সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

অস্ট্রেলিয়ার অসহায়ত্ব

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

উট হত্যার উৎসব করল অস্ট্রেলিয়া। যুক্তি ছিল পানির অভাব। দুনিয়ার অনেকে প্রস্তাব করেছিল যেন প্রাণীগুলোর সদ্ব্যবহার করা হয়। হালাল উপায়ে গোশত সংরক্ষণ করে অভাবী মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। পবিত্র হজের সময় যেমন লাখ লাখ কোরবানি নগদ ফ্রিজিং করে পরে জাহাজে সারা দুনিয়ায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।
অস্ট্রেলিয়ার সে ‘নিজের নাক কেটে অপরের যাত্রা ভঙ্গ’ নীতির ফলে এখনই তারা এমন মানবিক প্রস্তাব মানা কিংবা নিজেরাই মানবিক চিন্তা করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। আমেরিকা ইউরোপেরও একই নীতি। তাদের অনুসারী নামধারী মুসলিম শাসকদের অবস্থাও অনেকটা তাই।

উটগুলো জবাই করা তাদের মাথায় আসেনি। অথচ, পশুদের স্রষ্টা মহান রাব্বুল আলামীন তার রাসূলের মাধ্যমে পশুর জীবন হরণের সবচেয়ে কম কষ্টকর এবং মানুষের জন্য স্বাস্থ্যকর যে উপায়টি নির্দেশ করেছেন, সেটি হচ্ছে জবাই। পশুকে জবাইয়ের উদ্দেশে শোয়ানোর কিংবা তার মূল তিনটি রগ জবাইয়ের মাধ্যমে কেটে দেয়ার সাথে সাথে সে বোধ ও অনুভ‚তিহীন হয়ে যায়। তার মস্তিষ্ক কষ্ট অনুভব করার কমান্ড দেহকে আর দেয় না। এতে ক্ষতিকর রক্ত প্রবাহিত হওয়া পর্যন্ত পশুটি অস্ত্রোপচারের রোগীর মতো ঘোরের মধ্যে থাকে। এর গোশতও জীবাণু ও দূষণমুক্ত হয়ে যায়।

দুনিয়ার সব মানুষ জবাইকে এড়িয়ে চলে। যদিও তারা ইলেক্ট্রিক শক, বন্দুকের গুলি, হান্টারের আঘাতে মাথা চুরমার করে ফেলা, জীবন্ত অবস্থায় প্রসেসিং ইত্যাদি পন্থায় প্রতিদিন লাখ লাখ পশুহত্যা করে। এতে পশুর কষ্ট হয়। খাওয়া হারাম হয়। আল্লাহর বিধান অমান্য করা হয়। ইসলামের জবাই পদ্ধতি তাদের বোঝে আসে না। আল্লাহ বলেন, যারা সৎ পথের সন্ধান করে আমি তাদের বক্ষকে সত্য গ্রহণের জন্য উন্মুক্ত করে দেই। আর যারা বিকৃত চিন্তার ধারক তাদের অন্তর বক্রতায় পূর্ণ থাকে। (আল কোরআনের মর্মার্থ)।

সারা দুনিয়ার যত মানুষ মুসলমানের কোরবানি নিয়ে আকাশ বাতাস মুখরিত করে তোলেন, অস্ট্রেলিয়ার এ পশুহত্যার সময় তারা ভন্ডের মতো আচরণ করেছেন। চোখে ঠুলি ও মুখে কুলুপ এঁটে বসে ছিলেন তারা। ইসলামের আরেকটি অনন্য বিধান লাশ মাটিতে পুতে ফেলা। মৃত পশু তো অবশ্যই পুতে ফেলতে হয়।
হাজার হাজার উট খোলা আকাশের নিচে পচে গলে নিঃশেষ হওয়া পর্যন্ত মানুষের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকেই যায়। যে পানির জন্য উটগুলো মেরে ফেলা হলো, কয়েকদিন পরই সে পানি অস্ট্রেলিয়ার জন্য বিপদ আকারে এসে উপস্থিত। বন্যায় ভেসে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার নানা অঞ্চল।

আল্লাহর দেয়া প্রকৃতি তিনি নিজে কুদরতের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করেন। এর নিয়মের ভেতর মানুষ নিজেদের পরিকল্পনা সাজায়। প্রযুক্তি নিজে থেকে কোনো সমাধান দিতে পারে না। প্রকৃতি যদি মূল সাহায্যটি আল্লাহর হুকুমে বন্ধ করে দেয়, তাহলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহই মানুষ অসহায়। আকাশ, ভূমন্ডল, আগুন, বাতাস, পানিরস্তর, প্রবাহ, সমুদ্রের স্তর, বরফ, সূর্যতাপ ইত্যাদি আল্লাহর হুকুমে সুনিয়ন্ত্রিত না থাকলে মানুষ বড় অসহায়।
এবারকার দাবানলে অন্তত দুনিয়ার মানুষ ভালো করে বুঝতে পারছে যে, তাদের ধারণার উন্নত ও সক্ষম অস্ট্রেলিয়া কত বড় অসহায় ও কতটুকু অক্ষম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
Kamal Pasha Jafree ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 0
আল্লাহর গজব পরবে ইনশা আল্লাহ ।
Total Reply(0)
Mia Muhammad Arju ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
অস্ট্রেলিয়া একটি সভ্য জাতি! তাই জানোয়ারের পিছনে ওরা পড়ে আছে, মহান আল্লাহপাক রিজিকের ব্যবস্থা করেই সকল প্রাণীকে পৃথীবিতে প্রেরন করেছেন তাহলে কেন মানবজাতির আজ এই কলংকৃত ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ, যে কারনে মহান মালিকের নিরীহ প্রাণীদের আজ হত্যা করলি অতি শীগ্রই তার ফলাফল পেয়ে যাবি।
Total Reply(0)
Afroza Akter Toma ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
পৃথিবীতে আমরা কেউ নিরাপদ না আল্লাহ্ পাক আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন
Total Reply(0)
Rk Khan ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
দাবানলের আগুনে ছাড়খার ওরা হবে না তো কারা হবে?
Total Reply(0)
Fardin Hossain ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১:২০ এএম says : 0
ধরে জবাই করে সেগুলো প্রসেস করে তো গরীব আরব দেশগুলোতে সাহায্য হিসেবে পাঠালেই পারত! ইয়েমেন সিরিয়ায় হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে মরতাছে। আফ্রিকান দেশগুলোতে পাঠালেও হত! এমনে বেঘোরে মারার কি দরকার?!
Total Reply(0)
Md. Al Munir ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১:২০ এএম says : 0
আল্লাহর ভয় না থাকলে, সব করা সম্ভব, উদাহরণ নাস্তিক দের উট মারার ঘটনা
Total Reply(0)
Samir Dey ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১:২১ এএম says : 0
সবচেয়ে ভালো হতো এত জীব হত্যা না করে, পৃথিবীর যে দেশ নিতে চায় তাদেরকে দিয়ে দেওয়া।
Total Reply(0)
MD Abu Hanif ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১:২২ এএম says : 0
পানি যদি না খাওয়াতে পারেন আমাদেরকে দিয়া দেন আমরা পানি খাওয়া বড় করব পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টির মালিক একমাত্র আল্লাহ আল্লাহর উপর ভরসা রাখেন সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে ।
Total Reply(0)
parvez ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ৬:৩৮ এএম says : 0
আসল কথা হচ্ছে উট হালাল, কুকুর হারাম। ওদের কুকুরের জন্য মায়া আছে, কিন্তু উট , গরু, ছাগল , ভেড়া ইত্যাদির জন্য নাই। ইসলামের সত্যতার এটাও এক নিদর্শন।
Total Reply(0)
Md Mainuddin ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ৭:৩২ এএম says : 0
I believe, Australia don't have enough people to catch those Camels. Easier to use helicopter and shoot!! They should have asked other countries to catch the camel at their Own cost from the middle of the dessert and take it away!
Total Reply(0)
ওমর ফারুক ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ৭:৫৭ এএম says : 0
আহ্‌! ইসলাসমের সুসমঞ্জস বিধান যদি আমরা সকলে বুঝতাম।
Total Reply(0)
Amir ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১১:৫৪ এএম says : 0
ফিস্তিনে গণতন্ত্রিক নির্বাচিত সরকারকে পশ্চিমারা মেনে নেয়নি অথচ গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে মুখে ফেনা তুলে; এখানে গণতন্ত্র বড় নয় বড় হচ্ছে কোন নিদৃষ্ট রাষ্ট্রকে বাচানো। কোন কোন সময় পশু ক্লেশ নিবারণী সংস্থা পশুর কষ্টে সোচ্চার হয়, অস্ট্রেলিয়ার উটের ব্যাপারে ওই সংস্থা গুলো ঘুমিয়ে ছিল ;আসলে ঘুমিয়েও ছিল না "ঠিক আছে যেতে দাও " অবস্থাটা এরকম আর কি ,কারণ পশ্চিমারা আর অস্ট্রেলিয়ানরা এক জায়গারই লোক !অতএব কারও কারও(অর্থশালী, শক্তিসালী,নীতি পূজারীও) বেলায় নীতি কথা স্বার্থের প্রয়োজনকে অতিক্রম করতে পারেনা।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন