রেশ কাটেনি

কলাপাড়া সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৯, ৬:৩২ পিএম

কুয়াকাটার উপকূলীয় অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবমুক্ত হয়েছে সাগরপাড়ের এই জনপদে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া দমকা বাতাস ও থেমে থেমে বৃষ্টি এখন আর নেই। গৃহহীন মানুষেরা নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে ঘরে ফিরে গেছে। টানা দুই দিনের ফণী আতংকে উপকূলের মানুষরা নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। সমুদ্রের বেলাভূমিতে থাকা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অপসারণ করলেও তা এখন পুনরায় গুছিয়ে নিচ্ছেন। এ অঞ্চলের মানুষ ও ব্যবসায়ীদেরও বড় রকমের ক্ষয়-ক্ষতি না হলেও ছোট বড় প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ির টিন আংশিক ক্ষতি হয়েছে। বাতাসের তোড়ে গাছপালা উপড়ে পড়ে গেছে। ব্যাপক মৌসুমি ফল মুল বিনষ্ট হয়েছে। আম বাগানের অধিকাংশ আম ঝরে গেছে। বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা মানুষগুলো এবার আবহাওয়ার আগাম বার্তা পেয়ে তাদের জান মালের নিরাপত্তায় আঘাত হানার পূর্ব মুহূর্তে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছিল। ঘূর্ণিঝড় ফনির প্রভাব কেটে গেলেও উপকুলের মানুষদের মাঝে এখনও ফনির রেশ রয়ে গেছে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মনসাতলী এলাকায় তীব্র বাতাসে গাছের ডাল ভেঙ্গে মোটরসাইকেল চালক হাবিবুর রহমান মুসুল্লি (২৫) আহত হয়। বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাবিব শুক্রবার রাতে মারা গেছেন। কুয়াকাটা পৌর সভার ১নং ওয়ার্ডের ওরকা পল্লীর বাসিন্দা হারুন মুসুল্লীর পুত্র হাবিব। এ ঘটনায় আরও দুই জন আহত হয়েছেন। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান।

দুর্যোগ প্রমোশন ও দূর্যোগকালীন ক্ষয়-ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে এবারের প্রস্তুতি ছিল প্রশংসনীয়।কুয়াকাটা জেলেদের সংগঠন আশা আলো জেলে সমবায় সমিতির সভাপতি নিজাম শেখ সিপিপি’র স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে গত তিনদিন ধরে বেড়িবাধেঁর বাইরে থাকা মানুষগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসাসহ প্রচার প্রচারণায় সচেতন করতে সক্ষম হয়েছেন। সৈকতে অবস্থানরত পর্যটকদের কাছে গিয়ে আবহাওয়ার এমন বার্তা পৌঁছায় তিনি। নিজাম শেখ জানিয়েছেন, স্বেচ্ছাসেবী হয়ে সচেতনতামূলক কাজ করতে গিয়ে তার মালিকাধীন দোকানটি অপসারণ করতে না পাড়ায় বাতাসে দোকান ঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ বিষয় কথা হয় কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হোটেল সৈকতের মালিক জিয়াউর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, এ দুর্যোগকালীন আশ্রয়হীন মানুষদের আশ্রয় দিতে পেওে তিনি খুশি।নারী,শিশুও বৃদ্ধাসহ শতাধিক মানুষদের জন্য হোটেলের রুম খুলে দিয়ে তাদেও মাঝে শুকনা খাবার ও পানি সরবারহ করা হয়েছে। ওই হোটেল মালিক ও সংগঠনের নেতা বলেন, তাদেও সংগঠনের সকল হোটেলের পাশাপাশি সরকারি বে-সরকারি গেষ্ট হাউজ ও বাংলোগুলো উম্মুক্ত ছিল।

কুয়াকাটা পৌর শ্রমিক লীগ সভাপতি মো. আব্বাছ কাজী বলেন, পৌর শহরের পাঞ্জুপাড়া এলাকায় তার আম বাগান থেকে প্রায় ২০ মন আম ঝরে পড়েছে। সেখানকার অধিকাংশ ঘরের টিন বাতাসে উড়ে গেছে। গাছপালা উপড়ে পড়ে রয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা জানান, ফণি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মতে দুর্যোগ ব্যবস্থা কমিটির ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল। প্রতিটি স্কুল, কলেজ ও আবাসিক হোটেলর ভবনগুলো খুলে দেয়া হয়েছিল। আশ্রয় নেয়া মানুষগুলোকে সেবা দিতে পৌর সভার নয়টি ইউনিট একযোগে কাজ করেছেন। দূর্যোগ পরবর্তী ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন