শিক্ষাঙ্গনে র্যাগিং ও নিপীড়ন বন্ধ করে গনতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্র মৈত্রী লিফলেট বিতরণ করেছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ি মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে এটি বিতরণ করেন ভর্তি বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি ও র্যাগিং এর নামে নিপীড়ন বন্ধসহ ৮ দফা দাবি জানান তারা।
লিফলেটে সম্বলিত তথ্য সুত্রে, বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনার মধ্য দিয়ে আমাদের দেশের শিক্ষাঙ্গনের উলঙ্গ চেহারা উন্মোচিত হয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস উত্তর কাল থেকে শুরু হলেও ৭৫ পরবর্তী সময়ে সামরিক শাসকেরা হত্যার মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করে রাখে। রাষ্ট্রের অবকাঠামোর সর্বস্থরে দুর্র্নীতি লুটপাট ভোগ লালসা ও উগ্রো ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা দর্শনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের মুল চার নীতির রাষ্ট্রিয় দর্শনকে সরিয়ে দিয়েছিল। এসকল দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে ইবি শাখা বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি আব্দুর রউফ এর নেতৃত্ব লিফলেট বিতরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইবি শাখা সাধারণ সম্পাদক মুতাসিম বিল্লাহ পাপ্পু, সহ-সভাপতি আখতার হোসেন আজাদ ও শামিমুল ইসলাম সুমনসহ অন্যন্য নেতাকর্মীরা।
ইবি শাখা ছাত্র মৈত্রী সভাপতি আব্দুর রউফ বলেন, ‘আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার সুনিশ্চিত করা সহ বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষায় গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে আমরা বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে লিফলেট বিতরণ করছি। ইতোমধ্যে আমরা ইবি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করার দাবিতে মাননীয় ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। বাংলাদেশের ছাত্র মৈত্রী সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে থাকে। তাই এসকল যোক্তিক দাবি আদায়ের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে আমাদের কর্মসূচির সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য আহবান করছি।
উল্লেখ্য, লিফলেটে ৮দফা দাবিসমূহের মধ্যে আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার সুনিশ্চিত করন এবং হত্যাকারী ও সহযোগীদের আজীবনের জন্য ছাত্রত্ব বহিষ্কার। র্যাগিং এর নামে নিপিড়ীন, গেস্টরুম ও গণরুমের শিক্ষার্থীদের উপর অমানবিক আচরণ বন্ধ করা, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসাসহ হল-হোস্টেলগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ভয়ভীতিহীন পরিবেশ সুনিশ্চিত করা, বহিরাগত অছাত্রদের হাত থেকে হল রুম উদ্ধার করে তাদের কে বিতাড়িত করা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যাবস্থা নিশ্চিত ও মেধার ভিত্তিতে সিট বন্টন করা, হাউড টিউটর, প্রভোস্ট, প্রক্টর, হোস্টেল সুপার সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা। শিক্ষাঙ্গনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চির করা, মিছিল-মিটিং রাজনৈতিক কর্মকা-ের উপর কতৃপক্ষের বা সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন দ্বারা কোন প্রকার বিধিনিষেধ ও হুমকি না দেওয়া। শিক্ষাখাতে জাতীয় আয়ের আটভাগ বরাদ্দ ও একমুখি শিক্ষা নিশ্চিত করা। শিক্ষাঙ্গনে দুর্নীতি, ভর্তি বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়া ও জবাবদিহিতা জায়গা প্রতিষ্ঠিত করা ও উন্নয়নে দুর্নীতি ভাগাভাগি প্রতিরোধ করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র কল্যাণ ফান্ড, ম্যাগাজিন ফান্ড, সংবাদ ফান্ড এর বার্ষিক হিসাব ছাত্র সমাজের মাঝে পেশ করতে হবে এবং ভর্তি ফি, পরিক্ষার অতিরিক্ত ফি বন্ধ করতে হবে, ডাইনিং, ক্যাফেটেরিয়া, ক্যান্টিনে খাবারের মান উন্নত করে পরিমান মত মূল্য রাখা। ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা চলবে না, আদর্শভিত্তিক প্রগতিশীল করে ছাত্র গড়ে তুলতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন