ময়মনসিংহে ছেলে ধরা গুজব ঠেকাতে তৎপর রয়েছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। গুজব আতংকের এমন চারটি ঘটনা প্রতিহত করে পুলিশ ৩টি মামলা দায়ের করেছে। এসব ঘটনায় আটক হয়েছেন ৪ জন।
বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার হুমায়ন কবির পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ সময় হুমায়ন কবির বলেন, ছেলেধরা গুজবকে ঘিরে ময়মনসিংহ জেলার সদর এবং ভালুকা উপজেলায় পৃথক ৪টি অনভিপ্রেত ঘটনাকে ছেলেধরা বলে চালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে। এবং প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে সংশ্লিষ্ট থানায় পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করেছে। তিনি জানান, ময়মনসিংহে গুজব ষড়যন্ত্রে একটি চক্র কাজ করছে। জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এদের প্রতিহত করা সম্ভব।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, সম্প্রতি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার উজান ঘাগড়া এলাকায় জৈনক জসিমের ঘরে রাকিব নামের এক সিধকাটা চোর ছুরি নিয়ে প্রবেশ করে। এ সময় ঘরের লোকজনের চিৎকারে এলাকাবাসী ওই চোরকে ছেলেধরা বলে গণপিটুনি দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে চোরকে আটক করে চোরের নামে থানায় মামলা দায়ের করে। একই ভাবে ভালুকা উপজেলার আমতলী গ্রামে বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসে মঞ্জুরুল ও শেখ ফরিদ। পরে মঞ্জুরুল তার বোনের সাথে বাড়ির পাশে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় দুই যুবক তাদের পরিচয় জানতে চায়। কিন্তু পরিচয় দেয়ার পরেও সুজন ও হৃদয় নামের ওই দুই যুবক বিষয়টিকে গুজব আতংকের রূপ দিয়ে মারপিট করে তাদের কাছে চাঁদা দাবি করে। পরে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করে মামলা দায়ের করে। একই উপজেলার ধামশুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি কোম্পানির চাকরিজীবী মহিলা মালেকা খাতুন(৩৫) শরীরে জ্বর অনুভব হওয়ার অফিস থেকে বাসার উদ্দেশ্য রওনা দেয়। পথে শরীর বেশি ক্লান্ত লাগায় স্কুলের সামনে বসে পড়লে উপস্থিত লোকজন তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করলে সে নিজ জন্মস্থান ভোলার ভাষায় কথা বলে। এতে সন্দেহ করে স্থানীয় ঈদগাহের মিম্বারের সাথে বেধে মারধর করলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরন করে। পরে পুলিশ জানতে পারে মহিলার আচরনে পাগলামি ভাব আছে। চতুর্থ ঘটনাটিও ভালুকা উপজেলায়। স্থানীয় জীবনতলা গ্রামে সাবিনা নামের এক মহিলা তার ছেলেকে নিয়ে বাড়ির পাশে দাড়িয়ে হঠাৎ গলাকাটা বলে চিৎকার দেয়। পরে জানা যায় ওই মহিলার হৃদরোগ মানসিক সমস্যাও রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস.এ নেওয়াজী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়িতা শিল্পী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুর্শেদা বেগম, এএসপি দীপক, ডিবি ওসি শাহ কামাল আকন্দ, ডিআইও ওয়ান মোখলেছুর রহমান প্রমূখ। এ সময় ময়মনসিংহে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন