সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

বিসমিল্লাহ’র প্রভাবে রোমের বাদশাহ মুসলমান হয়ে যান

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

জাহেলি যুগের নানা কুপ্রথার মধ্যে এটাও ছিল যে, লোকেরা তাদের উপাস্য দেব-দেবীর নামে কাজ আরম্ভ করত। একজনের নাম পাওয়া যায় যিনি সর্ব প্রথম ‘আল্লাহুম্মা বিসমিকা’ (হে আল্লাহ তোমার নামে) অথবা ‘বিসমিকা আল্লাহুম্মা’ (তোমার নামে হে আল্লাহ) চালু করেন। ইসলামের প্রাথমিক যুগেও বিসমিকা আল্লাহুম্মা খোদ রসূলুল্লাহ (সা.) ব্যবহার করেছেন বলে জানা যায়।

কোরআনের আয়াত নাজিল হলে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ চালু হয়ে যায় এবং তাই সর্বত্র ব্যবহৃত হতে থাকে। রসূলুল্লাহ (সা.)-এর আমলে তিনি রাজণ্যবর্গের নামে প্রেরিত সব পত্রে এবং চুক্তিপত্রসমূহে ‘বিসমিল্লাহ’ ব্যবহার করেছেন। ‘বিসমিল্লাহ’ চালু হওয়ার এটাই সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।

কোরআনের প্রথম অবতীর্ণ সূরার নাম ‘ইকরা’ এবং এর প্রথম আয়াতটি হচ্ছে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর জবাণী: ‘ইকরা বিসমি রাব্বিকা।’ অর্থাৎ, তোমার প্রভুর নামে পাঠ করো। কোরআনে সূরা ‘তাওবা’র শুরু ব্যতীত সকল সূরার প্রারম্ভে ‘বিসমিল্লাহ’ লেখা হয়েছে। ‘সূরা নমলে’র এক স্থানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ পূর্ণ বর্ণিত আছে। ‘সূরা নমল’-এ হজরত নূহ (আ.) তাঁর নৌকার সফরসঙ্গীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন: ‘ইরকাবু ফিহা বিসমিল্লাহি মাজরেহা ওয়া মুরসাহা।’ এরূপ কোরআনের অসংখ্য স্থানে আল্লাহর নাম উচ্চারণের কথা বলা হয়েছে।

কোরআনে ‘আউজুবিল্লাহ’র কথা বলা হয়নি বলে যারা বলেন, তাদের এ ভ্রান্ত ধারণা নিরসনের জন্য কোরআনের একটি আয়াতই যথেষ্ট, যাতে বলা হয়েছে: ‘ফা ইযা কারা’তাল কোরআনা, ফাসতায়িয বিল্লাহি মিনাশ শয়তানির রাজীম।’ অর্থাৎ, তুমি যখন কোরআন পাঠ করো তখন শয়তানের প্রতারণা থেকে আল্লাহ তাআলার আশ্রয় চাও। (সূরা: নহল, আয়াত: ৯৮)।

এ সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে। বলা হয়েছে: ‘প্রত্যেক কাজ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে আরম্ভ করো।’ রসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ‘যে কাজ ‘বিসমিল্লাহ’ ছাড়া আরম্ভ তাতে কোনো বরকত থাকে না।’ এক হাদীসে বলা হয়েছে; “ঘরের দরজা বন্ধ করতে, বাতি নেভানোর সময়, পাত্র আবৃত করার সময়, কোন কিছু খাবার সময়, পানি পান করতে, ওযু করতে, সোওয়ারীতে আরোহণ করতে এবং তা থেকে অবতরণ কালে- এসব ক্ষেত্রে কোরআন ও হাদিসে ‘বিসমিল্লাহ’ বলার নির্দেশ রয়েছে।” মোমেন মুসলমানদের দাফনের সময় ‘বিসমিল্লাহে ওয়া আালা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ’ পাঠ করতে হয়।

একটি ঘটনা: রোমের বাদশাহ তার মাথা ব্যথার কোনো ঔষধ চেয়ে খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর নিকট পত্র দিয়েছিলেন। জবাবে খলিফা একটি টুপি প্রেরণ করেন। বাদশাহ যখন টুপি মাথায় রাখতেন, মাথা ব্যথা থাকত না। যখন মাথা হতে টুপি রেখে দিতেন, আবার ব্যথা শুরু হয়ে যেত। এতে তিনি বিস্মিত হয়ে টুপি খুলে দেখেন, তাতে লেখা ছিল ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’। এরই ফলে মাথার ব্যথা দূর হয়ে যেত। অতঃপর রোমের বাদশাহ টুপিতে সংযুক্ত ‘বিসমিল্লাহ’ লিখিত ‘তাবীজ’ দেখে মুগ্ধ হন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ধণ্য হন। (কিতাবুদ্দায়ে ওয়াদ্দাওয়া)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Altaf Ahmed Khosru ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৫৩ এএম says : 0
একসময় গোটা বিশ্ব শাসন করেছে মুসলমান শাসকরা। মুসলিম নেতা ও যোদ্ধাদের বীরত্বের গল্প যে কাউকে বিস্মিত করবে। ইতিহাস সেরা মুসলিম বীর যোদ্ধার তালিকায় নিঃসন্দেহে প্রথমে নবী ও সাহাবিদের নাম আসে। তাদের দেখানো পথেই হেঁটেছেন অন্যরা। যুগে যুগে বহু মুসলিম শাসক, সেনাপতি জীবনবাজি রেখে লড়াই করেছেন। মুসলিম সাম্রাজ্য বিস্তার করেছেন বিশ্বজুড়ে। মুসলমানদের এই গৌরব ইতিহাস লিখেছেন অসংখ্য বীর যোদ্ধা। রণকৌশল, দুঃসাহস ও বীরত্বে তারা অতুলনীয়।
Total Reply(0)
সাকা চৌধুরী ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৫৫ এএম says : 0
লেখাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
Total Reply(0)
চাদের আলো ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৫৫ এএম says : 0
সুবহানাল্লাহ। সবই আল্লাহর ইচ্ছা।
Total Reply(0)
নীল আকাশ ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৫৬ এএম says : 0
আল্লাহর প্রতিটি বাণীরইপ্রভাব আছে। আল্লাহ আমাদের সহায় হো্ন।
Total Reply(0)
মেহেদী ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৫৬ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন।
Total Reply(0)
জাহিদুল ইসলাম খোকন ১ মার্চ, ২০২০, ৮:০৭ পিএম says : 0
সবই আললাহর ইচছা
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন