শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল কোরআনে ইয়াজুজ ও মা’জুজ প্রসঙ্গ-১

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৭ এএম

বর্তমান বিশ্বের শিক্ষিত সমাজের লোকদের মধ্যে এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে যারা ‘ইয়াজুজ’ ‘মা’জুজের’ নাম শোনেনি। আল কোরআনের সূরা কাহাফ এবং সূরা আম্বিয়ায় ইয়াজুজ মা’জুজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আসুন, এবার সেদিকে নজর দেয়া যাক।

ক. ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং সম্ভব নয় আমার ইচ্ছায় বিনাশকৃত পল্লীবাসীরা ফিরে আসবে। যতদিন না ইয়াজুজ মা’জুজ উন্মুক্ত ও প্রত্যেক উচ্চ ভ‚মি হতে বহির্গত হবে। খাঁটি শাস্তির ওয়াদা আসন্ন হলেই কাফেরদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে, বলতে থাকবে- হায় দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা এ হতে গাফিল ছিলাম, বরং আমরা ছিলাম জালেম ও সীমা লংঘনকারী। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত ৯৫-৯৭)।

খ. ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা আপনাকে যুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন, আমি তোমাদের কাছে তাঁর কিছু অবস্থা বর্ণনা করব। আমি তাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম এবং প্রত্যেক বিষয়ের কার্যোপকরণ দান করেছিলাম। অতঃপর তিনি এক কার্যোপকরণ অবলম্বন করলেন। অবশেষে তিনি যখন সূর্যের অস্তাচলে পৌঁছলেন; তখন তিনি সূর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং তিনি সেখানে এক স¤প্রদায়কে দেখতে পেলেন। আমি বললাম, হে যুলকারনাইন! আপনি তাদের শাস্তি দিতে পারেন অথবা তাদের সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারেন।

তিনি বললেন, যে কেউ সীমা লঙ্ঘনকারী হবে আমি তাকে শাস্তি দেবো। অতঃপর তিনি তাঁর পালনকর্তার কাছে ফিরে যাবেন। তিনি তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন। এবং যে বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে তার জন্য প্রতিদান রয়েছে কল্যাণ এবং আমার কাজে তাকে সহজ নির্দেশ দেবো। অতঃপর তিনি এক উপায় অবলম্বন করলেন।

অবশেষে তিনি যখন সূর্যের উদয়াচলে পৌঁছলেন, তখন তিনি তাকে এমন এক স¤প্রদায়ের ওপর উদয় হতে দেখলেন, যাদের জন্য সূর্যতাপ থেকে আত্মরক্ষার কোনো আড়াল আমি সৃষ্টি করিনি। প্রকৃত ঘটনা এমনিই। তার বৃত্তান্ত আমি সম্যক অবগত আছি। আবার তিনি এক পথ ধরলেন। অবশেষে যখন তিনি দুই পর্বত প্রাচীরের মধ্যস্থলে পৌঁছলেন, তখন তিনি সেখানে এক জাতিকে পেলেন, যারা তাঁর কথা একেবারেই বুঝতে পারছিল না।

তারা বলল, হে যুলকারনাইন, ইয়াজুজ ও মা’জুজ দেশে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। আপনি বললে আমরা আপনার জন্য কিছু কর ধার্য করব এই শর্তে যে, আপনি আমাদের ও তাদের মধ্যে একটি প্রাচীর নির্মাণ করে দেবেন। তিনি বললেন, আমার পালনকর্তা আমাকে যে সামর্থ্য দিয়েছেন, তাই যথেষ্ট।

অতএব, তোমরা আমাকে শ্রম দিয়ে সাহায্য করো। আমি তোমাদের ও তাদের মধ্যে একটি সুদৃঢ় প্রাচীর নির্মাণ করে দেবো। তোমরা আমাকে লোহার পাত এনে দাও। অবশেষে যখন পাহাড়ের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান পূর্ণ হয়ে গেল, তখন তিনি বললেন, তোমরা হাঁপরে দম দিতে থাক। অবশেষে যখন তা আগুনে পরিণত হলো, তখন তিনি বললেন, তোমরা গলিত তামা নিয়ে এসো, আমি তা এর ওপর ঢেলে দেই।

অতঃপর ইয়াজুজ ও মা’জুজ তার ওপর আরোহণ করতে পারল না এবং তা ভেদ করতেও সক্ষম হলো না। যুলকারনাইন বললেন, এটা আমার পালনকর্তার অনুগ্রহ। আমার পরওয়ারদিগারের ওয়াদা পূর্ণ হলে তিনি তা চ‚র্ণ-বিচ‚র্ণ করে দেবেন। আমার পরওয়ারদিগারের ওয়াদা সত্য। (সূরা কাহাফ : আয়াত ৮৪-৯৮)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Md Harun Md Harun ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০১ এএম says : 0
তারা বলল, হে জুলকারনাইন! ইয়াজুজ ও মাজুজ তো পৃথিবীতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। আমরা কি আপনাকে খরচ দেব যে আপনি আমাদের ও তাদের মধ্যে এক প্রাচীর গড়ে দেবেন? [সুরা : কাহফ, আয়াত : ৯৪
Total Reply(0)
Mannan Bhuiyan ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০২ এএম says : 0
বাদশাহ জুলকারনাইন তাঁর রাজ্য জয়ের সফরে বের হয়ে এমন এক জাতির মুখোমুখি হয়েছেন, যাদের ভাষা বোঝা দুষ্কর ছিল। আকার-ইঙ্গিতে কিংবা কোনো অনুবাদকের মাধ্যমে তারা ইয়াজুজ-মাজুজের অত্যাচার থেকে মুক্তির দাবি জানায়।
Total Reply(0)
Md Foyej Ullah ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০২ এএম says : 0
ইয়াজুজ-মাজুজ সম্পর্কে সর্বাধিক বিশুদ্ধ হাদিস হচ্ছে নাওয়াস ইবনে সামআন (রা.)-এর হাদিসটি। ওই হাদিসের শুরুর অংশ আগের পর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কিয়ামতের আগে দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। সে চারদিকে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। গোটা পৃথিবী ফিতনায় ভরে যাবে। এ অবস্থায় ঈসা (আ.)-এর আগমন ঘটবে। তিনি দাজ্জালকে হত্যা করবেন। এর মাধ্যমে দাজ্জালের ফিতনা চিরতরে ধ্বংস হবে।
Total Reply(0)
Md Hasan ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০৪ এএম says : 0
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেছেন, কেয়ামত তার নির্ধারিত সময় থেকে এক মুহূর্হ আগেও হবে না,পরেও হবে না। আমাদের গোটা গ্যালাক্সি ইসরাফিল আলাইহিস সালামের সিঙ্গার মধ্যে।আল্লাহ তাকে ফুৎকারের নির্দেশ দিলে তা দীর্ঘায়িত হবে ৪০ দিন।অতি নিচু ভলিউম থেকে ধীরে তা বাড়তে থাকবে।
Total Reply(0)
Kamal Pasha Jafree ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০৫ এএম says : 0
ইয়াজুজ-মাজুজ আছে এবং নির্ধারিত সময়ে সারা পৃথিবী জুড়ে এদের বিস্তার ঘটবে।এ কথা যুক্তি-তর্ক ছাড়াই আমাদের বিশ্বাস করে নিতে হবে।
Total Reply(0)
Md Abu Sayed ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০৫ এএম says : 0
পৃথিবীর আলো-বাতাস পেয়ে ইয়াজুজ-মাজুজ আঞ্চলিক শব্দে যাকে বলে উজাইয়া উঠবে।আবার এই আলো বাতাসের কারণেই খুব অল্প সময়ের মধ্যে মহামড়ক লেগে সব নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।পৃথিবীর রাস্তা,ঘাট,মাঠ সব জায়গায় এদের মৃতদেহ এমনভাবে পড়ে থাকবে যে মানুষের পা ফেলার মতো স্থানও খালি পাওয়া যাবে না।
Total Reply(0)
Rafiq bin Sayeed ১ জুলাই, ২০২১, ৮:২৬ এএম says : 0
ব্যাখ্যা সহ বিস্তারিত বর্ণনা করলে ভালো হতো।
Total Reply(0)
হোতাকো মরিশীমা ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ৪:১৭ পিএম says : 0
এখন ইয়াজুজ-মাজুজ সম্পর্কে বিশুদ্ধ হাদিস সংগ্রহ এক প্রকার দুরূহ হয়ে পড়েছে। এ সম্পর্কে প্রচুর ভুল ধারনা সাধারণ মানুষের মধ্যে পরিলক্ষিত। এর একাংশের জন্য দায়ী নির্ভরযোগ্য হাদিসের অভাব!
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন