শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

সংখ্যাতত্ত্ব্বের দিক থেকে আরবি বর্ণমালার আবজাদী হিসাব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

প্রচলিত আরবি বর্ণমালার ইতিহাস অজানা হলেও আল-কোরআনের বর্ণমালার অন্তর্ভুক্ত সকল বর্ণই ব্যবহৃত হয়েছে। এসব বর্ণের সংখ্যা ২৮টি। আরবিতে এগুলোকে বলা হয় ‘আল হরুফুল হিজায়িয়া’ অর্থাৎ ব্যঞ্জনবর্ণ। এগুলোকে ‘জুমাল’ শব্দমালাও বলা হয়। সংখ্যাতত্ত্ব্বের দিক থেকে বলা হয়, আবজাদী। তবে এটা জানা যায়নি যে, কোনো সাহিত্যিক বা ভাষাবিদ আরবি বর্ণমালা গণিতে বা সংখ্যা গণনার রীতি আবিষ্কার করেছেন।

‘হরূফে তাহাজ্জী’ বা আরবি বর্ণমালার সবকটি কোরআনে ব্যবহৃত হওয়ায় এই কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কোরআন ‘লৌহ মাহফুজে’ সংরক্ষিত থাকায় আরবি বর্ণমালার অস্তিত্ব ও কোরআনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হয়ে আছে। প্রশ্ন হচ্ছে- এগুলো দ্বারা গণনা বা সংখ্যা নির্ণয় কবে বা কে করেন? বলা হয়ে থাকে যে, প্রাচ্যের কবিগণ এর উদ্ভাবক।

বর্ণিত আছে যে, প্রাচীনকালে এক রাজার ৮ জন পুত্র ছিল এবং তাদের নামগুলো ২৮টি আরবি বর্ণমালার সমন্বয়ে গঠিত সবগুলোই ছিল আটজনের নাম। ৮টি নাম এই; আবজাদ, হাওয়্যাজ, হুত্তি, কালমান, সা‘ফাছ, কারশাত, ছাখ্খাজ ও দাযাগ।

এ ৮টি নামের সংখ্যা নিম্নরূপ:
(১) আবজাদ: আলিফ, বা, জীম, দাল। সংখ্যা তাত্তি¡ক মান- যথাক্রমে ১, ২, ৩, ৪। (২) হাওয়্যাজ: হা (ছোট) ওয়া, ঝা। মান- যথাক্রমে ৫, ৬, ৭। (৩) হুত্তি: হা (বড়) ত্বা, ইয়া। মান- যথাক্রমে ৮, ৯, (দশক হিসেবে) ১০। (৪) কালমান: কাপ (ছোট), লাম, মীম, নূন। মান- যথাক্রমে (দশক হিসেবে ) ২০, ৩০, ৪০,৫০। (৫) সা‘ফাছ: ছীন, আইন, ফা, সোয়াদ। মান -যথাক্রমে ৬০, ৭০, ৮০,৯০। (৬) কারশাত: ক্বাফ (বড়), রা, শীন, তা। মান -যথাক্রমে (শতক হিসেবে) ১০০, ২০০, ৩০০,৪০০। (৭) ছাখ্খাজ: ছা, খা, যাল। মান -যথাক্রমে ৫০০, ৬০০, ৭০০। (৮) দাযাগ: দোওয়াদ, যোওয়া, গাইন। মান- যথাক্রমে ৮০০,৯০০, (সহস্র হিসেবে) ১০০০।
(২)
আরবি বর্ণমালার ২৮টি হরফই ৮টি নামের অংশ এবং আবজাদী হিসাব অনুযায়ী সংখ্যার মান ও একক দশক হতে হাজার পর্যন্ত নির্ণিত হয়েছে।
এ আবজাদী হিসাবে বিভিন্ন ঘটনার হিসাব এবং নামকরণ করা সহজ হয়ে গিয়েছে। অনেকে কোরআনের সংখ্যা তাত্তি¡ক আয়াতগুলো নির্ণয় করেছেন এবং তাবীজের বই পুস্তকে তা ব্যবহার করেছেন।

আগের যুগের আরবি, ফার্সি, উর্দু কবি সাহিত্যিকদের রচনাবলীতে আবজাদী হিসাবের ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। এটিকে অনেকে আলাদা শাস্ত্র রূপে মনে করেন এবং এর চর্চা অনুশীলন করে থাকেন। তাই কারো জন্ম, মৃত্যু, শোক, বিয়ে-শাদী ইত্যাদি ছাড়াও বিভিন্ন ঘটনা উপলক্ষে আবজাদী হিসাব অনুযায়ী সন, তারিখ ব্যবহার করেন। রাসূলুল্লাহ (সা:) এর ‘না‘তিয়া কাব্যে’ দেখতে পাওয়া যায়, যে সব কবি অতি সূক্ষ্নভাবে না’তিয়া কবিতা আবজাদী হিসাব অনুসরণ করেছেন, তাদের মধ্যে একজন বাঙালি সাধক ফার্সি কবি।

দুইটি ছত্র এই রূপ: ‘রাস্তি চুঁ আউয়্যালীনে আহ্মদি/দর সখুন চুঁ আখেরীনে আবজাদি’। অর্থাৎ- সততার মধ্যে তিনি ছিলেন আহমদের প্রথম অক্ষর ‘আলিফের’ ন্যায় সোজা-সরল। (এবং ) সত্যবাদিতা-সততায় ও কথাবার্তায় তিনি ছিলেন আবজাদের শেষ অক্ষর ‘গাইন’ এর ন্যায়।

গাইন সংখ্যার তত্তে¡র দিক দিয়ে হাজার বা সহস্র গণ্য হয়ে থাকে । আরবিতে ‘হাজারুন’ অথবা ‘হুজারুন’ বুলবুলি বা কোকিলকে বলা হয়। অর্থাৎ- হুজুর (সা:) কথা-বার্তায় ছিলো বুলবুলি বা কোকিল কণ্ঠের ন্যায়। অর্থাৎ আর্কষণীয় হৃদয়গ্রাহী। বিভিন্ন সাহিত্যে এরূপ বিরল দৃষ্টান্তের অভাব নেই। আবজাদী হিসাব গণনা বা সংখ্যাতত্ত¡ আনুযায়ী, ‘বিসমিল্লাহি রাহমানির রাহীম’ এর সংখ্যা ৭৮৬ ধরা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
কাজী হাফিজ ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:১৫ এএম says : 0
অনেক উপকারী একটাা পোস্ট।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:১৬ এএম says : 0
আশা করি সবগুলো ভাষা পাওয়া যাবে।
Total Reply(0)
কামাল ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:১৭ এএম says : 0
আরবী বর্ণমালা সম্পর্কে আরও দুই থরনের টাকার জণ্য ঢাকায় আসুন।
Total Reply(0)
সুক্ষ্ম চিন্তা ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:১৭ এএম says : 0
ধন্যবাদ লেখককে।
Total Reply(0)
এয়া এম নুরুজ্জামান ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৩:১৮ পিএম says : 0
হাওয়াঝ এর 'হা' বড় হবে। আর হুত্তি এর 'হা' ছোট হবে।
Total Reply(0)
সোহেল মোল্লা ৬ জুন, ২০২০, ৭:৫১ পিএম says : 0
সরাসরি কোরআন আরবী সংখ্যা পদ্ধতির কোন আয়াত বা আলোচনা আছে কি?
Total Reply(0)
আ: ওহাব ২৬ আগস্ট, ২০২০, ৯:১৫ পিএম says : 0
আবজাদী তত্ব ও সংখা দিয়ে বিসমিল্লাহ লেখা পিথাগোরসের আবিষ্কার এটা বিদাত
Total Reply(0)
Abul bashar ২১ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:২৮ পিএম says : 0
786 দিয়ে বিসমিল্লাহ লিখা ভুল। আবজাদি তথ্য হিসেবে এটি ভুল।
Total Reply(0)
মোঃ ইসমাইল হোসাইন দিনার ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:১০ এএম says : 0
খুব সুন্দর তথ্যপূর্ণ ও শিক্ষনীয় বিষয়।
Total Reply(0)
মোঃ ইসমাইল হোসাইন দিনার ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:১০ এএম says : 0
খুব সুন্দর তথ্যপূর্ণ ও শিক্ষনীয় বিষয়।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন