শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

উটের যুগের ইসলাম রকেটের যুগে অচল

মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া আব্দুল্লাহ | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

কারো কারো মুখস্থ বুলি- ‘উটের যুগের ইসলাম রকেটের যুগে অচল’। কথাটিতে কেউ কেউ আমোদও বোধ করেন, কিন্তু বিচার করার প্রয়োজন বোধ করেন না। এ শুধু একটি কুফরী কথাই নয়, নিতান্ত অবাস্তব একটি কথা। একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা হয়ে যাক।

উপরের বাক্যে ‘উট’ ও ‘রকেট’ এ দুটো জিনিসকে আনা হয়েছে দুটি যুগের প্রতিনিধি হিসেবে। আমরাও উল্লেখিত দুই বিষয়ের মাঝেই আমাদের আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখব।
উট একযুগের একটি বাহন, রকেট আরেক যুগের। উট ও রকেটের পার্থক্য দ্বারা দু’টি যুগের জীবন ও যাত্রার উপায়-উপকরণ ও প্রযুক্তিগত ব্যবধান নির্দেশ করাই উদ্দেশ্য। এই পার্থক্য নির্দেশ করে বলা হয়েছে সেই উটের যুগে যে ইসলাম এসেছে তা এই রকেটের যুগে কিভাবে চলতে পারে?

ইসলাম যদি মানব-রচিত কোনো ধর্ম হতো তাহলে এই প্রশ্ন হয়তো শতভাগ বিশুদ্ধ হতো, কিন্তু বোঝার বিষয় এটিই যে, ইসলাম আল্লাহ-প্রদত্ত দ্বীন। এ কারণে উটের যুগে এসেও রকেটের যুগেও তা সমান প্রাসঙ্গিক। কিভাবে? প্রথমেই একটি প্রশ্নের জবাব দিন। ইসলাম উটের যুগে এসেছে, কিন্তু বাহন হিসেবে উটের ব্যবহার কি ইসলামে ফরয ও অপরিহার্য? কোরআনের একটি আয়াত কিংবা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদিসেও কি উটের ব্যবহার ‘ফরয’ করা হয়েছে? কিংবা বলুন রকেটের ব্যবহার কি ইসলামে হারাম? একটি আয়াত বা একটি হাদিসেও কি রকেটে চড়াকে ‘হারাম’ করা হয়েছে? করা হয়নি।

ইসলামে যদি উটে চড়া ফরয হতো আর রকেটে চড়া হারাম হতো তাহলে যথার্থই বলা যেত উটের যুগের ইসলাম রকেটের যুগে অচল। আচ্ছা! উটে চড়া ‘ফরয’ নয়, রকেটে চড়াও ‘হারাম’ নয়; তাহলে ফরয-হারামের বাইরে এদের বিধান কী? এদের বিধান হচ্ছে ‘মোবাহ’। অর্থাৎ বৈধ। ইসলামের বিধান অনুসারে উটে চড়াও ‘মোবাহ’ রকেটে চড়াও ‘মোবাহ’। দুটোই বৈধ, কোনটিই অবৈধ নয়, আবার কোনোটি অপরিহার্যও নয়।

অর্থাৎ উটের যুগের ইসলামী বিধান রকেটের যুগকেও তার বিস্তৃতির মাঝে গ্রহণ করছে। উটের যুগের ইসলাম মান্য করে রকেটে-চড়তেও অসুবিধা হচ্ছে না। কোথাও কোনো সংঘর্ষ বাধছে না। শুধু সংঘর্ষ বাধছে না তাই নয়, অত্যন্ত নিখুঁতভাবে খাপ খেয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন আজকের জন্যই ইসলাম।

দেখুন, কোরআন শুধু উটে চড়া ‘ফরয’ করেনি তা-ই নয় কোরআন বলেছে : তোমাদের আরোহণের জন্য ও শোভার জন্য তিনি সৃষ্টি করেছেন অশ্ব, অশ্বতর ও গর্দভ এবং সৃষ্টি করবেন এমন অনেক কিছু যা তোমরা জান না। (সূরা নাহল : ৮)।

উটের যুগের মানুষ আজকের রকেট সম্পর্কে জানত না, তেমনি আজকের মানুষও ভবিষ্যতের যান সম্পর্কে জানে না।

কিন্তু কোরআন যিনি নাযিল করেছেন তিনি জানতেন এবং জানেন। এবং তিনি পর্যায়ক্রমে সৃষ্টি করতে থাকবেন। আজকের যুগে ‘রকেটে’ চড়া মোবাহ, ভবিষ্যতে... চড়াও ‘মোবাহ’ই থাকবে। মুসলমানদের তাতে চড়তে কোনো বাধা থাকবে না। তাহলে দেখুন, উটের যুগে নাযিল হলেও কোরআনী শরীয়ত এগিয়ে গেছে রকেটের চেয়েও। কাজেই শুধু রকেটের যুগ নয়, ..., ..., ,,,-এর যুগগুলোতেও কোরআন থাকবে সমান সচল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
মেহেদী ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:১৬ এএম says : 1
ইসলাম এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে একটি কথা প্রায়ই বলা হয় যে, ইসলামী আইন কেবল মাত্র ইসলামের প্রাথমিক যুগের জন্যই এসেছিল। আধুনিক বিশ্বে ঐসব আইনের প্রয়োগ ঠিক মানায় না। প্রযুক্তি আর যোগাযোগ ব্যবস্থার উৎকর্ষ, বিজ্ঞানের নিত্য নতুন সব আবিষ্কার সেসব আইনকে এখন অকার্যকর করে দিয়েছে। এসব যুক্তি প্রদর্শনের সময় কেউ দৈববাণীর তাৎপর্য বা একজন মুসলিমের আত্মসমর্পণের অন্তর্নিহিত গুরুত্ব, কোনোটার কথাই মাথায় রাখে না।
Total Reply(0)
হাসান মুনাব্বেহ সাআদ ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:১৭ এএম says : 1
সত্যি বলতে, আপনি যখন আল্লাহর প্রতি একান্ত অনুগত হয়ে আত্মসমর্পণ করবেন তখন আপনার চিন্তাধারাই পাল্টে যাবে। আপনি দেখবেন আপনার বিরুদ্ধে যাওয়া কিছু বিষয়ের ব্যাখ্যা হয়তো আপনি বুঝতে পারছেন না, কোনো কোনো ব্যাপারে হয়তো মন সায় দিতে চাইছে না। কিন্তু যেহেতু আপনি মহান আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছেন, আপনি এখন যে কোনো পরিস্থিতিই গ্রহণ করে নিতে প্রস্তুত। কারণ আপনার বিশ্বাস, মহাজ্ঞানী আল্লাহতা’আলা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা-ই সঠিক। কোনো কিছুই তো তাঁর অজানা নেই।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 1
আমাদের আধুনিক সমাজে কেউ কি পারে এমন উচ্চপদস্থ কারো সাথে চাইলেই দেখা করতে? পারে না। এটাই তাহলে গণতন্ত্র?
Total Reply(0)
জাহিদ খান ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 1
মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে যারাই ইসলামকে আধুনিকায়ন করতে চায় অথবা সামাজিক অবস্থার সাথে মিলিয়ে ইসলামকে বদলে নিতে চায়, তাদের নিজেদেরকেই আগে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে স্রষ্টার নির্ধারিত আইন বলতে তারা কী বোঝে। পাশাপাশি যদি কেউ (শুধু ইতিহাসের ঘটনাগুলো ছাড়া বাস্তব উদাহরণ দিয়ে) ইসলামী শরীয়াহর সুবিধাদি না বুঝতে পারে তবে তার এই ভেবে স্বস্তি পাওয়া উচিৎ যে, মানুষের উপলব্ধি করার ক্ষমতারও একটা নির্দিষ্ট সীমা আছে। ঠিক চোখের দৃষ্টিসীমার মতো, একটা ছোট বলয় পর্যন্ত। সুতরাং যুক্তি দিয়ে আমরা ততটুকুই বিচার করতে পারি যতটুকু আমরা আসলে বুঝতে পারি। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর পরিমাণ খুবই সামান্য।
Total Reply(0)
Mohammed Kowaj Ali khan ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:২৩ এএম says : 1
বরতমান যুগে ইসলাম কয়জনে বুজে? ইসলাম বুজার জ্ঞান সকলের নাই। একমাত্র সত্য এবং যোগ্য নেতৃত্ব হচ্ছেন ইসলাম। ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)
Mohammed Kowaj Ali khan ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:২৫ এএম says : 0
বরতমান যুগে ইসলাম কয়জনে বুজে? ইসলাম বুজার জ্ঞান সকলের নাই। একমাত্র সত্য এবং যোগ্য নেতৃত্ব হচ্ছেন ইসলাম। ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(1)
Rohisul huda ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১১:৪০ এএম says : 4
bhai valo volcen.
Islam ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৭:৩৪ এএম says : 0
বাংলাদেশে বিগত ১০ বসরে, ১০০০+ কোটি টাকার মূর্তি বানানো হয়েছে (হিন্দুদের মূর্তি ছাড়া). সারা বাংলাদেশ মূর্তিতে ভরে গেছে. টাকা পায় কোথায়? বানায় করা?
Total Reply(0)
adv md. zahed hossain miazee ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৯:২৫ এএম says : 0
Islam is modern for all time.
Total Reply(0)
সাইফ ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৯:৪৯ এএম says : 0
এই যে কথাগুলো এশেছে কেউ কেউ বলেনও আমরা কি আসলেই ভাবি এর জন্যে কারা দায়ী ইসলাম কোরআন ও হাদিস নাকি এর অনুশারীরা??? খোলাফায়ে রাশেদীন গনের শেষ সময় থেকে ইসলামের শত্রুরা ততপর ছিল যেমন তেমনি অনুশারিরাও ছিল। কিন্তু আফসোস এক পর্যায়ে এসে আমরা এতই নিকৃষ্ট হয়েছি যে, এক শ্রেনি ক্ষমতার জন্যে আর কেউ ক্ষমতাবান দের ছাটুকারিতায় ব্যস্থ, নামাজ রোজা কেবলই অনেকটা সামাজিকতা, সেই আদিকাল থেকে ক্ষমতালোভিরা আবার এতই নিকৃষ্ট যে, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যে কিংবা ক্ষমতায় অধীন হওয়ার জন্যে কাউকে হত্যাকরা কোন ব্যাপারইনা, নিজেরাতো করবেনই প্রয়োজনে ইসলামের শত্রুদেরও ডেকেনিয়ে মুসলমানদের হত্যা করতে দ্বিধা করেননী, আবার কেউ কেউ ব্যস্ত এই নিয়ে যে কাকে কিভাবে ফতোয়াদিয়ে জোর করে অমুসলিম বানানো জায়!!! এদের কাছে, কুফর শিরক আর বিদাত এর বাইরে ইসলামে কিছু আছে বলে জানে কিনা সেটাও সন্দেহ, এরা ভুলে যায় যে ইসলাম কেবলই ইসলাম নয় এর নাম দ্বীন আল ইসলাম, সম্পূর্ন জীবন ব্যবস্থার নাম। কেবল কুফর-শিরক- আর বিদাতই নয় এর সাথে জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত প্রতিটী কাজই জড়িত। আফসোস আমাদের আলেম সমাজের জন্যে, এরা গত প্রায় ৫০০ বছরের মধ্যে ইসলামকে পরিবর্তিত সময়ের সাথে তুলে ধরতে সম্পূর্ন ব্যর্থ, বিশেষ করে হযরত ইমাম গাজ্জালী (রাঃ) এর পর থেকে আজ পূর্জন্ত। আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে হিদায়েত নসিব করুণ
Total Reply(0)
MD Ismail ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১১:৩৯ এএম says : 0
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন