পরকীয়া প্রেমের স‚ত্র ধরে দুই সন্তানের জনকের হাত ধরে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে দুই সন্তানের জননী। গত রবিবার (৬জুলাই) টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার আড়াইপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,বিগত এক যুগ আগে আড়াইপাড়া গ্রামের আ.গনি মিয়ার পুত্র মো. হায়দার আলীর (৩৫) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী কালিয়া গ্রামের নুর মোহাম্মদের মেয়ে শারমিন আক্তারের বিবাহ হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের তাছনিম আক্তার (১১) নামের এক কন্যা সন্তান ও আলভী হোসেন তাওহীদ (৬) নামের এক ছেলে রয়েছে। হায়দার আলী জীবিকার প্রয়োজনে প্রায় ১০ বছর আগে কাতার চলে যায়।
এই সুযোগে পাশের বাড়ির মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে ভ্যান চালক (মুরগীর ব্যাপারী) শাহআলম মিয়ার (৪৫) সাথে শারমিনের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই সর্ম্পকের জের ধরেই গত ৬ই জুলাই বিকালে লম্পট শাহ আলমের হাত ধরে শারমিন পালিয়ে যায়।
শারমিনের প্রবাসী স্বামী হায়দার আলী তাঁর এক বন্ধুর বরাত দিয়ে জানান, সংসারের অভাব দ‚র করতে এবং স্ত্রী-সন্তানের সুখের কথা ভেবে অনেক দিন যাবত বিদেশে পড়ে আছে। সেখানে শ্রমিকের কাজ করে মাসে মাসে ২০ হাজার টাকা করে দেশে পাঠিয়েছে। প্রবাসে থাকাকালে বেশিরভাগ সময়ে স্ত্রীর মোবাইলে ফোন দিয়ে তাকে ব্যস্ত পায়। কার সঙ্গে কথা বলছো জানতে চাইলে সে বলতো তার বাপের বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলেছে। জুন মাসের প্রথম দিকে শুনতে পায় তার স্ত্রী শাহ আলমের সঙ্গে পালিয়ে গেছে। খবর পেয়ে সে দেশে চলে আসে। তাঁরপর দুটি সন্তানের কথা ভেবে সামাজিকভাবে মিমাংসার মাধ্যমে তাঁকে ঘরে তুলে নেয়। প্রবাসী স্বামীর বাড়িতে বৃদ্ধ মা ছাড়া অন্য কেউ না থাকায় পাশ্ববর্তী গ্রাম কচুয়া তার ভায়রার বাড়িতে স্ত্রী সন্তান রেখে যায়, তাতেও প্রবাসী হায়দারের শেষ রক্ষা হয়নি। সেখান থেকে সে আবার পাশ্ববর্তী উপজেলা ভালুকার চানপুর বড় ভায়রার বাড়িতে বেড়ানোর কথা বলে পুরাতন প্রেমিক শাহ আলমের সাথে পালিয়ে যায়।
হায়দার আলী আরো জানান, আমাদের নিষ্পাপ দুটি সন্তান রয়েছে। ৬ বছরের সন্তানকে রেখে সে প্রেমিকের হাত ধরে চলে গেছে। যাওয়ার সময় প্রায় ৫ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারগুলো নিয়ে গেছে। এখন তাকে আমি আর চাইনা, আমার অবুঝ শিশুটিকে ফেরত চাই। এজন্য আমি এলাকাবাসী ও প্রশাসনের সাহায্য চাই।
স্থানীয় সমাজকর্মী আজহারুল ইসলাম জানান, শাহ আলমকে আমরা ভালো হওয়ার জন্য অনেকবার বুঝিয়েছি। কিছুদিন আগেও একবার দুইজনে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিল, দুটি সন্তান ও সংসারটা টিকিয়ে রাখার জন্য সামাজিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয় আবার মিলিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু হায়দার আলী বিদেশ যাওয়ার পর আবার এক মাসের মধ্যেই দু’জনে চলে গেছে। প্রবাসী হায়দারের মা বাবা বৃদ্ধ হওয়ায় তারা কোথাও গিয়ে নালিশও করতে পারছে না।তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
সচেতন নাগরিক ফোরাম বাংলাদেশ সখিপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শরিফুল বাবুল বলেন, ঘটনা শুনেছি, আমাদের সমাজে এমন অনেক অপ্রত্যাশিত ঘটনাই ঘটছে। আসলে একজন প্রবাসী যখন এমন পরিস্থিতির শিকার হয়, তখন তার সবাই থাকলেও অনেকটা অসহায় হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় অভিযোগ করলে সামাজিক ও প্রশাসনিক সহায়তা ছাড়াও সচেতন নাগরিক ফোরাম বাংলাদেশ যে কোনো পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগীর পাশে থাকবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাসেম মিয়া বলেন, এটা দুঃখজনক একটি ঘটনা। কিছুদিন আগে একবার মিমাংসা করে দিয়েছিলাম । তাঁরপর আবার চলে গেছে। এ বিষয়ে তাদের আইনের সহায়তা নিতে পরামর্শ দিয়েছি।
সখিপুর থানা অফিসার-ইনচার্জ (ওসি তদন্ত)এ এইচ এম লুৎফুল কবির বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন