সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

নবীর শোকে ‘ইয়াসুফে’র আত্মদান

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

আম্বিয়া কেরামের চিরন্তন নিদর্শনাবলীর মধ্যে তাঁদের প্রতি আল্লাহর পক্ষ হতে নাজিলকৃত কিতাবাদি ও সহিফাগুলোর সঠিক সংখ্যা আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন। কোরআনে বর্ণিত নবীগণের নাম ও তাদের প্রতি অবতীর্ণ কিতাবগুলোর মধ্যে তাওরাত, যাবুর ও ইঞ্জিলের নাম বার বার উচ্চারিত হয়েছে। কিন্তু সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী রাসূল হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি অবতীর্ণ সর্বশেষ আল্লাহর কালাম আল কোরআন বিশ^ মানবের চিরন্তন জীবনবিধান হিসেবে কেয়ামত পর্যন্ত অবিকল, অক্ষুন্ন থাকবে।

এ পটভ‚মিকার আলোকে বলা যায়, শেষ নবী ব্যতীত তাদের কোনো প্রতীক, নিদর্শণ, নাম ও তওহীদের বাণী ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। বাহ্যত; কিছু নবীর কবরের স্থান জানা যায়, তবে তাদের সময় কালে যেসব জন্তু, পাখ-পাখালী যথা- বিহঙ্গক‚লের অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল, তাতে তেমন পরিবর্তন ঘটেনি। সেগুলোকে আগেকার নবীগণের প্রতীক বা নিদর্শণ গণ্য করা হলে তা ভিন্ন বিষয়, এ প্রাকৃতিক সৃষ্টির অন্ত নেই।

পশুক‚লের মধ্যে অনেক পশু রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে কথা বলেছে, তাদের অভিযোগ পেশ করেছে এবং তাকে আল্লাহর প্রেরিত রাসূল বলে সাক্ষ্য দিয়েছে। এসব ঘটনাকে হুজুর (সা.)-এর মোজেযা বা অলৌকিক ঘটনাবলির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু কোনো পশু রাসূল (সা.)-এর প্রেমে আত্মদান করেছে বলে জানা যায় না।

অথচ, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উপহার হিসেবে প্রাপ্ত একটি ঘোড়া তাঁর খাদেম রূপে, তাঁর ফর্মাবরদারী বা নির্দেশাবলী পালন করেছিল বলেও উল্লেখিত হয়েছে। ‘ইয়াসুফ’ নামক ঘোড়াটি হুজুর (সা.)-এর প্রতি এতই আসক্ত ছিল যে, তাঁর ওফাতের ঘটনাটি এ রাসূল প্রেমিক পশু সহ্য করতে পারেনি, সে আত্মহত্যা করে রাসূল প্রেমের যে পরিচয় দিয়েছে বলে বর্ণিত হয়ে থাকে তা এক অস্বাভাবিক ঘটনা।

এ ঘটনার পাশাপাশি যখন মহানবী (সা.)-এর প্রতি মানবপ্রেমের বিষয়টি তুলনা করা হয়, তখন নবীদ্রোহিতার বিষয়গুলো সামনে এসে যায় এবং এ শ্রেণীর লোকেদের পশুর চেয়ে অধম বলতে দ্বিধা থাকে না। এ পশু শ্রেণীর লোক দুনিয়ার সর্বত্র বিদ্যমান, অহরহ দেখা যাচ্ছে, দুনিয়ার কোনো না কোনো স্থানে মহানবী (সা.)-এর কুৎসা রটানো, তাঁর প্রতি বিদ্রুপ করা, তাঁর পূতপবিত্র চরিত্রে কলংক লেপনের মতো ধৃষ্টতা এবং কার্টুন একে তাঁর অবমাননাকর আচরণ ইত্যাদি নানা অপকর্ম সাম্প্রতিক কালের জঘন্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে পরিণত হয়েছে।

মুসলমানদের মনে আঘাত দিয়ে তাদেরকে উত্তেজিত করার এ অপকৌশল থেমে নেই। আশেকে রাসূল ও নবী প্রেমিক মুসলমানগণ রাসূল (সা.) দ্রোহীগণের অপতৎপরতা সম্পর্কে সম্যক ওয়াকেফহাল। রসূল (সা.) প্রেমে সিক্ত ‘ইয়াসুফ’ ঘোড়ার আত্মত্যাগের ঘটনা তাদের সামনে। ‘ইয়াসুফ’-এর মতো পশু যেখানে রাসূল (সা.)-এর ওফাতের শোকে প্রাণ উৎসর্গ করতে পারে, সেখানে রাসূল (সা.)-এর অবমাননায় আশেকানে রাসূল (সা.) কি নিশ্চুপ থাকতে পারে?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Sagor Al Shamim ১ মার্চ, ২০২০, ৭:১৫ এএম says : 0
আমরা ছিলাম পথহারা, দিশেহারা। হেদায়াত ও সফলতার পথ সম্পর্কে ছিলাম অজ্ঞ। অতপর মহান রাব্বুল আলামীন হেদায়েতের বার্তা দিয়ে প্রেরণ করলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে। তিনি এসে আমাদেরকে সত্য-মিথ্যা চিনিয়েছেন। আমাদের নিকট সত্য দ্বীন নিয়ে এসেছেন। নাজাতের পথ দেখিয়েছেন। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের পন্থা শিখিয়েছেন।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ মোশাররফ ১ মার্চ, ২০২০, ৭:১৫ এএম says : 0
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমনিভাবে নবীগণের সর্দার তেমনিভাবে মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবেও তিনি সকলের চেয়ে মহান। তিনি এমন এক উৎকৃষ্ট সমাজ রেখে গেছেন, যার নজীর পৃথিবীর ইতিহাসে নেই।
Total Reply(0)
মরিয়ম বিবি ১ মার্চ, ২০২০, ৭:১৬ এএম says : 0
নবীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পরবর্তীরাও উৎকর্ষের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাতে পারে। কারণ তিনি সমাজ বিনির্মাণ করেছেন ওহীর ভিত্তিতে, যে ওহী মানব সভ্যতার প্রকৃত উৎকর্ষ নিশ্চিত করে। আর তাই এই উম্মতের জন্য তাঁকে মনোনীত করা উম্মতের প্রতি আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহ। তবে এই অনুগ্রহ থেকে তারাই মূলত উপকৃত হয়, যারা ঈমান আনে। তাই আয়াতে ব্যাপকভাবে উম্মতের বদলে শুধু মুমিনদের কথা বলা হয়েছে।
Total Reply(0)
কামাল রাহী ১ মার্চ, ২০২০, ৭:১৬ এএম says : 0
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জগতের সকলের প্রতি আল্লাহ পাকের রহমত। মুমিন-কাফির নির্বিশেষে সকল মাখলুকই কিয়ামত পর্যন্ত এই মহান রহমতের মাধ্যমে উপকৃত হতে থাকবে। মুমিনকে তো আল্লাহ তাআলা তাঁর মাধ্যমে হিদায়াত দান করেছেন। তাঁর উপর ঈমান আনা এবং তিনি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে যে পয়গাম নিয়ে এসেছেন সে অনুযায়ী আমল করার কারণে তাকে জান্নাত দেবেন। আর এই উম্মতের অবিশ্বাসীকে তাঁর কারণে পূর্ববর্তী উম্মতের অবিশ্বাসীর মতো নগদ শাস্তি দেবেন না। Ñতাফসীরে ত্ববারী ১৮/৫৫২
Total Reply(0)
মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ১ মার্চ, ২০২০, ৭:১৭ এএম says : 0
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন দয়া-মমতার সাগর। উম্মতের প্রতি ছিল তাঁর গভীর মায়া, সীমাহীন মমতা এবং তাদের কল্যাণ সাধনে ছিলেন সদা ব্যাকুল, ব্যতিব্যস্ত। তাদেরকে তিনি নিঃস্বার্থ ভালোবাসতেন। তিনি তাদের থেকে না এর কোনো প্রতিদান চাইতেন, আর না কৃতজ্ঞতা কামনা করতেন। চাইতেন শুধু তাদের নাজাত ও সফলতা। চাইতেন যেন উম্মত হেদায়েতের পথ হারিয়ে না ফেলে, আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো আযাব তাদেরকে আক্রান্ত না করে।
Total Reply(0)
সত্য হক ১ মার্চ, ২০২০, ৭:১৭ এএম says : 0
দেখুন, স্বার্থহীনতার কেমন আদর্শ ছিলেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। একদিকে অসহায় উম্মতের অভিভাবক তিনি। কিন্তু অপরদিকে তাদের বিত্ত বৈভবের দাবিদার নন। আর তাই তো অন্যত্র নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনÑ إِنّمَا أَنَا لَكُمْ مِثْلُ الْوَالِد. অর্থাৎ, আমি তোমাদের জন্য পিতৃতুল্য। Ñসহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ৮০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ১৪৩১
Total Reply(0)
Mohammed Kowaj Ali khan ১ মার্চ, ২০২০, ১০:১৯ এএম says : 0
নবীজীর অনূসরণ অনুকরণ মানব জীবনের একমাত্র স্বার্থকতা। ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)
Monjur Rashed ১ মার্চ, ২০২০, ১:১৪ পিএম says : 0
Ya Allah, Please provide us the ability for being true " Ashique - E- Rasul ( SM )"
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন