শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

উত্তরাঞ্চলে বজ্রবৃষ্টি তীব্র হিমেল হাওয়া

শফিউল আলম : | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

দেশের উত্তরাঞ্চলে কোথাও হালকা কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঘোর শীতের মাঘ মাসে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন অবস্থায় অকাল বর্ষণের সাথে সাথে অনেক জায়গায় মাঝারি ধরনের কুয়াশাও পড়ছে। পঞ্চগড়ে গতকাল (রোববার) বিকেলে হঠাৎ আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায়। এরপরই সন্ধ্যায় বৃষ্টির সাথে অসময়ে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতও হয়েছে। হিমালয় পাদদেশ হয়ে উত্তুরের হিমেল হাড় কনকনে হাওয়ার জোর বাড়ছে। আর কমছে তাপমাত্রা। আজ (সোমবার) ঢাকা বিভাগের দুয়েক জায়গাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত হালকা কিংবা গুঁড়িবৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

গতকাল পর্যন্ত টানা চার-পাঁচ দিনে সারাদেশে তাপমাত্রার পারদ বেশ উঁচুতেই ছিল। ঢাকায় সর্বোচ্চ ২৮ এবং সর্বনিম্ন ১৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, দেশের সর্বনিম্ন শ্রীমঙ্গলে ১২ ডিগ্রি থাকলেও সেখানে দিনের তাপমাত্রা ২৮, আর কক্সবাজারে দেশের সর্বোচ্চ ৩০.২ ডিগ্রির পারদই যেন বলে দিচ্ছিল, মাঘের শীত গেল পৌষের মতো তো তীব্র নয়!
তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বিক্ষিপ্ত হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পর রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে গত কয়েকদিন ধরে চলা সূর্যের তেজ ও উষ্ণতা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। এ সময় রাজশাহীতে ২ মিলিমিটার, বদলগাছীতে ৪ (সর্বোচ্চ), বগুড়ায় এক মি.মি. এবং ঈশ^রদী, রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড় ছাড়াও নেত্রকোণায় অল্পস্বল্প বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে করে উত্তরাঞ্চলে গতকাল দিনের বেলায় পারদ ১৯ ডিগ্রিতে নেমে গেছে।

এদিকে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় বিক্ষিপ্ত হালকা অথবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। রংপুর বিভাগে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সে. হ্রাস পেতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত এবং দিনের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। এর পরবতী ৪৮ ঘণ্টায় দিন ও রাতের রাতের তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে। এরপর শীতের দাপট বেড়ে যেতে পারে।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে শীতের বলয় বাংলাদেশের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলের কাছাকাছি বিরাজ করছে।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, দু’দিন রোদ ঝলমলে আবহাওয়ার পর গতকাল রোববার সকাল থেকেই রাজশাহী ঢেকে ছিল মেঘলা আকাশে। শুরু হয়েছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। বইছে হিমেল হাওয়া। ঘুম থেকে উঠেই মানুষ দেখলো এমন অপ্রত্যাশিত আবহাওয়া। স্কুল, কলেজগামি শিক্ষার্থী ও সাপ্তাহিক ছুটির শেষে অফিসগামিরা বের হলেন ছাতা নিয়ে। বৃষ্টিতে রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে যায়। যানবাহনের সংখ্যাও ছিল তুলনামূলক কম। এমন বিরুপ আবহাওয়ায় নাকাল জনজীবন।

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ফের শুরু হয়েছে মাঝারি শৈত্য প্রবাহ, তীব্র ঠান্ডা এর সাথে যোগ হয়েছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। হিমেল হাওয়া ও কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দিনে ঠান্ডা কম অনুভ‚ত হলেও সন্ধা ঘনিয়ে রাত হলেই বেড়ে যায় শীতের তীব্রতা। সকাল ১০টা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা থাকে। বাড়ি থেকে বাইরে যেতে পারছে না বয়ষ্করা।

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রহিদুল ইসলাম জানান, গত কয়েক দিন ধরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা উঠা-নামা করছে এবং গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। গতকাল রবিবার সকাল ৯ টায় তেঁতুলিয়ায় আবহাওয়া অফিসে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যা সারা দেশের সর্বনিমম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসে
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা জানান, নওগাঁয় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির প্রভাবে জেঁকে বসছে তীব্র শীত। সকাল থেকে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। বৃষ্টির আর উত্তর কোণ থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা বাতাস শীতের মাত্রা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। উত্তরাঞ্চলে চলছে মৃদ্যু শৈত প্রবাহ। যার কারণে কনকনে শীতে কাপছে সমগ্র উত্তরাঞ্চল। তারই ধারাবাহিকতায় নওগাঁ কাপছে শীতে। শীতের কুয়াশা না থাকলেও কনকনে হঠাৎ বৃষ্টির ফলে শীতের তীব্রতায় একেবারেই নাজেহাল অবস্থায় খেটে খাওয়া ও দিনমজুর গোত্রের লোকজন। প্রচন্ড শীত ও হিমেল হাওয়ায় বাহিরে বের হয়ে কোন কাজ করার জো নেই। গরম কাপড়ও তেমন কাজে আসছে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন