সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

রজব মাসের করণীয়

মুফতি আবু আব্দুল্লাহ | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

কোরআনে বর্ণিত সম্মানিত মাসগুলোর মধ্যে একটি মাস হলো, রজব মাস। আল্লাহ তায়ালার অসংখ্য গুণের একটি হলো বান্দার দোষত্রুটি ক্ষমা করা। তিনি গুনাহগার বান্দাকে বিভিন্ন উসিলায় ক্ষমা করেন। মহান আল্লাহ তায়ালা তার সৃষ্টির প্রতি অনুগ্রহ করে বিভিন্ন ক্ষণে বিশেষ ফজিলত ও বরকত রেখেছেন, আর সেই সব ক্ষণগুলোতে ইবাদতে অফুরন্ত প্রতিদান দেয়ার ঘোষণা করেছেন। এ কারণে, অন্য মাসের মতই রজব মাসেও বান্দাদেরকে ইবাদাতে উৎসাহদীপ্ত তৎপরতা দেখা যায়।
আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে পুরো আরবে বছরের মধ্যে চার মাস যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ থাকত। মহিমান্বিত রজব মাসে আরবে যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ ছিল। হজরত রাসূল সা. সঙ্গী-সাথীদের রজব মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

এই মাসে মুহাম্মাদ সা. মেরাজে গমন করেন। রজব মাসের একটি বিশেষ দিন হচ্ছে শবে মেরাজ। মেরাজ আরবী শব্দ যার বংলা অর্থ ঊর্ধ্বে গমন করা। মেরাজের ঘটনা সম্পর্কে কোরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘পবিত্র ওই মহান সত্তা যিনি রাত্রি বেলায় তাঁর বান্দাকে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করিয়েছেন, যার আশপাশকে আমি বরকতময় করেছি। এটা এজন্য যাতে আমি তাকে আমার নিদর্শনাবলি দেখাতে পারি।’ (সূরা বনী ইসরাইল: আয়াত ১)।

রজব মাসের করণীয়: আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত চারটি মাস, বিশেষ মর্যাদা এবং প্রভ‚ত সম্মানে ভ‚ষিত। যার অংশীদার রজবও। আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘হে মু’মিনগণ, আল্লাহর নিদর্শনসমূহ (নিষিদ্ধ বস্তু) হালাল মনে করো না এবং সম্মানিত মাসসমূহকে।’ (মায়েদা: আয়াত ২)।
অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার সংরক্ষিত, নিষিদ্ধ বস্তুসমূহ-যেগুলোকে তিনি সম্মান প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং অনাধিকার চর্চা হতে বারণ করেছেন, সেগুলোকে তোমরা হালাল মনে করো না। যার ভেতর ভ্রান্ত বিশ্বাস, নিষিদ্ধ-কাজ, উভয়ই অন্তর্ভুক্ত।

আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘এতে তোমরা নিজেদের ওপর অত্যাচার (ক্ষতিসাধন) করো না।’ (সূরা তাওবা : ৩৬)। অর্থাৎ, সম্মানিত মাস গুলোতে। যেহেতু আল্লাহ তাআলা এ মাস গুলোকে বিশেষ সম্মানে ভ‚ষিত করেছেন, তাই-এর সম্মান যথাযথ রক্ষা করা। এবং এর মর্যাদা ও পবিত্রতার লক্ষ্য করত: এতে কোনো গুনাহে লিপ্ত না হওয়া। তদুপরি জমানার পবিত্রতার কারণে, অপরাধ হয় জঘন্য ও মারাত্মক।
এ জন্যই আল্লাহ তাআলা উল্লিখিত আয়াতের মাধ্যমে নিজেদের ওপর জুলুম না করার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যথায় স্বীয় নফ্সের ওপর জুলুম করা বা অন্য কোনো গুনাহে জড়িত হওয়া, সব মাসেই হারাম ও নিষিদ্ধ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Joynal Abedin ৭ মার্চ, ২০২০, ১:৩৯ এএম says : 0
মুমিনের ইবাদতের কিছু বিশেষ মৌসুম রয়েছে। যে মৌসুমগুলোতে একজন মুমিন অল্প আমলেও অধিক সাওয়াবের অধিকারী হতে পারেন। তার মধ্য থেকে একটি অন্যতম মাস হলো রজব মাস।
Total Reply(0)
মরিয়ম বিবি ৭ মার্চ, ২০২০, ১:৩৯ এএম says : 0
মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় আসমানসমূহ ও জমিনের সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর বিধানে আল্লাহর কাছে গণনায় মাস ১২টি, তার মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস, এটাই প্রতিষ্ঠিত দ্বিন। কাজেই এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করো না।’ (সুরা : তাওবাহ, আয়াত : ৩৬)
Total Reply(0)
তোফাজ্জল হোসেন ৭ মার্চ, ২০২০, ১:৩৯ এএম says : 0
এখানে চারটি মাসকে বিশেষভাবে সম্মানিত করা হয়েছে। বিদায় হজের সময় মিনা প্রান্তরে প্রদত্ত খুতবায় রাসুল (সা.) সম্মানিত মাসগুলোকে চিহ্নিত করে বলেন, ‘তিনটি মাস হলো ধারাবাহিক—জিলকদ, জিলহজ ও মহররম, অন্যটি হলো রজব।’ (বুখারি, হাদিস : ৩১৯৭, মুসলিম, হাদিস : ১৬৭৯)
Total Reply(0)
সাইফুল ইসলাম চঞ্চল ৭ মার্চ, ২০২০, ১:৪০ এএম says : 0
মাসের সংখ্যা ১২টি। তার মধ্যে চারটি হচ্ছে—হারাম মাস। তিনটি পর পর জিলকদ, জিলহজ ও মহররম। আর হচ্ছে মুদার গোত্রের রজব মাস, যা জুমাদা আস-সানি ও শাবান মাসের মাঝখানে থাকে।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ৭ মার্চ, ২০২০, ১:৪০ এএম says : 0
রজব মাসে উপনীত হওয়ার পর থেকেই বেশি বেশি করে রমজান প্রাপ্তি ও রজব এবং শাবান মাসে বরকত লাভের দোয়া করতে বলা হয়েছে।
Total Reply(0)
কায়সার মুহম্মদ ফাহাদ ৭ মার্চ, ২০২০, ১:৪০ এএম says : 0
হজরত আনাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, যখন রজব মাস শুরু হতো, রাসুল (সা.) তখন এ দোয়াটি পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়াবাল্লিগনা রমাদান।’ অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত হায়াত বৃদ্ধি করে দিন।’ (আলমুজামুল আওসাত, হাদিস : ৩৯৩৯)
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন