শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

ব্যাংক ঋণ বিতরণ কমেছে

৩ মাসে কমেছে ৬২ হাজার কোটি টাকা, অর্থনীতির জন্য অশনিসঙ্কেত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় কমেছে ব্যাংকিং খাতের ঋণ বিতরণ (ঋণ প্রবৃদ্ধি)। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৯ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৭ কোটি কোটি টাকা। গত জুন মাসে ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ বিতরণের পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৮ লাখ ৭১ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। এতে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংকখাতে ঋণ বিতরণের পরিমাণ কমেছে ৬২ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হাল নাগাদ তথ্যে এসব জানা গেছে।

ব্যাংকিং খাতে ঋণ বিতরণ কমে যাওয়া অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা। তাদের মতে, ব্যাংকের ঋণ বিতরণ কমে যাওয়ার অর্থ হলো বিনিয়োগ কমে যাওয়া। আর বিনিয়োগ কমে গেলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিও কমে যাবে। প্রবৃদ্ধি কমে গেলে কর্মসংস্থান বাড়বে না।

অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, অনেকটা ধারাবাহিকভাবে ঋণ বিতরণ কমে যাচ্ছে। আর ঋণ বিতরণ কম হওয়ার মানেই হলো দেশে বিনিয়োগ কম হচ্ছে। কেননা আমাদের দেশে বিনিয়োগ হয় মূলত ব্যাংকিং খাতের অর্থায়নের মাধ্যমে। তিনি বলেন, বিনিয়োগ না হওয়া মানে হলো দেশের প্রবৃদ্ধি হবে না, প্রবৃদ্ধি না হওয়া মানে কর্মসংস্থান বাড়বে না। কর্মসংস্থান না বাড়লে দেশ পিছিয়ে পড়বে।

বেশ কিছুদিন ধরে সরকার প্রবৃদ্ধির যে পরিসংখ্যান দিচ্ছে তা অন্য সূচকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলো কড়াকড়ি আরোপ করছে এটা সত্য, তবে দেশে ঋণের চাহিদাও খুব একটা নেই তা বলা চলে— বলেন মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ব্যাংকের ঋণ বিতরণ কমে যাওয়ার প্রধান কারণ দেশে বিনিয়োগ কম হচ্ছে। ক্রেডিট গ্রোথ ১১ শতাংশে নেমে এসেছে। ফলে ঋণ বিতরণ কমেছে, এটা অর্থনীতির জন্য অবশ্যই খারাপ। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা এখনো খেলাপি ঋণ। খেলাপি ঋণের কারণে ঋণ বিতরণে কড়াকড়ি করা হচ্ছে। তবে চলতি প্রান্তিকে ডিপোজিট গ্রোথ ভালো হয়েছে তা অনেকটা ক্রেডিট গ্রোথের মতোই। তারপরেও কিছুটা সমস্যা রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের ৩০ জুনের পরে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা মোট ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৭১ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। গত মার্চে এর পরিমাণ ছিল ৯ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা। মাত্র তিন মাসে দেশে ব্যাংকিং খাতে ঋণ বিতরণ কমেছে ৬২ হাজার ২২ কোটি টাকা। অন্যদিকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। যা বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এর আগে গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। বর্তমানে দেশে ৬২টি ব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি ব্যাংক ৪৪টি, রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক ৯টি এবং অবশিষ্ট বাকি ৯টি হলো বিদেশি ব্যাংক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন