শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সাকিব-মুশফিকদের দলবদল অবৈধ! বিপিএল টি-২০

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

বেশ ঘটা করে বিপিএলের দল বদল করেছেন সাকিব আল হাসান। ঢাকা ডায়নামাইটসের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে গিয়েছেন রংপুর রাইডার্সে। তাঁর ফ্র্যাঞ্চাইজি বদলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি বোর্ড সভাপতিসহ কয়েকজন প্রভাবশালী বিসিবি পরিচালকের আশীর্বাদপুষ্ট ঢাকা ডায়নামাইটস। গতকাল বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের মিটিং শেষে বোঝা গেলে এত ঢাক ঢোল পেটানোর পরও এ মৌসুমে সাকিবের রংপুর রাইডার্সে খেলা নিশ্চিত নয়!

না, শুধু সাকিবের দলবদলই অনিশ্চয়তায় নেই। দলবদলের বাজারে জোর গুঞ্জন তামিম ইকবাল যাচ্ছেন খুলনা টাইটান্সে, মুশফিকুর রহিম যাচ্ছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে। এ ছাড়া ঢাকা ডায়নামাইটস দলে টেনেছে এউইন মরগানকে। রাজশাহী কিংস জেপি ডুমিনি, খুলনা টাইটানস এনেছে শেন ওয়াটসনকে। এসব চুক্তিও সব বাতিল বলেই গণ্য করতে হচ্ছে। কারণ, বিপিএল পরিচালনা কমিটি বলেই দিয়েছে, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে চুক্তি ছিল ষষ্ঠ বিপিএল পর্যন্ত। এরপর নতুন চুক্তি করতে হবে সবাকে। আর নতুন চুক্তির আগপর্যন্ত কোনো দলই কোনো খেলোয়াড় টানার অধিকার রাখে না।

গত তিন মৌসুম ঢাকা ডায়নামাইটসের জার্সিতে খেললেও কয়েকদিন আগে সাকিবকে চুক্তিবদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে রংপুর রাইডার্স। তবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের এমন হঠাৎ দলবদল মানতে নারাজ ঢাকা ডায়নামাইটস। দলটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওবায়েদ নিজাম ক্ষোভ প্রকাশ করে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘(সাকিবের বিষয়ে) কী হবে, সেটা বিসিবি বলতে পারবে। তারা তো রিটেইন করার ফর্ম দেয়নি। সেটা দিলে না হয় আমরা তালিকা দিতে পারতাম।’ বিপিএলে এর আগে আইকন খেলোয়াড়েরা নিজেদের ইচ্ছেমতো দল বদল করে নিয়েছেন। টানা তিন বছর ঢাকা ডায়নামাইটসে ছিলেন সাকিব। এবার অন্যদের মতো সাকিবও ফ্র্যাঞ্চাইজি বদলেছেন। সাকিবের দলবদলের পর ঢাকা দাবি করেছিল, তারা তো খেলোয়াড় ধরে রাখার (রিটেইন) সুযোগও নিতে পারতেন। তাদের সে সুযোগ দেওয়া হয়নি। এ যুক্তিতে সাকিবের রংপুরে যাওয়া আটকাতে চেয়েছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। তবে বিপিএল কমিটি আজ যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তাতে সাকিবকে ধরে রাখার সুযোগ নেই ঢাকারও। সমস্যা সমাধানের জন্য জরুরি সভায় বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির অন্যতম পরিচালক মাহবুব আনাম বলেছেন, ‘ছয় মৌসুমের চুক্তি শেষে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে আমাদের নতুন চুক্তি হয়নি। তাহলে কীভাবে দলগুলো খেলোয়াড়দের সঙ্গে চুক্তি করে? কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি কার সঙ্গে চুক্তি করলো সেটা আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না।’

এদিনই পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ছয় বছরের চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় সবাইকে নতুন করতে চুক্তি করতে হবে। আগামী দুইদিনের মধ্যে ছয় ফ্র্যাঞ্চাইজিকে (চিটাগাং ভাইকিংস না খেলার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে) নতুন চুক্তির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। আরও নতুন দুই দল আনা হবে বিপিএলে। সব দলের সঙ্গে চুক্তিপত্র সাক্ষরের পরই খেলোয়াড় কেনাবেচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ডিসেম্বরের এ টুর্নামেন্টের দুই মাস আগেই প্লেয়ার ড্রাফট বা নিলাম ডাকা হবে। তখনই কেবলই দেশি বা বিদেশি খেলোয়াড়দের দলে টানার সুযোগ পাবে দলগুলো। এর আগে কোনো দলের সঙ্গে কোনো খেলোয়াড়ের চুক্তিই আমলে নেবে না বিপিএল। যদি নিলাম বা ড্রাফটে লটারি পদ্ধতি থাকে সে ক্ষেত্রে যেকোনো নির্দিষ্ট খেলোয়াড়কে যেকোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিই টেনে নিতে পারবে। খেলোয়াড় ধরে রাখার নীতি শুধু হবে আগামী (অষ্টম) বিপিএল থেকে। এ সম্পর্কে মাহবুব আনামের বক্তব্য, ‘ছয় বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এবার প্রতিটি দলকে বিসিবির সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করতে হবে। এরপরই দলগুলো খেলোয়াড়দের সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে। কেউ চাইলে দল গুছিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল সেটা কাউন্ট করবে না। দলগুলোর সঙ্গে চুক্তির পরই গভর্নিং কাউন্সিল সব কিছু আমলে নেবে।’

কবে চুক্তি হতে পারে এমন প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘আমরা এরই মধ্যে দলগুলোকে চিঠি দিয়েছি। চট্টগ্রাম তাদের মালিকানা ছেড়ে দিয়েছে। এর বাইরে আরেকটি দল আসতে পারে। সর্বোচ্চ আটটি দলকে নিয়ে চার বছরের চুক্তি হতে পারে এবার। অবশ্য দলের সংখ্যা কমও হতে পারে। আশা করি, এক মাসের মধ্যে সব কিছু চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’

শুধু দলবদলই নয়, মালিকানাশুণ্য হয়ে যাওয়া চিটাগং ভাইকিংস এবং নতুন আরেকটি দলের জন্যও দরপত্র আহŸান করেছে বিসিবি। যদি কোনো পুরনো ফ্রাঞ্চাইজি কিংবা নতুন কেউ নতুন কোনো দল গঠন করতে আগ্রহী তারাও দরপত্র কেনার সুযোগ পাবে বলেও জানানো হয় সভা শেষে। গতকালের আলোচনা থেকে এটা অন্তত পরিষ্কার, এবারের বিপিএলে কে কোন দলে যাচ্ছেন সেটা বলার ঝুঁকি নেওয়াটা ঠিক হবে না!

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন