সম্পদহানি: আল্লাহর পরীক্ষার তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে ‘নকছুন মিনাল আমওয়াল’ তথা সম্পদহানির পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় মুসলমানদের মাল-সম্পদ, ধন-দৌলত বিনষ্ট করার কথা বলা হয়েছে। এ সম্পদহানির বহু দিক রয়েছে, যেমন- অগ্নিকান্ডে সম্পদ পুড়ে যাওয়া, দাবানলে মাইলের পর মাইল ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া, প্লাবন, বন্যা, গরকি এবং লবণাক্ততা ইত্যাদিতে সম্পদের হানি হওয়া, অতিবর্ষণ, শিলাবৃষ্টি, অগ্নিবৃষ্টিতে ফসল বিনষ্ট হওয়া, ক্ষেতে পোকা লাগা, পঙ্গপালের আক্রমণ, খরা ইত্যাদি দ্বারা ফসলের ক্ষতি হওয়া- এ সবই খোদায়ী পরীক্ষা, যার প্রতি মুসলমানদের বিশ্বাস থাকতে হবে।
সম্পদহানির প্রাচীন একটি কাহিনী পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে। ‘সদ্দে মারেব’ বা মাব বাধের ধ্বংস লীলা সাধন করেছিল ক্ষুদ্র প্রাণী ইঁদুর। এ ইঁদুর দুনিয়াময় যেভাবে সম্পদহানি করে থাকে, তার সঠিক পরিসংখ্যান কারো কাছে নেই। ইঁদুর আল্লাহর পক্ষ হতে জগতের সর্বত্র বিদ্যমান।
তাছাড়া মাটি হতে জন্মলাভ করা উই পোকা নামক একটি কীট যেভাবে বই-পুস্তক, কাগজ-পত্র, কাপড়-চোপড় এবং কাঠ ও কাঠের জিনিসপত্র ধ্বংস করে থাকে, তা কারো অজানা নয়। পঙ্গপালের আক্রমণে ক্ষেত, ফসল ধ্বংস হওয়ার ঘটনাবলীর কোনো শেষ নেই। ভ‚মিকম্প, ভ‚মিধ্বস, পাহাড়ধ্বস ইত্যাদি খোদায়ী পরীক্ষারই নিদর্শন স্বরূপ।
কোরআনের বর্ণিত আয়াতে সম্পদহানির জন্য একটি মাত্র বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে, যার কথা পূর্বেই বলা হয়েছে। এ খোদায়ী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে বৈষয়িক উপায় তদবির তথা প্রতিকার ব্যবস্থা মানুষের আয়ত্ব করে দেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি মুসলমানদের জন্য এমন কিছু উপায় ও তদবীর বলে দেয়া হয়েছে, যা কোরআন ও হাদীস চর্চার মাধ্যমে জানা যায় এবং সে মতে আমল করলে অনেক ক্ষতির হাত হতে রক্ষা পাওয়া যায়। আমরা এখানে পরীক্ষিত বিভিন্ন দোয়ার কথাই বলছি।
কীট-পতঙ্গ, পঙ্গপাল ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহতাআলা আরো কত প্রকারের পরীক্ষা করতে পারেন এবং করে থাকেন তা কেউ বলতে পারে না। এসব পরীক্ষা হতে মানুষের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত এবং তাঁর অসীম কুদরতের কথা স্মরণ করে তারই আনুগত্য করার শিক্ষা নিহিত রয়েছে এসব ঘটনায়।
সম্পদহানির অজস্র প্রকারের ঘটনা নির্ণয় করতে গেলে তা শেষ করা যাবে না। তাই উপরে আমরা তার সামান্য উদাহরণ তুলে ধরেছি। আল্লাহর পক্ষ হতে এটিও পরীক্ষা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন