শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মেলায় ফাল্গুনের রঙ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

পহেলা ফাল্গুন ছিল ১৩ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু বাংলা বর্ষপঞ্জি সংশোধনের পর তা পিছিয়েছে একদিন। কিন্তু ঋতুরাজকে বরণ করে নিতে আগেভাগেই সেজেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বইমেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মেলায় আসা তরুণ-তরুণীদের পরনে বাসন্তী রঙের পোশাক। কারও এক হাতে বই, আর অন্য হাত বন্দি প্রিয় মানুষের হাতে।

বিকেলে অমর একুশে গ্রন্থমেলার দুয়ার খুলতেই প্রকৃতির রঙে নিজেদের সাজিয়ে নেওয়া পাঠক-দর্শনার্থীরা প্রবেশ করে মেলা চত্বরে। বসন্ত না এলেও তার আগমনী বার্তায় মেলায় লেগেছিল ফাল্গুনের রঙ। মেলাজুড়ে যেদিকেই চোখ যায়, শুধুই হলুদ আর বাসন্তী রঙের সমারোহ। শাহবাগ মোড়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, টিএসসি, চারুকলার বকুলতলা, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, রবীন্দ্র সরোবরসহ রাজধানীর সর্বত্রই দেখা যায় ফাগুনের রঙ। বাসন্তী সাজের আনন্দে মেতে ওঠে তরুণ-তরুণীর মন।

মেলায় জনস্রোত দেখে খুশি প্রকাশকরাও। তাদের মধ্যেও বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। তাদের ভাবনা, অতীতের যে কোনো বারের থেকে বই বিক্রির পরিমাণ এবার বেশি হবে। সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ বলেন, এখন থেকে যে ভিড় হচ্ছে, তা মেলার শেষ দিন পর্যন্ত দেখা যাবে।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, গোটা মেলা চত্বরজুড়েই ছিল ফাল্গুনের রঙ। শীতের শুষ্কতাকে বিদায় করে, সজীবতার আহ্বান জানিয়ে বইপ্রেমীরা এসেছেন বইমেলায়। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় গতকাল নবীন পাঠকরাই মুখর করে তুলেছেন মেলা প্রাঙ্গণ। বই কেনার পাশাপাশি আড্ডা-গল্পে মেতে ছিলেন সবাই।

মাথায় টায়রা ও বাসন্তী রঙের শাড়ি পড়ে মেলায় ঘুরতে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের তিন বান্ধবি। তাদের মধ্যে কথা হয় ফারজানা ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, আগেও একবার এসেছি। তখন বই কিনেছিলাম। কিন্তু আজ এসেছি ঘুরতে। শীতের শেষ আর বসন্তের শুরুর সময়টার সাক্ষী হব।
মূল পর্বের অনুষ্ঠান: বৃহস্পতিবার ছিল একুশে গ্রন্থমেলার ১২তম দিন। মেলা চলে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। মেলায় নতুন বই আসে ১৮০টি। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সুব্রত বড়–য়া রচিত বঙ্গবন্ধুর জীবনকথা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজন বড়–য়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন লুৎফর রহমান রিটন এবং মনি হায়দার। লেখকের বক্তব্য প্রদান করেন সুব্রত বড়–য়া। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি।

প্রাবন্ধিক বলেন, আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শ দর্শন জানা এবং চর্চা করা। নতুন প্রজন্মের নবীন-তরুণদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে যত আগ্রহ সৃষ্টি করা যাবে, তারা ততই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলা গড়ার পক্ষে এটা হতে পারে অত্যন্ত জরুরি উদ্যোগ। সুব্রত বড়–য়া রচিত বঙ্গবন্ধুর জীবনকথা গ্রন্থখানি কিছুটা হলেও আমাদের এগিয়ে দেবে সেই লক্ষ্যে। উক্তি-ভাষ্যে, আলোচনায় বঙ্গবন্ধুকে এখানে উপস্থাপন করা হয়েছে বিশ্বনেতার মানদন্ডে।

সভাপতির বক্তব্যে ড. মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি বলেন, সুব্রত বড়–য়ার লিখিত এ গ্রন্থ অত্যন্ত তথ্যনিষ্ঠ এবং বিশ্লেষণ-ঋদ্ধ। আমাদের এবং নতুন প্রজন্মের জন্য প্রয়োজনীয় একটি গ্রন্থ। বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু একই সূত্রে গাঁথা। অতীতে বহুবার বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে তাঁর নাম মুছে দেবার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে কিন্তু তা সফল হয়নি। কারণ, বাংলার প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে বঙ্গবন্ধুর চিরকালের জন্য স্থান করে নিয়েছেন।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন রফিক-উম-মুনীর চৌধুরী, মৌলি আজাদ, রাসেল আশেকী এবং শোয়েব সর্বনাম।

আজকের অনুষ্ঠানসূচী: আজ শুক্রবার অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৩তম দিন। মেলা চলবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত মেলায় থাকবে শিশু প্রহর। সকাল ১০টায় শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার চ‚ড়ান্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে আসাদ চৌধুরী রচিত সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধুর শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন শোয়াইব জিবরান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন আনিসুর রহমান এবং নূরুন্নাহার মুক্তা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক খুরশীদা বেগম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন