আল্লাহপাকের জিকির ও স্মরণের অসংখ্য পথ ও পদ্ধতি রয়েছে। এর যে কোনো একটি অবলম্বন করলেই জিকির সম্পন্ন হয়ে যায়। তবে, সবচেয়ে উত্তম জিকির হলো, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়াদাহু লা শারীকা লাহু’।
অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য মা’বুদ বা উপাস্য নেই, তিনি একক তার কোনো অংশী নেই। এই জিকিরের মধ্যে তাওহীদের স্বীকৃতি যেমন মূর্ত হয়ে ফুটে উঠেছে, তেমনি অংশীবাদিতার যাবতীয় উপায় উপকরণকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। নবী করিম সা. স্পষ্টতই বলেছেন, সবচেয়ে উত্তম দোয়া হলো আরাফাত দিবসের দোয়া। আর সবচেয়ে উত্তম কথা হলো যা আমি এবং অতীতের নবীগণ বলেছেন। আর তা হলো: ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়াদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুয়া আ’লা কুল্লি শাইইন ক্বাদীর।’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য মা’বুদ বা উপাস্য নেই। তিনি একক অদ্বিতীয়। তার কোনো শরীক নেই। সকর রাজত্ব কেবলমাত্র তারই জন্য। আর প্রশংসাও একমাত্র তারই। তিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান।
মহান রাব্বুল আলামীন স্বীয় ঈমানদার বান্দাহগণকে অধিক হারে তার জিকির করার এবং সকাল সন্ধ্যায় তার তাসবীহ বা প্রশংসা করার তাকীদ করেছেন। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : ওহে যারা ঈমান এনেছ; তোমরা আল্লাহকে বেশি বেশি করে জিকির (স্মরণ) কর। আর সকাল-সন্ধ্যা তার তাসবীহ (প্রশংসা) কর। (সূরা আহযাব : ৪১-৪২)।
এ ছাড়া আল্লাহপাকের জিকিরের জন্য তিনি নামাজ কায়েম করার ব্যবস্থাও করেছেন। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : তোমরা আমার জিকিরের জন্য নামাজ প্রতিষ্ঠিত কর। (সূরা ত্বাহা : ১৫৪)।
প্রসঙ্গত স্মর্তব্য যে, ঈদুল আযহার পরবর্তী তিনদিনে আইয়্যামে তাশরীক বলা হয়। এই দিনগুলোকে আল্লাহপাক ঈমানদার বান্দাহদের জন্য পানাহার করা ও জিকির করার জন্য নির্ধারণ করেছেন। নবী করিম সা. বলেছেন : তাশরীকের দিনগুলো হচ্ছে পানাহার এবং আল্লাহর জিকিরের জন্য।
মোট কথা, আল্লাহপাক আমাদেরকে তার জিকির করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। তিনি জিকিরকারী বান্দাহদের প্রশংসা করেছেন এবং তাদের জন্য পুরস্কারের অঙ্গীকার করেছেন। বিভিন্ন ইবাদত আদায় করার পর মুমিন বান্দাহগণকে তিনি জিকির করার আদেশ করেছেন। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : তোমরা যখন নামাজ কায়েম করা সম্পন্ন করবে, তখন দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহর জিকির করবে। (সূরা আন নিসা : ১০৩)।
বিশেষত হজ পালনের সময় আল্লাহর জিকির করার তাকিদ করা হয়েছে। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : যখন আরাফাত থেকে তোমরা ফিরে আসবে তখন (মুজদালিফায়) মাসায়ারে হারামের নিকট আল্লাহর জিকির করবে। (সূরা বাকারাহ : ১৯৮)।
আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তায়ালা আরও ঘোষণা করেছেন : আর তারা (মুমিনগণ যেন নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহপাক তাদেরকে চতুস্পদ জন্তুর মধ্য থেকে যে সকল রিজিক প্রদান করেছেন, এর জন্য আল্লাহর নাম স্মরণ করে। (সূরা বাকারাহ : ২০৩)।
পরিশেষে, এ কথা স্পষ্টতই বলা যায় যে, মানবজীবনে ঈমানদার বান্দাহগণের উচিত সকল সময়ে আল্লাহপাকের জিকিরে নিমগ্ন থাকা। কেননা, যারা আল্লাহর জিকিরের প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে, তাদের দুনিয়ার জীবন হয় অভাব-অনটনে পরিপূর্ণ এবং পরকালে হাসরের ময়দানে তারা অন্ধ হয়ে উত্থিত হবে। এমনটা কারও কাম্য হতে পারে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন