শুরুটা করে দিয়ে গিয়েছিলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। আফগান ওপেনারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ব্যাট চালালেন রােইলি রুশোও। তুলে নিলেন নিজের ঝড়ো ফিফটি। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় দাপুটে জয় তুলে নিল খুলনা টাইগার্স।
শুক্রবার দুপুরের মাচে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রংপুর রেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৮ উইকেটের এই জয়ে অপরাজিতের তকমা ধরে রাখল তিন ম্যাচ খেলা মুশফিকের দল। অপরদিকে ৪ ম্যাচ খেলে এখনও জয়ের মুখ দেখেছি তারকা সমৃদ্ধ দল রংপুর।
চার মেরে ফিফটি রুশো অপরাজিত ছিলেন ৬৬ রানে। অধিনায়ক মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ১৭ বলে ১৭ রানে। তবে দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার ঠিকই আদায় করে নিয়েছে শফিউল।
গত বিপিএলের সর্বোচ্চ স্কোরার রুশো এবারও খেলছেন দুর্দান্ত। এই ম্যাচের আগের দুই ম্যাচে করেছেন অপরাজিত ৬৪ ও ৪২।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রংপুর রেঞ্জার্স : ২০ ওভারে ১৩৭/৯ (শাহজাদ ১১, নাঈম ৪৯, দেলপোর্ত ৪, নাদিফ ০, ফজলে মাহমুদ ৪২, নবি ৪, গ্রেগোরি ২২, তাসকিন ২, মুস্তাফিজ ০, সানি ১*; আমির ৪-০-২৪-২, ফ্রাইলিঙ্ক ১-০-৯-০, মিরাজ ৪-০-২৫-০, শফিউল ৪-১-২১-৩, শহিদুল ৩-০-৩২-২, রবিউল ৪-০-২৫-০)।
খুলনা টাইগার্স : ১২.৩ ওভারে ১৩৮/২ (গুরবাজ ৩৭, শান্ত ১, রুশো ৬৬*, মুশফিক ১৭*; মুস্তাফিজ ২-০-১৮-১, মুকিদুল ৩-০-২৮-১, নবি ২-০-২১-০, সানি ২.৩-০-২৮-০, তাসকিন ৩-০-৩৯-০)।
ফল : খুলনা টাইগার্স ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : শফিউল ইসলাম (খুলনা)।
--------------------------------------------
ঝড়ো শুরুর পর ফিরলেন গুরবাজ
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই ঝড় তোলার চেষ্টায় ফিরে গেলেন ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত (১)। তবে খুলনা টাইগার্স সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠেছিল রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও রাইলি রুশোর তাণ্ডবে।
২২ বলে ১টি চার ও ৬ ছক্কায় ৩৭ রানে গুরবাজ ফিরে গেলেও রুশোর ব্যাটে এগিয়ে চলেছে খুলনা।
৯ ওভারেই ২ উইকেট হারানো খুলনার সংগ্রহ পেরিয়ে গেছে একশ’ (১০৭)। ১৮ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪০ রান নিয়ে খেলছেন রুশো। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম (৮ বলে ৮)।
শফিউল তোপে রংপুরকে অল্পে থামাল খুলনা
দুই ওপেনারের ব্যাটে শুরুটা ভালোই হয়েছিল রংপুরের। তবে সময়ের সঙ্গে নিজেদের ফিরে পেতে থাকে খুলনা। তার ফলও পায় হাতে হাতে। টাইগারদের গতির হুঙ্কারে মাত্র ১৩৭ রানেই থামে ৯ উইকেট হারানো রংপুর।
দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেন নাঈম শেখ। ৪২ রান আসে আরেক দেশি তারকা ফজলে মাহমুদের ব্যাট থেকে। এছাড়া ২২ রান করেন লুইস গ্রেগরি।
খুলনার হয়ে বল হাতে দ্যুতি ছড়ান জাতীয় দলের পেসার শফিউল ইসলাম। ৪ ওভারে একটি মেডেনসহ ২১ রান দিয়ে অভিজ্ঞ এ সেনানী তুলে নেন ৩ উইকেট। এছাড়া দুটি করে উইকেট পান মোহাম্মদ আমির ও শহিদুল ইসলাম।
নাঈম-নবির বিদায়ে খাদের কিনারে রংপুর
শেহজাদের বিদায়ের পরও একই ছন্দে খেলছিলেন নাঈম শেখ। তার ব্যাটে তরতরিয়ে বাড়ছিল রংপুরের রানও। এগিয়ে গিয়েছিলেন নিজের ফিফটির খুব কাছে। তবে মাত্র এক রানের আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হয়েছে প্রতিভাবান তরুন এই ওপেনারকে।
দুর্ভাগ্যজনক রানআউটে ফেরার আগে নাঈমের ৩২ বলে ৪৯ রানের ইনিংসটি ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় রাঙানো।
সেই ঘোর কাটতে না কাটতেই রংপুর শিবিরে খুলনার আরেক আঘাত। এবার শিকারির ভুমিকায় সেই আমির। নিজের বলে নিজেই তালুবন্দী করে ফিরিয়েছেন অধিনায়ক মোহাম্মদ নবিকে (৪)।
১৬ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারানো রংপুরের সংগ্রহ ১০৫। এক পাশ আগেলে ফজলে মাহমুদ ব্যাট করছেন ৩০ রানে। তাকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে এসেছেন লুইস গ্রেগরি (৬)।
আমিরের পর শফিউলের জোড়া আঘাত
শুরুটা ভালোই হয়েছিল দুই ওপেনার শেহজাদ ও নাঈম শেখের হাত ধরে। তবে দ্রুত রংপুরের তিন উইকেট তুলে নিয়ে মাচের লাগাম নিজেদের হাতে নিয়ে নিয়েছে খুলনা টাইগার্স।
আফগান মারমুখি ওপেনার শেহজাদকে ফিরিয়ে শুরুটা করেন পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমির। তবে জাতীয় দলের তারকা পেসার শফিউল ইসলামের জোড়া আঘাতে সেই ছন্দ আর ধরে রাখতে পারেনি সাবেক চ্যাম্পিয়নরা।
থিতু হওয়ার আগেই ক্যামেরন ডেলপোর্টকে ফিরিয়ে শুরু, পরে ধুঁকতে থাকা নাদিফ চৌধুরিকেও রানের খাতা খুলতে দেননি অভিজ্ঞ এই পেসার।
৯ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারানো রংপুরের সংগ্রহ ৫১। ২৮ রান নিয়ে এখনো ব্যাট করছেন আরেক ওপেনার নাঈম। তাকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে এসেছেন ফজলে মাহমুদ।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে খুলনা
একদিন বিরতি দিয়ে ফের মাঠে গড়িয়েছে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের চট্টগ্রামের পর্বের খেলা। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুক্রবার দিনের প্রথম ম্যাচে টস জিতে রংপুর রেঞ্জার্সকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে খুলনা টাইগার্স।
দুই ওপেনারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২ ওভার শেষে কোনো উইকেট না হারানো রংপুরের সংগ্রহ ২০। মোহাম্মদ শেহজাদ ব্যাট করছেন ৬ বলে ১১ রান নিয়ে, তাকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া মোহাম্মদ নাঈম শেখের সংগ্রহ ৬ বলে ৯।
একাদশ
রংপুর রেঞ্জার্স : মোহাম্মদ শেহজাদ (উইকেটরক্ষক), নাঈম শেখ, টম অ্যাবল, ক্যামেরন ডেলপোর্ট, নাদিফ চৌধুরী, ফজলে মাহমুদ, লুইস গ্রেগরি, মোহাম্মদ নবি (অধিনায়ক), আরাফাত সানি, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, মুকিদুল ইসলাম।
খুলনা টাইগার্স : নাজমুল হোসেন শান্ত, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, রাইলি রুশো, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক/উইকেটরক্ষক), শামসুর রহমান শুভ, রবি ফ্রাইলিঙ্ক, মেহেদী হাসান, শহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আমির, শফিউল ইসলাম, রবিউল হক।
রংপুরের ভাগ্য ফেরানোর লড়াই
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এবারের আসরে চলছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও খুলনা টাইগার্গের দাপট। এক দিন বিরতির পর আজ ফের মাঠের লড়াইয়ে নামছে এই দুই দল। তবে পৃথক পৃথক ম্যাচে। সাগরিকায় সাপ্তাহিক ছুটির দিনে প্রথম ম্যাচে খুলনা খেলছে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে। যেখানে মুশফিকুর রহিম ব্রিগেডের লক্ষ্য অপরাজিত থাকার তকমা ধরে রাখার। অন্যদিকে এবারের আসরে টানা তিন ম্যাচ হারা মোহাম্মদ নবীর দল খেলবে প্রথম জয়ের স্বাদ পেতে। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা স্বাগতিক চট্টগ্রাম খেলবে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে। তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক হারে ৪ পয়েন্ট পাওয়া দাসুন সানাকার দলের লক্ষ্য থাকবে নিজেদের অবস্থান এগিয়ে নেয়ার। উল্টোদিকে শীর্ষস্থান ধরে রাখতে মাঠে নামবে উড়তে থাকা মাহমুদউল্লাহর দল।
দিনের আরেক ম্যাচে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা চট্টগ্রাম মাঠে নামবে ফেবারিট হয়েই। শেষ ম্যাচে ঢাকাকে রান বন্যায় উড়িয়ে দেয়ার পর মানসিকভাবে আরও চাঙা দলটি। যদিও অধিনায়ক মাহমুদউল্লার চোট ভোগাবে তাদের। গতপরশু ঢাকা প্লাটুনের ম্যাচে আগের হ্যামিস্ট্রিংয়ে ফের চোট পাওয়ায় আজ কুমিল্লার বিপক্ষে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর খেলা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দলটির সহকারী কোচ মঞ্জুরুল ইসলাম। তার বদলে এদিন চট্টগ্রামকে নেতৃত্ব দিবেন ইমরুল কায়েস। অন্যদিকে তাদের প্রতিপক্ষ কুমিল্লা নিজেদের শেষ ম্যাচে রংপুকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলে ভালো অবস্থানেই আছে। মাহমুদউল্লাহর অনুপস্থিতি কাজে লাগানোর জন্য প্রস্তুত সৌম্য-মুজিবরা। দু’দলই জয়ের ধারায় থাকায় ম্যাচটি টানটান উত্তেজনাপূর্ণ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জয়ের লক্ষ্যে অনুশীলনে ঘাম ঝড়াতে দেখা গেছে চারটি দলকেই। খুলনা সকাল এগারোটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেছে। একই মাঠে বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অনুশীলন করেছে চট্টগ্রাম। আরেক মাঠ এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে কুমিল্লা ও রাজশাহী বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অনুশীলনে মত্ত ছিল।
ম্যাচে জয়-পরাজয় ছাপিয়ে দর্শকেরা চান তাদের পয়সা উসুল করতে। যেমনটি বিপিএলে ঢাকা-চট্টগ্রামের খেলায় দেখা গেছে। মারমার-কাটকাট খেলায় শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রামের জয় হলেও প্রকৃত জয়টা স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকেরই। এমন খেলাই প্রত্যাশা করছেন চট্টলার সমর্থকেরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন