শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

জার্মানিতে ইসলাম বিদ্বেষ থেকেই হামলা

নিহত ৯ জনের মধ্যে ৫ জন তুর্কি নাগরিক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৩ এএম

মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ থেকেই জার্মানির হানাও শহরের শিশাবারে হামলা বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। হামলায় নিহত নয়জনের অধিকাংশই বিদেশি বংশোদ্ভূত। হামলাকারী অতীতে আরব এবং মুসলমান দেশগুলো সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছিল বলে জানা গেছে। বুধবারের হামলার দায় স্বীকার করা হয়েছে এমন একটি চিঠি এবং ভিডিও বার্তাও পরীক্ষা করছে পুলিশ।
বুধবারের ঘটনায় নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন তুর্কি নাগরিক ছিলেন বলে দাবি করেছেন জার্মানিতে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত আলী কামাল আয়দিন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে লিখেছে, ‘এই হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, ইউরোপে ‘বর্ণবাদ এবং ইসলামবিদ্বেষ’ বাড়ছে।’ জার্মান সরকারের যথাযথ তদন্তে হামলার প্রকৃত উদ্দেশ্য উঠে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান।
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘হানাও শহরের শিশাবারে বুধবার রাতের হামলার সঙ্গে সম্ভবত উগ্র ডানপন্থি চরমপন্থার সম্পর্ক রয়েছে। অন্য জাতিসত্ত্বা, ধর্ম এবং চেহারার প্রতি বিদ্বেষ থেকে হামলাকারী উগ্র ডানপন্থি চরমপন্থা, বর্ণবাদী উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে বলে এই মুহূর্তে নানা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্ণবাদ একধরনের বিষ। ঘৃণা একধরনের বিষ। আর এই ঘৃণা আমাদের সমাজে এখনো আছে।’

সাম্প্রতিক কালে জার্মানিতে এত বড় মাপের বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেনি। প্রথমে ‘মিডনাইট’ নামে একটি হুকা বারে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় হামলাকারী টোবিয়াস আর (৪৩)। সে জার্মান নাগরিক। ‘মিডনাইট’ থেকে বেরিয়ে সে ‘এরিনা বার অ্যান্ড কাফে’ নামে আর একটি পানশালায় ঢোকে। বন্দুক নিয়ে সেখানে বেশ কিছু ক্ষণ তান্ডব চালানোর পরে নিজের বাড়ি ফিরে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা শুনে বোঝা যায় একাই দু’টি জায়গায় তান্ডব চালিয়েছে বন্দুকবাজ। সারা রাত তল্লাশি অভিযানের পরে শেষ রাতে প্রকাশ্যে আসে টোবিয়াসের পরিচয়। বৃহষ্পতিবার সকালে তার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে প্রথমে বছর বাহাত্তরের এক বৃদ্ধার গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারা জানতে পারে নিহত বৃদ্ধা টোবিয়াসের মা। পরে সেই ফ্ল্যাট থেকেই টোবিয়াসের দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, মাকে হত্যা করে নিজেকে গুলি করেছে টোবিয়াস।

হানাওয়ে হামলার ঘটনার পর জার্মানির চারটি সবচেয়ে বড় ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশন উগ্র ডানপন্থিদের চরমপন্থা রুখতে আরো উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। মুসলমানদের সমন্বিত কাউন্সিল কেআরএম জানিয়েছে, তারা গত কয়েকমাস ধরেই ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে একটি পরিষ্কার অবস্থান নিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছে আসছিলেন।
উল্লেখ্য, জার্মানিতে গত কয়েকবছরে মসজিদসহ মুসলমানদের উপর হামলার বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। দেশটি ২০১৫ সালে দশলাখের বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার পর এ ধরনের হামলা বেড়ে যায়। সূত্র : সিএনএন, এস এফ ক্রনিকল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন