সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

বনী আদমের পৃথিবীতে অবস্থানের মেয়াদকাল নিয়ে কিছু কথা

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০১৯, ১২:০১ এএম

পরম কৌশলী ও মহাবিজ্ঞানী আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত হযরত আদম আ.-কে স্বীয় কুদরতি কামেলার দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। হযরত আদম আ.-এর বেহেশতে অবস্থান এবং তারপর তার ও বনী আদমের দুনিয়াতে অবস্থানের সময়সীমা নির্ধারিত যা কোরআনুল কারিমে ‘আয়াত সংখ্যার দ্বারা’ নির্ধারিত ও সীমাবদ্ধ। এর নড়চড় হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আসুন, এবার সে দিকে লক্ষ করা যাক।

ক. আমরা জানি, কোরআনুল কারিমের মোট আয়াত সংখ্যা ৬২৩৭। খ. হযরত আদম আ. ও তার সঙ্গিনী বিবি হাওয়ার বেহেশতে অবস্থানের মেয়াদকাল ছিল ৮১ বছর। গ. বনী আদমের দুনিয়ায় অবস্থানের মেয়াদকাল : ৬২৩৭-৮১=৬১৫৬ বছর। ‘ক’-এর প্রমাণ হিসেবে বলা যায়, গোটা পৃথিবীতে প্রকাশিত কোরআনুল কারিমের আয়াত সংখ্যাকে পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তার আয়াত সংখ্যা ৬২৩৭ই সঠিক এবং নির্ধারিত। ‘খ’-এর সমর্থক ও কোরআন ভিত্তিক প্রমাণ হলো এই যে, আল্লাহপাক বলেন, ‘এবং আমি বলিলাম, হে আদম, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করো এবং যথা ও যেথা ইচ্ছা আহার করো, কিন্তু এই বৃক্ষটির নিকটবর্তী হয়ো না, হলে তোমরা সীমা লঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সূরা বাকারাহ : আয়াত ৩৫)।

‘গ’-এর প্রমাণ অর্থাৎ আদম আ. ও তার বংশধরদের দুনিয়াতে অবস্থানের মেয়াদ : ৬২৩৭-৮১=৬১৫৬ বছর। মহান আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত বহু সাধ করে, মনের মতো করে হযরত আদম আ.-কে সৃষ্টি করেছেন কেবল একটি বার্তা বহন ও প্রচারের জন্য, সে বার্তাটি হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’।

গভীর মনোযোগের সাথে কোরআনুল কারিম তেলাওয়াত করলে দেখা যায়, এই বার্তা অর্থাৎ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর উল্লেখ আল কোরআনের দু’টি সূরায় পাওয়া যায়। এর একটি হলো কোরআনুল কারিমের সূরা মুহাম্মাদের ১৯ নম্বর আয়াতে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর উল্লেখ আছে। আর দ্বিতীয়টি হলো সূরা সাফফাতের ৩৫ নম্বর আয়াতে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর উল্লেখ আছে। এখন এ দু’টি সূরার সংখ্যা তাত্তি¡ক বিশ্লেষণ করলে যা পাওয়া যায় তা হলো- এই : (১) সূরা সাফফাত : ক. যে আয়াতে বার্তাটি আছে তার ক্রমিক নম্বর ৩৫। খ. ওই আয়াতের অক্ষর সংখ্যা ৪০। (২) সূরা মুহাম্মাদ : ক. যে আয়াতে বার্তাটি আছে তার ক্রমিক নম্বর ১৯। খ. উক্ত আয়াতের অক্ষর সংখ্যা ৭৪। এখন ১(ক)+২(ক)= ৩৫+১৯=৫৪। ১(খ)+২ (খ)=৪০+৭৪=১১৪। এই উভয় সংখ্যার গুণফল (৫৪দ্ধ১১৪)=৬১৬৫। সুবহানাল্লাহ।

এই বিশ্লেষণের অর্থ এই যে, দুনিয়াতে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর মেয়াদ এবং তার খাঁটি ধারক ও বাহক বনী আদমের দুনিয়ায় অবস্থানের সময়সীমা ৬১৫৬ বছর। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, আল কোরআনের সূরাসমূহের সমসংখ্যক পর্বে এই অবস্থানকাল বিভক্ত। আমরা বর্তমানে শেষ পর্বে অবস্থান করছি। আলহামদুলিল্লাহ।
বস্তুত সূরা সাফফাত, সূরা মুহাম্মাদ ছাড়াও সূরা আহযাব, যার বিষয়বস্তু মূলত আমাদের প্রিয় নবী সা.-এর সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কিত তা থেকেও উপরোক্ত সময়সীমা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়। আসুন, এবার এ দিকে নজর দেয়া যাক। ক. সূরা আহযাবের অক্ষর সংখ্যা-৬০৫০। খ. সূরা আহযাবের আয়াত সংখ্যা-৭৩। গ. সূরা আহযাবের ক্রমিক সংখ্যা-৩৩। মোট= ৬০৫০+৭৩+৩৩= ৬১৫৬।

এ পর্যায়ে উল্লেখ করা প্রয়োজন, বর্তমান জামানার কাল গণনার শুরু হয়েছে হযরত ঈসা আর এর জন্মসাল থেকে এবং তখন থেকেই খ্রিষ্টাব্দের প্রচলন হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ সময়সীমা (৬১৫৬ বছর) দু’ভাগে বিভক্ত। ১. খ্রিষ্ট-পূর্বকাল (বি.সি.) এবং খ্রিষ্ট-পরবর্তীকাল অর্থাৎ খ্রিষ্টাব্দ (এ.ডি.)। এবার দেখা যাক, কোনভাগে কত বছর।

১. হযরত আদম আ. থেকে হযরত ঈসা আ.-এর জামানা পর্যন্ত ৪১০৪ বছর ‘খ্রিষ্টপূর্ব’। ২. হযরত ঈসা-এর জামানা থেকে শেষ পর্যন্ত ২০৫২ বছর ‘খ্রিষ্টাব্দ’। সুতরাং ৪১০৪+২০৫২=৬১৫৬ বছর। এই নিরিখে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয়, ২০৫২ সালের পর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর খাঁটি ধারক ও বাহক ও প্রচারকদের সংখ্যা এতই কম ও নগণ্য হওয়া যাবে যে, যার সম্পর্কে বর্তমানে কল্পনা করাও দুরূহ ব্যাপার। ‘ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগ’।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Shamol Khan ২৯ জুলাই, ২০১৯, ১:৫০ এএম says : 0
প্রথম পর্যায়ে মাটি থেকে সরাসরি আদমকে অতঃপর আদম থেকে তার স্ত্রী হাওয়াকে সৃষ্টি করার পরবর্তী পর্যায়ে আল্লাহ আদম সন্তানদের মাধ্যমে বনী আদমের বংশ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করেছেন।
Total Reply(0)
মোঃ জামান হোসেন জন ২৯ জুলাই, ২০১৯, ১:৫১ এএম says : 0
স্বামীর শুককীট স্ত্রীর জরায়ুতে রক্ষিত ডিম্বকোষে প্রবেশ করার পর উভয়ের সংমিশ্রিত বীর্যে সন্তান জন্ম গ্রহণ করে (দাহর ৭৬/২)।
Total Reply(0)
মাহিন আদনান ২৯ জুলাই, ২০১৯, ১:৫২ এএম says : 0
হজরত জিব্রাঈল (আ.) একদা ছদ্মবেশে মহানবী (সা.)-এর কাছে হাজির হয়ে আরজ করেন, কিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? মহানবী (সা.) বলেন, জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি থেকে জিজ্ঞাসাকারী অধিক জ্ঞাত নয়। অর্থাৎ কিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে, তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না। আল্লাহ ইরশাদ করেন, কিয়ামতের জ্ঞান কেবল তাঁরই জানা। তাঁর জ্ঞানের বাইরে কোনো ফল আবরণমুক্ত হয় না এবং কোনো নারী সন্তান প্রসব ও গর্ভধারণ করে না। (সুরা : হা-মিম-সাজদা : ৪৭)
Total Reply(0)
হাঃমাওঃ শিব্বির আহমদ হাবিবী ২৯ জুলাই, ২০১৯, ১:৫৩ এএম says : 0
সুন্দর লেখা। শুকরিয়া
Total Reply(0)
Halim ২৯ জুলাই, ২০১৯, ১১:৩৮ এএম says : 0
আল্লাহ আমাদেরকে ইসলাম নিয়ে বেশি বেশি গবেষণা করা তৌফিক দান করুক। আমিন
Total Reply(0)
Jamal Uddin Robel ২৯ জুলাই, ২০১৯, ১১:৩৮ এএম says : 0
Notun akta bisoy janlam.
Total Reply(0)
Firoz Khan ২৯ জুলাই, ২০১৯, ১১:৩৯ এএম says : 0
Thanks to Inqilab and Thanks to the writer
Total Reply(0)
MD Nadim Mahmud ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ১১:৩৪ এএম says : 0
আল্লাহ তায়ালা সর্ব বিষয়ে জ্ঞানী
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন