সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

করোনা : খোদায়ী পরীক্ষা-০১

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

বিপদ-আপদ, রোগ-বালাই সবকিছু আল্লাহর পক্ষ হতে আপতিত হয়ে থাকে। মানুষের আল্লাহ দ্রোহিতা ও নাফরমানির কারণে আসমানি ও জমিনি বালা-মুসিবত এসে থাকে।

এগুলোকে বলা হয় আল্লাহর পরীক্ষা। মানুষের পাপাচারের কারণে আগেকার নবী-রসূলগণও নানা রকমের পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিলেন এবং আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করেন। উম্মতে মোহাম্মদীর ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলা কয়েক ক্ষেত্রে পরীক্ষার আগাম বার্তা দিয়েছেন এবং এগুলোতে উত্তীর্ণ হতে পারলে তাদের জন্য সুসংবাদও দিয়েছেন এবং এ সফলকামদেরকে ‘ছাবেরীন’ বা ধৈর্যশীল বলে আখ্যায়িত করেছেন। বিপদে যারা ধৈর্যশীল হয়ে আল্লাহর উপর পূর্ণ বিশ্বাস করে বিপদের মোকাবেলা করে, তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে পুরস্কার রয়েছে। এ সম্পর্কে কোরআনের সূরা বাকারা’য় বর্ণিত একটি আয়াতের আলোকে আমাদের পরবর্তী আলোচনা।

আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘এবং অবশ্যই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি এবং ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। আর সুসংবাদ দাও সবরকারীদের, যখন তারা বিপদে পতিত হয় তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তারই সান্নিধ্যে ফিরে যাব। (আয়াত: ১৫৫-১৫৬)। প্রথম আয়াতে যে পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে; (১) ভয়, (২) ক্ষুধা, (৩) মালের ক্ষতি, (৪) জানের ক্ষতি (প্রাণ হানি), (৫) ফল-ফসলের ক্ষতি। নিম্নে বিষয়গুলো আলাদা ভাবে দেখানো হলো:

ভয়ভীতি: প্রথম বিষয়টি ‘খওফ’ অর্থাৎ ভয়ভীতি, আতঙ্ক ইত্যাদি এ শব্দের অন্তর্ভুক্ত। পরীক্ষা করার অর্থ কিভাবে এ অবস্থা বা পরিস্থিতির মোকাবেলা করা যায়। ভয় বলতে বহু প্রকারের ভয়াতঙ্ক হতে পারে। ভয়ের যত প্রকারভেদ আছে, সবগুলোর দ্বারা একসঙ্গে পরীক্ষা করা আল্লাহর ‘আদত’ বা নিয়ম নয়। যে কোনো ধরনের ভয়ভীতির সঞ্চার করা কিংবা কিছু কিছুর দ্বারা পরীক্ষা করা।

আয়াতে যে ‘খওফ’ বা ভয়ের কথা বলা হয়েছে, কোরআনের ভাষ্যকারগণ-এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। হজরত ইবনে আব্বাস (রা:)-এর মতে ‘খওফ’ অর্থ শত্রুর ভয়। এ অর্থ অনুযায়ী মুসলমানদের জন্য শত্রুর ভয় সব সময়ই লেগে আছে। শত্রুতা বহু প্রকারের হতে পারে। শত্রুদের থেকে সাবধানে থাকার ব্যাপারেও নানা প্রকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। যেমন শত্রুর সাথে যুদ্ধ করতে হলে প্রস্তুতি আবশ্যক। হজরত ইবনে আব্বাস (রা:)-এর ব্যাখ্যাটি সুদূরপ্রসারী, অর্থবোধক ও তাৎপর্যময়। কেননা সে যুগে যেমন ইসলাম ও মুসলমানদের শত্রু কম ছিল না, তেমনি পরবর্তী কালেও যুগে যুগে এ শত্রুপক্ষ মুসলমানদের ক্ষতি সাধনে সর্বদা এবং সর্বত্র বিদ্যমান। ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যাবে যে, এ শত্রুরা কিভাবে ইসলাম ও মুসলমানদের সর্বনাশ করার তৎপরতায় লিপ্ত। তাই আল্লাহতাআলা মুসলমানদের সতর্ক করে দিয়েছেন। অনস্বীকার্য যে, ইসলামের ক্ষতি সাধনে মুসলমানদের শত্রুরা সর্বত্র সর্বদা ওঁৎ পেতে আছে, তাদের মধ্যে প্রকাশ্য শত্রু যেমন রয়েছে, খোদাদ্রোহী, মোনাফেক, মোশরেক, ছদ্মবেশী ইত্যাদি সব রকমের শত্রুই রয়েছে। তাদের ব্যাপারে মুসলমানদের সর্বদা সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বিষয়টি বিষদ ব্যাখ্যার দাবি রাখে, তবে এক কথায় বলা যায়: শত্রুভীতি আল্লাহর পক্ষ হতে একটি পরীক্ষা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Ziared Rahman ২৩ মার্চ, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 0
পরিস্কার পরিছন্নতা ঈমানের অঙ্গ, কুরআনে বলা আছে। ইসলাম ধর্ম এতো ছোট না যে কোথায় ঝুকি আছে সেই গুলা বলা নেই, ইসলাম হোল এমন এক ধর্ম যা মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কি করতে হবে তা শিক্ষা দেয়। ভাইরাসের কারণে মুল জিনিস হোল পরিস্কার থাকা আর পরিস্কার পরিছন্নতা ঈমানের অঙ্গ, নিরচয়ী পরিকাস্কার থাকলে এই ভাইরাসে আক্রমন করতে পারবেন না।
Total Reply(0)
Badsha Ahmed ২৩ মার্চ, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 0
করোনাভাইরাস খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে এই আশংকায় সৌদিআরব ওমরাহ্‌ বন্ধ রাখছে,ইরান জুম্মার নামাজ আদায়ের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করছে।সৌদিয়ান ও ইরানিরা যথেষ্ট ধার্মিক সেইসাথে বাস্তববাদীও।সেইজন্য করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে তারা কর্তৃপক্ষের আরোপিত যাবতীয় বিধিনিষেধ মেনে নিছে। সেইজায়গায় আমার দেশের মুমিনগণ হলে,কর্তৃপক্ষের এই নিষেধাজ্ঞাকে নিজেদের ইমানের উপর বড় পরীক্ষা মনে করত এবং কর্তৃপক্ষের আরোপিত সকল নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইমানরক্ষার পরীক্ষায় দারুনভাবে উত্তীর্ণ হতো।
Total Reply(0)
Jakaria Muhammad ২৩ মার্চ, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
মানুষ করোনাকে যে পরিমাণ ভয় করে তার ১০০ ভাগের ১ ভাগ যদি করোনার সৃষ্টিকর্তকে ভয় করতো তবে পৃথিবী শান্তিময় হয়ে যেত.
Total Reply(0)
Humayun Kabir ২৩ মার্চ, ২০২০, ১:২০ এএম says : 0
রোগটি দেশে উৎপাদিত নয়,,, বিদেশ থেকে আগত,,, তাই যত সর্তকতা অবলম্বন করা দরকার তা হলো বিদেশ থেকে আগতদের প্রতি করা উচিত
Total Reply(0)
Murad Hasan ২৩ মার্চ, ২০২০, ১:২০ এএম says : 0
ঈমানদারগন আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। সবাই শহীদ হবে!
Total Reply(0)
Saifullah Sadi ২৩ মার্চ, ২০২০, ১:২০ এএম says : 0
ঈমানদারের আকাঙ্ক্ষা সেজদা অবস্থায় তেলাওয়াত, মসজিদে থাকা অবস্থায়, মসজিদে যাওয়ার পথে, আল্লাহর রাস্তায় থাকা অবস্থায়, মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষা সকল ঈমানদাররা সবসময় করে। মৃত্যুর ভয়ে ঈমানদার আল্লাহর হুকুম লংঘন করতে পারেনা। বরং আল্লাহর হুকুম পালন অবস্থায় মৃত্যুবরণ ঈমানদারদের অহংকার এর বিষয়।
Total Reply(0)
Mohammed Kowaj Ali khan ২৩ মার্চ, ২০২০, ৪:৫৩ এএম says : 0
খোদায়ী পরীক্ষা না বলে, আল্লাহ তা'আলার পরীক্ষা বলুন। ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)
Md Azadul Islam ২৫ মার্চ, ২০২০, ২:২৯ পিএম says : 0
করোনা ভাইরাসকে মানুষ যেমন ভয় করছে, আল্লাহকে যদি ঠিক সেইভাবে ভয় করত তবে এই ভাইরাস পৃথিবীতে আসতো না।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন