টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দারিদ্র্য বিমোচন ও ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছর (২০১৯-২০) কৃষকদের জন্য ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ রেখেছে ব্যাংকগুলো, যা গত অর্থবছরের (২০১৮-১৯) চেয়ে ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন অর্থবছরের জন্য কৃষি ও পল্লী ঋণ এ নীতিমালা ঘোষণা করা হয়। এ সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নীতিমালায় বলা হয়, টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দারিদ্র্য বিমোচন ও ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে এবারও কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের ব্যাংকগুলো ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকার কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ২ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি।
ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো কৃষিঋণ বিতরণ করবে ১০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিতরণ করবে ১৩ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা।
গত অর্থবছর কৃষি ঋণ বিতরণে সার্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হলেও ৮টি ব্যাংক তাদের নিজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এ প্রসঙ্গে ডেপুটি গভর্নর মনিরুজ্জামান বলেন, কিছু দুর্বল ব্যাংক ছাড়া সবাই কৃষি ঋণে অংশগ্রহণ করছে। মধুমতি ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। তাদের বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিবেচনা করছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো মোট ২৩ হাজার ৬১৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করেছে। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১০৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গত অর্থবছরে মোট ৩৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪২৪ জন কৃষক কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন। যার মধ্যে নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশনের (এমএফআই) মাধ্যমে ১৬ লাখ ১ হাজার ৮৫৬ জন নারী প্রায় ৭ হাজার ১৯০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন। ওই অর্থবছরে ২৯ লাখ ৮৯ হাজার ২৩৭ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষী বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১৬ হাজার ৩২২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন। চর ও হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার ৯ হাজার ৯৫০ জন কৃষক প্রায় ৩১ কোটি ৬১ লাখ টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন। কৃষি ও পল্লী ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ অপরিবর্তিত রয়েছে। কৃষক ছাড়াও পোলট্রি শিল্প, দুগ্ধ উৎপাদন, কৃত্রিম প্রজনন ও কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে সহজ শর্তে এ ঋণ পাবেন।
নতুন নীতিমালায় বেশকিছু বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। এ মধ্যে রয়েছে- এমএফআই নির্ভরতা কমিয়ে নিজস্ব শাখা এবং এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কৃষি ঋণ প্রদান। কাজু বাদাম ও রাম্বুটান চাষ, কচুরিপানার ডাবল বেড পদ্ধতিতে আলু চাষ, ছাগল, ভেড়া, গাভী পালন, গরু মোটাতাজাকরণ, বাণিজ্যিকভাবে রেশম উৎপাদনে ঋণ প্রদান করা যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন