শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহে গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিয়োগ দিচ্ছে দুদক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

বেনামি দরখাস্তের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবার মাঠপর্যায়ে দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহে গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিয়োগ দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের ২২টি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এ নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। কর্মকর্তারা মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী, খাস জমি দখল, ঘুষ-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য সংগ্রহ করবেন। এ তথ্য জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে ‘ ডে- কেয়ার সেন্টার’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থ পাচার শুধু বাংলাদেশের একক সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সমস্যা। আমাদের আশপাশের দেশগুলোতেও অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ব্যাপক উন্নয়নও হচ্ছে। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে যথাযথভাবে কাজ না করে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। এগুলো নিয়ন্ত্রণে সরকারও কাজ করছে, দুদকও কাজ করছে। কমিশন থেকে বিভিন্ন প্রকল্প মনিটরিং করা হচ্ছে। যারা সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করছেন, তাদের আইনি প্রক্রিয়ায় ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইকবাল মাহমুদ বলেন, যে বা যারা অবৈধভাবে ব্যাংকের বা সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে এবং তা পাচার করে বিদেশে বিলাসবহুল জীবন যাপন করছেন, তাদের প্রত্যেককেই অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। ইন্টারপোলসহ আন্তর্জাতিক সব আইনি টুলস, টেকনিক প্রয়োগ করে অপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। দেশের সম্পদ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে। সিঙ্গাপুরসহ আমাদের আশেপাশের দেশগুলো থেকে আমরা কিছু কিছু তথ্য পাচ্ছি। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ওইসব দেশের আদালতের সহায়তায় অপরাধীদের সম্পদ জব্দ করা এবং তা দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। কমিশনের প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যেই হংকংয়ের আদালতের সহায়তায় কিছু অবৈধ অর্থ জব্দ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে ট্রেড-বেজড মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনআরবি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আমরা নীতিগতভাবে একমত হয়েছি, পদ্ধতিগত প্রক্রিয়ায় এ জাতীয় অপরাধ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, নারীরা এখন আর ঘরে বসে শুধু সন্তান পালনই করছেন না, সরকারি- বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়েও চাকরি করছেন। দুদকেও এখন অনেক নারী কর্মকর্তা রয়েছেন। আবার অনেক পুরুষ কর্মকর্তা রয়েছেন যাদের স্ত্রী চাকরি করেন। তাদের সন্তানদের পরিপালনের বিষয়টি একটি উদ্বেগের কারণ। কমিশন তাদের উদ্বেগের বিষয়টি আমলে নিয়েছে। কমিশনের কর্মপরিবেশ আরও উন্নত করার জন্যই ডে-কেয়ার সেন্টারটি চালু করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি- বেসরকারি প্রতিটি দফতরে নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত করা না গেলে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা কঠিন। দুদকের এই কার্যক্রম দেখে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে আরও সক্রিয় হবে। দুদকে যেসব নারী কর্মকর্তা-কর্মচারি রয়েছেন তারা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। গ্রেফতার ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযানেও তারা দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন। দুর্নীতি দমনে তাদের দৃঢ় মানসিকতা রয়েছে। তাদের শিশুদের নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা করায় তাদের কাজের মান ও পরিমাণ আরও বাড়বে পাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। শিশুরা এখানে খেলাধুলা করতে পারবে এবং আনন্দের সঙ্গে কিছু শিখতেও পারবে। শিশুদের নিরাপত্তায় এটি দুদকের একটি ভালো দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতসহ কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন