রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মরিয়মনগর চৌমুহুনী কাপ্তাই-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে উত্তরে ইসলামপুর ইউনিয়নের গাবতল রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক পর্যন্ত এই বিশাল সড়কে তীব্র খানাখন্দকে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের অধিকাংশ স্থান ডোবায় পরিণত হয়। সড়কের এই পরিস্থিতি রুখতে গত ১০ বছরে প্রায় ৫ বার বরাদ্দ দেয়ার পরেও নিম্নমানের সংস্কার কাজের কারণে স্বল্পসময়ের মধ্যে পুনরায় খান্দখন্দক পরিণত হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে সড়ক জুড়ে তীব্র খানাখন্দকের ফলে সৃষ্ট জনদুর্ভোগের স্থায়ী সমাধানকল্পে সাধারণ জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রী ও রাঙ্গুনিয়ার এমপি ড. হাছান মাহমুদের হস্তক্ষেপে ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজটি পায় খাগড়াছড়ি এলাকার জনৈক ঠিকাদার। তিনি কাজের ওয়ার্ক অর্ডার প্রাপ্তির প্রায় বছর অতিক্রম হওয়ার পরেও এখনো পর্যন্ত কাজটি শুরুই করতে পারেননি। এই সড়কের বিষয়ে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে প্রয়োজনীয় সামগ্রী অভাবে কাজটি দ্রুত শুরু করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিছুদিনের মধ্যে পুরোদমে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে জনপ্রতিধি ও এলাকাবাসী থেকে জানা যায়, প্রায় ১৫ কিলোমিটার এই সড়কের অধিকাংশ স্থান জুড়ে তীব্র খানাখন্দক। সম্প্রতি সময়ে সড়কটিতে পাথর দিয়েছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিন্তু এই পাথর দেওয়ার পর দুর্ভোগ আরও ব্যাপক আকার ধারণ করে। এতে এই সড়ক পথে চলাচলে গাড়িতে হেলেধুলে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয় অধিবাসীরা।
স্কুল প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বাস, ট্রাক, সিএনজিসহ বিভিন্ন যানবাহনে হাজার হাজার যাত্রী চলাচল করে। এই সড়কে খানান্দকের কারণে দুর্ভোগ দীর্ঘদিনের। বাধ্য হয়ে বছরের পর বছর ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে আমাদের। সিএনজি চালক মো. তাহের বলেন, শুনেছি সড়কের পিচ ঢালাইয়ের জন্য বরাদ্দ এসেছে। কিছুদিন আগে দেখলাম সড়কটি খুঁড়ে পাথর দিলেও এরপর থেকে তাদের আর কোন দেখা নেই। এদিকে বর্ষা চলে আসায় বৃষ্টিতে খানাখন্দকের পাশাপাশি এই পাথরের কারণে দ্বিগুণ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সুত্রে জানা যায়, মরিয়মনগর থেকে ইসলামপুর পর্যন্ত সড়কটি সংস্কারে ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট পসস্ত সড়কে পিচ ঢালাইয় করা হবে। এছাড়াও সড়কের শান্তিনিকেতন এলাকায় ১৫০মিটার, ধামাইরহাট বাজারে ৫০ মিটার আরসিসি ঢালাই দেয়া হবে বলে জানা যায়। এছাড়াও সড়কটির মোগলেরহাট এলাকায় ১২৫ মিটার গাইডওয়ালসহ প্রয়োজনীয় স্থানে পানি নিষ্কাষণে গাইডওয়ালের পাশাপাশি ড্রেনও নির্মাণ করা হবে জানায় সওজ। দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহমদ ছৈয়দ তালুকদার বলেন, মাননীয় এমপি মহোদয় এই সড়কের জন্য বারবার বরাদ্দ প্রদান করেন। কিন্তু মানহীন কাজের জন্য এটি টেকসই হয় না। স্থায়ী দুর্ভোগ লাঘবের জন্য এখন আবারও বরাদ্দ দিয়েছেন তিনি। এবার বরাদ্দ দিয়ে ১ বছর কেটে গেলেও টিকাদারকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি এই ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়ার এমপি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কার্যাদেশ পাওয়ার পরও কাজ শুরু না হওয়ার কারণ জানিয়ে সওজ’র চট্টগ্রাম জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ জানান, এই সড়কের কাজের কিছু সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে হচ্ছে পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত থেকে। সড়কের কাজ শুরু করতে সময় ক্ষেপন হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে। তবে যথা সময়ে কাজের সম্পন্ন হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন