শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

শাবিতে ছাত্রলীগ কর্মীর ওপর ছাত্রলীগের ‘সন্ত্রাসী হামলা’র অভিযোগ

শাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৮:৪৭ পিএম

 শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে রুমে ঢুকে ফারদিন কবির নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক সজীবুর রহমানের অনুসারীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন রসায়ন বিভাগ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান স্বাধীনের অনুসারীরা। রুমে ঢুকে অতর্কিত এ হামলাকে সন্ত্রাসী হামলা আখ্যা দিয়ে বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন পালন করেছে তারা।

বিক্ষোভকালে তাদেরকে ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও, ফারদিনের রক্ত বৃথা যেতে দিব না, আমার ভাইকে মারলো কেন প্রশাসন জবাব চাই’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। বিক্ষোভ পরবর্তী মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন এবং ‘সন্ত্রাসী হামলা’র বিচার দাবি করেন।

মেহেদী হাসান স্বাধীনের কর্মীরা জানান, গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ফিল্ডে মোহাইমিনুল হেলাল ইফাত ও তার বান্ধবীকে আটকে সজীবুর রহমানের অনুসারীরা তাদেরকে হেনস্তা করে। তখন ইফাতের বান্ধবীকে উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে এবং যৌন হেনস্তা করে। পরবর্তীতে ইফাত মোবাইল ফোনে তার বন্ধু, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী ফারদিন কবিরকে সেখানে ডাকলে সেখানে হাতাহাতি হয়। কিন্তু পরে সমাধান করে দেয়ার কথা বলে শাহপরাণ হলে ডাকার পর রুমে ঢুকে ফারদিনকে মারধর করে বলে জানিয়েছেন তারা।

ফারদিনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সে বিভাগের সাজ্জাদ হোসেন তাকে ফোন দিয়ে শাহপরাণ হলে তার অবস্থান জানতে চান। অবস্থান জানানোর পরেই রুমে ঢুকে তাকে মারধর করা হয়। তিনি বলেন, বিষয়টা সমাধান করে দিবে বলে সাজ্জাদ ভাই আমাকে শাহপরাণ হলে আসতে বলে এবং আমার গায়ে হাত দেয়া হবে না বলে আমাকে আশ্বস্থ করে। ওনি আমাকে ফোন দিয়ে আমি কোথায় আছি জানতে চায়। আমি ওনাকে জানাই আমি ৩১৫ নম্বর রুমে ইফাতের সাথে আছি। এরপর ওনি কল রেখে দেয়ার ২-৩ মিনিট পর রুমে ঢুকে আমাকে জিআই পাইপ দিয়ে মারধর করা হয়। অবস্থান জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হওয়ার পর সাজ্জাদের নেতৃত্বে অতর্কিতভাবে এমন হামলা করা হয়েছে বলে মনে করেন ফারদিন। তিনি বলেন, নাইলে তো আমার অবস্থান জানার কথা না তাদের। কিন্তু এমন অভিযোগ অস্বীকার করে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এই রকম যে কথা বলতেছে এই কথার ভিত্তি নাই।

এদিকে হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রভোস্ট বরাবর আবেদনপত্র জমা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারী ছাত্রলীগ কর্মীরা। আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টায় সজীবুর রহমান ও সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে সৈয়দ মুজতবা আলী হল থেকে শাহপরাণ হলে ডেকে এনে ২১৫ নম্বর রুমে তাদের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা করা হয়। এছাড়া সজীবের অনুসারীদের মধ্যে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান খান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ইলিয়াস সানি ও আরিয়ান, একই বর্ষের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হোসাইন আহমেদ শিমুল ও আয়াজ চৌধুরীসহ অজ্ঞাত অনেকেই এ হামলা চালায় বলে আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়।

মারামারির ঘটনা সম্পর্কে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এসিসট্যান্ট প্রক্টর মিজানুর রহমান বলেন, আমি আসলে বিষয়টা নিয়ে জানি না খুব একটা কিছু। আমি তোমাদের মতো ফেসবুকে দেখেছি। আমাকে কেউ কোনোকিছু আপডেট করে নাই, জানায়ও নাই। কয়েকদিন পরপর মারামারি ও সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্ধের বিষয়ে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহুর্তে আমি এগুলো নিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। আমাদের নতুন প্রক্টর স্যার আসছে। আগে কি হইছে এগুলো নিয়ে বলে তো আর লাভ নেই। যিনি নতুন করে আসছে তিনি হয়তো নতুন করে আবার আমাদেরকে ডাকবে। ডেকে কৌশলগত দিকগুলো আলোচনা করবে। তখন আমরা বলতে পারব। অভিযোগপত্রের বিষয়ে শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান বলেন, এই সংক্রান্ত কোনো অভিযোগপত্র আমার হাতে নাই। হলে মারামারির বিষয়ে আমাদের কমিটি কাজ করছে।


সার্বিক বিষয়ে গ্রুপ লিডার মেহেদী হাসান স্বাধীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটাতো ইভটিজিংয়ের কেইস, আমার ডিপার্টমেন্টের মেয়ে জুনিয়র, তার সাথে আমার গ্রুপের একটা জুনিয়র, তারা একসাথে ছিল। সেখানে তারা মেয়ে জুনিয়রকে টিজ করছে। টিজ করার কারণেই আমার জুনিয়র ফারদিনকে ডাকছে। সেখানে ফারদিন ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় তাদের সাথে হাতাহাতি হইছে। পরে হলে গিয়ে তারা ফারদিনকে মারছে। তাও আমি যখন মিটমাট করার জন্য পাঠাচ্ছিলাম তখন তাকে রুম ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে মাইরা আসছে। সজীবুর রহমান বলেন, প্রথমে এক পক্ষ হাতাহাতি করছে পরে আরেক পক্ষ সামনে পেয়ে আঘাত করছে। পরে আমরা সিনিয়ররা গিয়ে এটা সমাধান করে দিছি। ওই গ্রুপের সিনিয়র ছিলো না, সিনিয়র আসলে বসা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন