সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

উত্তম জিকির লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

আল্লাহপাকের জিকির ও স্মরণের অসংখ্য পথ ও পদ্ধতি রয়েছে। এর যে কোনো একটি অবলম্বন করলেই জিকির সম্পন্ন হয়ে যায়। তবে, সবচেয়ে উত্তম জিকির হলো, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়াদাহু লা শারীকা লাহু’।

অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য মা’বুদ বা উপাস্য নেই, তিনি একক তার কোনো অংশী নেই। এই জিকিরের মধ্যে তাওহীদের স্বীকৃতি যেমন মূর্ত হয়ে ফুটে উঠেছে, তেমনি অংশীবাদিতার যাবতীয় উপায় উপকরণকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। নবী করিম সা. স্পষ্টতই বলেছেন, সবচেয়ে উত্তম দোয়া হলো আরাফাত দিবসের দোয়া। আর সবচেয়ে উত্তম কথা হলো যা আমি এবং অতীতের নবীগণ বলেছেন। আর তা হলো: ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়াদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুয়া আ’লা কুল্লি শাইইন ক্বাদীর।’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য মা’বুদ বা উপাস্য নেই। তিনি একক অদ্বিতীয়। তার কোনো শরীক নেই। সকর রাজত্ব কেবলমাত্র তারই জন্য। আর প্রশংসাও একমাত্র তারই। তিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান।

মহান রাব্বুল আলামীন স্বীয় ঈমানদার বান্দাহগণকে অধিক হারে তার জিকির করার এবং সকাল সন্ধ্যায় তার তাসবীহ বা প্রশংসা করার তাকীদ করেছেন। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : ওহে যারা ঈমান এনেছ; তোমরা আল্লাহকে বেশি বেশি করে জিকির (স্মরণ) কর। আর সকাল-সন্ধ্যা তার তাসবীহ (প্রশংসা) কর। (সূরা আহযাব : ৪১-৪২)।

এ ছাড়া আল্লাহপাকের জিকিরের জন্য তিনি নামাজ কায়েম করার ব্যবস্থাও করেছেন। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : তোমরা আমার জিকিরের জন্য নামাজ প্রতিষ্ঠিত কর। (সূরা ত্বাহা : ১৫৪)।

প্রসঙ্গত স্মর্তব্য যে, ঈদুল আযহার পরবর্তী তিনদিনে আইয়্যামে তাশরীক বলা হয়। এই দিনগুলোকে আল্লাহপাক ঈমানদার বান্দাহদের জন্য পানাহার করা ও জিকির করার জন্য নির্ধারণ করেছেন। নবী করিম সা. বলেছেন : তাশরীকের দিনগুলো হচ্ছে পানাহার এবং আল্লাহর জিকিরের জন্য।

মোট কথা, আল্লাহপাক আমাদেরকে তার জিকির করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। তিনি জিকিরকারী বান্দাহদের প্রশংসা করেছেন এবং তাদের জন্য পুরস্কারের অঙ্গীকার করেছেন। বিভিন্ন ইবাদত আদায় করার পর মুমিন বান্দাহগণকে তিনি জিকির করার আদেশ করেছেন। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : তোমরা যখন নামাজ কায়েম করা সম্পন্ন করবে, তখন দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহর জিকির করবে। (সূরা আন নিসা : ১০৩)।

বিশেষত হজ পালনের সময় আল্লাহর জিকির করার তাকিদ করা হয়েছে। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : যখন আরাফাত থেকে তোমরা ফিরে আসবে তখন (মুজদালিফায়) মাসায়ারে হারামের নিকট আল্লাহর জিকির করবে। (সূরা বাকারাহ : ১৯৮)।

আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তায়ালা আরও ঘোষণা করেছেন : আর তারা (মুমিনগণ যেন নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহপাক তাদেরকে চতুস্পদ জন্তুর মধ্য থেকে যে সকল রিজিক প্রদান করেছেন, এর জন্য আল্লাহর নাম স্মরণ করে। (সূরা বাকারাহ : ২০৩)।

পরিশেষে, এ কথা স্পষ্টতই বলা যায় যে, মানবজীবনে ঈমানদার বান্দাহগণের উচিত সকল সময়ে আল্লাহপাকের জিকিরে নিমগ্ন থাকা। কেননা, যারা আল্লাহর জিকিরের প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে, তাদের দুনিয়ার জীবন হয় অভাব-অনটনে পরিপূর্ণ এবং পরকালে হাসরের ময়দানে তারা অন্ধ হয়ে উত্থিত হবে। এমনটা কারও কাম্য হতে পারে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Muhammed Nazrul Islam ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:০৫ এএম says : 0
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ হলো দীনের ভিত্তিভূমি। যার ওপর দীনের সবকিছুর অবস্থান। তাওহিদের মূলসূত্রও এই কলেমায় নিহিত। এটি যে সর্বোত্তম জিকির তা সহজে অনুমেয়।
Total Reply(0)
মেহেদী ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:০৫ এএম says : 0
আল-হামদুলিল্লাহ যে সর্বোত্তম দোয়া এ বিষয়টিও স্পষ্ট। দয়ালু দাতাকে সন্তুষ্ট করতে এ দোয়ার কোনো বিকল্প নেই। দুনিয়ার জীবনে ক্ষমতাবান ব্যক্তির অনুগ্রহলাভের জন্য অনুগৃহীতরা তার প্রশংসা করে। সমস্ত ক্ষমতার উৎস এবং দয়ার ভাণ্ডার আল্লাহর প্রশংসার উদ্দেশ্যও থাকে তার অনুগ্রহ অর্জন করা।
Total Reply(0)
তোফাজ্জল হোসেন ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:০৫ এএম says : 0
মোল্লা আলী কারি (রহ.) বলেছেন, জিকিরের মধ্যে কলেমা তাইয়েবা যে সর্বোত্তম তাতে সন্দেহের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। এটি হলো দীনের ভিত্তি যার ওপর পুরো দীন প্রতিষ্ঠিত। এটি এমন এক পবিত্র কলেমা যাকে ঘিরে দীনের চাকা আবর্তিত হয়। এ কারণেই সুফি ও আরেফরা এ কলেমার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেন এবং এ কলেমার জিকির বেশি বেশি করার তাগিদ দেন।
Total Reply(0)
নাসিম ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:০৬ এএম says : 0
রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, একবার মুসা (আ.) আল্লাহর দরবারে আরজ করে করেন, হে আল্লাহ! আমাকে এমন কোনো ওজিফা শিখিয়ে দিন যার সাহায্যে আমি আপনাকে স্মরণ করব এবং আপনাকে ডাকব। আল্লাহ তাকে নির্দেশ দিলেন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়তে থাকো। হজরত মুসা (আ.) আরজ করলেন, হে আমার রব! আমি তো এমন একটি বিশেষ জিনিস চেয়েছি যা একমাত্র আমাকে দান করা হয়। ইরশাদ হলো, হে মুসা! সাত তবক আসমান ও সাত তবক জমিনকে যদি এক পাল্লায় রাখা হয় আর তার অন্য পাল্লায় লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ রাখা হয়, তবে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহের পাল্লাই ভারী হবে (নাসাই, ইবনে হিব্বান, হাকেম)।
Total Reply(0)
কামাল ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:০৬ এএম says : 0
দীনের রশি শক্ত করে আঁকড়ে ধরতে আল্লাহ আমাদের এই কলেমা বেশি বেশি ধারণ করার তাওফিক দিন।
Total Reply(0)
কে এম শাকীর ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:০৬ এএম says : 0
সর্বশক্তিমান আল্লাহ তার কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকারে আমাদের বেশি বেশি আল-হামদুলিল্লাহ পাঠের তাওফিক দিন।
Total Reply(0)
আমি আশরাফুল হাসান ২৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:০০ এএম says : 0
এখানকার সবার কমেন্ট গুলি পরলাম, অনেক ভাল লাগলো,
Total Reply(0)
আলমগীর ২ এপ্রিল, ২০২১, ১১:৩৯ এএম says : 0
মাশাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ
Total Reply(0)
আলমগীর ২ এপ্রিল, ২০২১, ১১:৩৯ এএম says : 0
মাশাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ
Total Reply(0)
কাজী আবদুছ ছালাম ১২ মে, ২০২১, ১০:১৫ পিএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ। লেখাটা পড়ে অনেক উপকৃত হলাম।
Total Reply(0)
Monayem Hasan Monna ২ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:৪৩ পিএম says : 0
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ” আতি উত্তম যিকির। (সুনান আত তিরমিজী: ৩৩৮৩)
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন