দেশের অন্যতম সেরা ময়মনসিংহের বেসরকারি ‘কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ২৫ বছর পূর্তি রজত জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে উপেক্ষিত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এনিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে উপস্থিত অতিথি ও দর্শকদের মাঝে।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশেন (বিএমএ) ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. এইচএ গোলান্দাজ তারা বলেন, বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশাল অবদান থাকলেও সিবিএমসির রজত জয়ন্তী অনুষ্ঠানে গোটা ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি নেই। যা কাম্য নয়।
অভিযোগ উঠেছে, প্রতিষ্ঠানের রজত জয়ন্তী পালনের নামে ব্যাপক চাঁদাবাজি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ১৫০ জন চিকিৎসকের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করেছেন অধ্যক্ষ ডা. মির্জা মানজুরুল হক।
একইভাবে প্রতিষ্ঠানের সাত শত শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পাঁচশত টাকা করে রেজিষ্ট্রেশন ফির নামে টাকা নেয়া হয়েছে। এছাড়াও ১০টি ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে বিজ্ঞাপন ও অনুদান হিসেবে বড় অংকের টাকা আদায় করা হয়েছে।
জানা যায়, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার উইনার পাড়স্থ কলেজ ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ডা. মির্জা মানজুরুল হক। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু, জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান প্রমুখ।
উপস্থিত অতিথিদের অভিযোগ, অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের অনেকেই স্মরনিকা ও খাবার পায়নি। অনেকেই খাবার না পেয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেছেন। প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যার অক্লান্ত পরিশ্রমে মেডিকেল কলেজটি গড়ে উঠেছিল।
রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে সেই ব্যক্তিকে অর্থাৎ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম অধ্যক্ষ ডা. মোফাখারুল ইসলামকে দেয়া হয়নি যথাযথ সম্মান। এছাড়া মঞ্চের আশপাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোন ছবি না রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীদের অনেকেই।
জানা যায়, অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই চরম বিশৃঙ্খল অবস্থার কারণে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে দর্শক সারির অধিকাংশ চেয়ার ছিল ফাঁকা।
এনিয়ে ক্ষুব্ধ অতিথি ও শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, খাবার বাবদ প্রতি প্যাকেটের জন্য পাঁচশ’ টাকা ব্যয়ে ২১’শ প্যাকেটের ব্যবস্থা করা হলেও ওই প্যাকেটে কম মূল্যে খাবার দেয়া হয়েছে নিন্মমানের। তাদের ভাষ্যমতে, অধ্যক্ষের একক আধিপত্য ও কর্তৃত্বের কারণে এ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।
এসব অভিযোগ বিষয়ে সিবিএমসির অধ্যক্ষ ডা. মির্জা মানজুরুল হক মানজু বলেন, দেড় শ’ চিকিৎসকের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা করে এবং সাতশ’ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পাঁচশ’ টাকা করে রেজিষ্ট্রেশন ফি আদায় করা হয়েছে সত্য।
একই সাথে ১০টি ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে বিজ্ঞাপন ও অনুদানও নেয়া হয়। তবে যথেষ্ঠ খাবার থাকা স্বত্বেও অব্যবস্থাপনার কারনে অনেকে খাবার পায়নি বলে তিনি স্বীকার করেন।
অনুষ্ঠানে দর্শনার্থী কম থাকার বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, কেউ না আসলে আমি কী করবো? আমি তাদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসবো?
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন