শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

কোরআন বোঝার জন্য নাজিল হয়েছে

মুফতী ইমাদুদ্দীন | প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০১৯, ১২:০০ এএম

কোরআনুল কারীমকে আল্লাহ তাআলা নাজিল করেছেন অনুধাবন করার জন্য। শুধু তেলাওয়াতের জন্য নয়। কোরআনের তেলাওয়াত যেমন একটি ইবাদত, তেমনি কোরআন অনুধাবন করা, বোঝা এবং কোরআন নিয়ে চিন্তা করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কোরআন নাযিলের উদ্দেশ্যই অনুধাবন করা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, এক বরকতময় কিতাব আমি আপনার ওপর নাজিল করেছি যেন তারা এর আয়াতসমূহ অনুধাবন করে এবং বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিগণ উপদেশ গ্রহণ করে। -সূরা সোয়াদ (৩৮) : ২৯

যারা কোরআন বুঝতে চেষ্টা করে না তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, তারা কি কোরআন অনুধাবন করে না? নাকি তাদের অন্তর তালাবদ্ধ? -সূরা মুহাম্মাদ (৪৭) : ২৪

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোরআন তেলাওয়াতের পাশাপাশি কোরআন বুঝতে নির্দেশ দিয়েছেন। এক হাদীসে আছে, যারা কোরআনের আয়াত তেলাওয়াত করে কিন্তু তার অর্থ নিয়ে চিন্তা করে না, তাদের জন্য শাস্তি রয়েছে। সাহাবায়ে কেরাম দশটি আয়াত শিখে এর অর্থ ও ব্যাখ্যা ভালোভাবে না বোঝা পর্যন্ত অন্য দশটি আয়াত শুরু করতেন না।

সাহাবায়ে কেরাম প্রতিদিন এক খতম কোরআন তেলাওয়াত করতে চাইতেন কিন্তু তাতে কোরআন বুঝতে এবং হৃদয়ঙ্গম করতে অসুবিধা হবে বলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনদিনের কমে কোরআন খতম করতে নিষেধ করে দিতেন।

তারতীল অর্থ কোরআন বুঝে পড়া : আল্লাহ পাক কোরআনকে তারতীলের সাথে তেলাওয়াত করার যে নির্দেশ দিয়েছেন সে তারতীলের অর্থ হলো, কোরআন শুদ্ধ করে বুঝে পড়া। -মাআরেফুল কোরআন, বাংলা ১৪১৪ পৃষ্ঠায় আছে, পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ উচ্চারণসহ শব্দের অন্তর্নিহিত অর্থ চিন্তা করে তা দ্বারা প্রভাবান্বিত হওয়াই আসল তারতীল।

হযরত হাসান বসরী রহ. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে কোরআনের একটি আয়াত তেলাওয়াত করে কাঁদতে দেখে বলেছিলেন, আল্লাহ তাআলা সূরা মুয্যাম্মিলের চার নং আয়াতে যে তারতীলের আদেশ করেছেন এটাই সে তারতীল।
কোরআন তেলাওয়াতের সময় কাঁদা সুন্নত : যা’দুল মাআদ গ্রন্থে আছে, কোরআন তেলাওয়াতের সময় তোমরা কাঁদো, যদি কান্না না আসে তাহলে কান্নার ভান করো।

কোরআনেও কয়েক জায়গায় কোরআনুল কারীমের তেলাওয়াতকারীদের অবস্থা বলা হয়েছে, তারা কোরআন পড়ে আর কাঁদে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও যখন কোরআন পড়তেন বা শুনতেন তখন কাঁদতেন। সাহাবায়ে কেরামের অবস্থাও এমনই ছিল। কোরআন না বুঝে পড়লে চোখে পানি আসবে কীভাবে?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
আসলাম ৩১ জুলাই, ২০১৯, ৩:১২ এএম says : 0
‘এ (কোরআন) সে-ই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, এতে রয়েছে মুত্তাকীদের জন্য পথের দিশা” (সূরা বাকারা ২ আয়াত)।
Total Reply(0)
রিমন ৩১ জুলাই, ২০১৯, ৩:১৩ এএম says : 0
যিনি আমাদের কে দয়া করে কোরআন দিয়েছেন তিনি অবশ্যই তা শিখতে পাঠ করতে, বুঝতে ও অনুসরণ করতে আমাদের মাঝে শক্তি আর যোগ্যতাও দিয়েছেন। আমরা আল্লাহর দয়া ও সাহয্য চেয়ে চেষ্টা করলে আল্লাহ অবশ্যই আমাদের সাহায্য করবেন।
Total Reply(0)
লোকমান ৩১ জুলাই, ২০১৯, ৩:১৪ এএম says : 0
আল্লাহ আমাদের জন্য কোরআন শেখা ও বোঝা সহজ করেছেন। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন “আমি কোরআন কে বুঝার জন্য সহজ করেছি-সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, অতএব কোন উপদেশ গ্রহণকারী আছে কি? (সূরা আল কামার ১৭ আয়াত)।
Total Reply(0)
বাবুল ৩১ জুলাই, ২০১৯, ৩:১৪ এএম says : 0
আমরা সত্যিকারর্থে আল্লাহ বিশ্বাসি হলে কোরআন শেখার ও বোঝার ব্যাপারে আমাদের চেষ্টা, সাধনা, পরিশ্রম, আকাঙক্ষা ও ব্যাকুলতা কোথায়? মনে রাখতে হবে দৃঢ় ইচ্ছা, সংকল্প ও প্রচেষ্টা না চালালে আল্লাহর দরবারে জবাবদিহি করতে হবে। কোরআন তার পাঠকারীর জন্য আল্লাহর নিকট সুপারিশ করবে এবং আল্লাহ তা কবুল করবেন বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এর পরও কি আমরা কোরআন শিখায় মনোযোগি হব না?
Total Reply(0)
আবদুল কাদের ৩১ জুলাই, ২০১৯, ৩:১৫ এএম says : 0
পবিত্র কোরআন হচ্ছে আল্লাহর এক মহা-নেয়ামত, ক্ষণস্থায়ী অস্তিত্বের একমাত্র সহায়ক হাতিয়ার, ভয় ও দুশ্চিন্তা দূর করার মাধ্যম, স্রষ্টার সান্নিধ্য ও নৈকট্য লাভের একমাত্র পথ, মুত্তাকিদের জন্য পথ-প্রদর্শক,পথের দিশা, পুঞ্জিভূত সম্পদের চেয়েও শ্রেষ্ঠ সম্পদ, রোগাক্রান্ত অন্তরের আরোগ্যকারী, শয়তানের বিরুদ্ধে সবচাইতে শক্তিশালী মিত্র, ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্যকারী।
Total Reply(0)
মনিরুল ইসলাম ৩১ জুলাই, ২০১৯, ৩:১৫ এএম says : 0
এই লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
Total Reply(0)
ziaur rahman ৩১ জুলাই, ২০১৯, ৩:৫৬ এএম says : 0
ma sha allah very nice
Total Reply(0)
মিজানুর রহমান ৩১ জুলাই, ২০১৯, ৯:৫৩ এএম says : 0
এক হরফে দশ নেকী পাওয়ার জন্যই কোরআন পড়া নয়। এতে জ্ঞান-বিজ্ঞান, শরিয়ত-মারেফাত, হালাল-হারাম সব কিছু আছে। কুরআন শিখে সেদিকে মনোনিবেশ করাই আমাদের কর্তব্য। এক হরফে দশ নেকীর সওয়াব তো আমার জন্য রিজার্ব আছেই। তাই দশ নেকীর নিয়ত না করে কোরআন শিখব এবং পড়ব শুধুই আমার মহান প্রভুর সন্তুষ্টির জন্য। তাতে আরো বেশি কিছু পাওয়া যাবে। আল্লাহ্ আমাদেরকে কোরআন শিখার, প্রতিদিন তিলাওয়াত করার এবং বুঝার তৌফিক দিন। আমিন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন