বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

মুসাফাহার দুআর ব্যাপারে যত্মবান হওয়া উচিত

মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক | প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৫ এএম

হাদিস শরীফে এসেছে যে, ‘যখন দুই জন মুসলিমের সাক্ষাত হয় এবং তারা একে অপরের সঙ্গে মুসাফাহা করে, আল্লাহ তাআলার হামদ ও শোকর করে এবং আল্লাহর কাছে মাগফিরাত কামনা করে তো আল্লাহ তাআলা উভয়কে মাগফিরাত দান করেন।’ (সুনানে আবু দাউদ হাদিস ৫১৬৯)।

হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, ‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যখনই দু’জন মুসলিমের সাক্ষাত হয় এবং তারা পরস্পর হাত মিলায় তো আল্লাহ তাআলার ওপর তাদের এই হক জন্মে যে, আল্লাহ তাদের দুআ কবুল করবেন এবং তাদের হাতগুলো পৃথক হওয়ার আগেই তাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন।’ (মুসনাদে আহমদ ৩/১৪২, হাদিস ১২৪৫১)

উপরোক্ত হাদিসগুলোর কারণে আমাদের পূর্বসূরী বুযুর্গরা মুসাফাহার সময় একে অপরের জন্য মাগফিরাতের দুআ করতেন। এই দুআর জন্য প্রসিদ্ধ আরবি বাক্যটি খুবই উপযুক্ত, ‘ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম’ অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে ক্ষমা করুন।

এটা কত ভালো বিষয় যে, মুসলমানদের পারস্পরিক সাক্ষাত প্রথমে শান্তি ও সালামতি এরপর ক্ষমা ও মাগফিরাতের দুআর দ্বারা হবে। ঈমানের পরে সুস্থতা ও নিরাপত্তা এবং মাগফিরাত ও পবিত্রতার চেয়ে বড় কোনো নেয়ামত আর আছে কি?

মুসলমানদের পারস্পরিক সাক্ষাত যে উদ্দেশ্যেই হোক না কেন, এর প্রকৃত প্রেরণা তো আল্লাহর হামদ ও ছানা এবং সালাম ও মাগফিরাত কামনাই হওয়া উচিত।

সায়ীদ আলমাকবুরী রাহ. থেকে বর্ণিত, ‘আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, আমি (অনেক সময়) বাজারে যাই। তবে এজন্য নয় যে, সেখানে আমার কোনো প্রয়োজন রয়েছে; বরং এজন্য যাই যে, (সেখানে অনেক মানুষের সমাবেশ, তাই অনেক মানুষকে সালাম করার সুযোগ হবে) আমি তাদেরকে সালাম দেবো এবং উত্তরে তাদের সালাম লাভ করব।’

বুশাইর ইবনে ইয়াসার বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-কে কেউ আগে সালাম দিতে পারত না।’ (আততবাকাতুল কুবরা ইবনে সাদ, খন্ড ৪. পৃ. ১৫৫,১৫২)।

উমর রা. এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কেমন আছ?’ তিনি বললেন, ‘আমি আপনার কাছে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করছি।’ (হিলইয়াতুল আউলিয়া আবু নুয়াইম খন্ড ৭, পৃ. ৩০)
ইমাম ইবনুল মুবারক রাহ. থেকে বর্ণিত, আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন- ‘এভাবে পরস্পরে আল্লাহর হামদ ও ছানা করব।’ (আযযুহদ ওয়ার রাকাইক পৃ. ৬৮-৬৯)

সালাফে সালেহীনের মধ্যে এই অভ্যাস গড়ে উঠেছিল নবী করীম সা.-এর সুন্নাহর অনুকরণে। তবারানী বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সা. এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করলেন- কেমন আছ? তিনি বললেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমি আপনার কাছে আল্লাহর প্রশংসা করছি।’ রাসূলে করীম সা. ইরশাদ করলেন, তোমার কাছে এটাই আমি চেয়েছি। (অর্থাৎ আমার প্রশ্নের উত্তরে তুমি আল্লাহর হামদ ও ছানা করবে এটাই আমার উদ্দেশ্য ছিল)। (মাজমাউয যাহওয়াইদ খন্ড ১০, পৃ. ১৪০, খন্ড ৮, পৃ. ৪৬)

সারকথা এই যে, মুসলমানদের কোনো সাক্ষাত সালাম, দুআয়ে মাগফিরাত ও হামদ ও ছানা বিহীন না হওয়া উচিত। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন। আমীন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
চাদের আলো ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৪৮ এএম says : 0
যে কোনো দোয়াই থা্কা উচিত।
Total Reply(0)
চাদের আলো ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৪৮ এএম says : 0
আল্লাহ আমাদের সালামন প্লাজিরর কথা বলতে পারিননি।
Total Reply(0)
আকাশ ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৯:২৫ এএম says : 0
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের প্রতিটি বিধান মানার তৌফিক দান করুক।
Total Reply(0)
নোমান ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৯:২৫ এএম says : 0
ইসলামের প্রতিটি বিধানই মানবজাতীর জন্য কল্যাণকর
Total Reply(0)
নাজিম উদ্দিন ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৯:২৬ এএম says : 0
এই বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক সাহেবকে অসংখ্য মোবারকবাদ জানাচ্ছি।
Total Reply(0)
মনসূরুল হক ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৯:২৭ এএম says : 0
দুইজন মুসলমান যখন পরস্পর সাক্ষাৎ করে, তখন তারা একে অপরকে সালাম দেয়, সালামের পর মুসাফাহা করে। এটা যেমনিভাবে মুসলমানদের পরস্পর মুহাব্বত-ভালোবাসার নিদর্শন, তেমনিভাবে পরস্পর ঘৃণা-বিদ্বেষ ইত্যাদি দূর করার মাধ্যম।
Total Reply(0)
মনিরুল ইসলাম ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৯:২৭ এএম says : 0
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে সহীহ বুঝ দান করুন, সুন্নাতের উপর আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন