বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতি মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেই আজ মুক্তি পেতে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দেশ ও দলের নেতাকর্মীদের প্রিয় নেত্রীর মুক্তিতে তারা আবেগে-আপ্লুত থাকবেন বলে মনে করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় সকলকে তাদের আবেগ সংবরণ করে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। দেশনেত্রীসহ সকলের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল ও গুলশান-২ নাম্বারে বেগম জিয়ার বাসার সামনে নেতাকর্মীদের ভিড় না করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এই আহŸান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশেনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার তাঁর মুক্তির জন্য আবেদন করেছিল সরকারের কাছে। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার উপধারা ১-এ বেগম খালেদা জিয়ার সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করছে।
তবে শর্ত দেয়া হয়েছে- তাঁকে ঢাকাস্থ নিজ বাসায় থেকে তাঁর চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে, বিদেশে যেতে পারবেন না। এটা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়, কারণ আবেদন যেটা করা হয়েছিল উন্নত চিকিৎসার জন্য। যাহোক তারপরও এতোকাল পরে দেশনেত্রীকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এতে দেশের মানুষ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা আজকে স্বস্তিবোধ করছে। যদিও জামিন তার আইনগত ও সাংবিধানিক প্রাপ্য ছিল।
বাংলাদেশের সমগ্র জনগণ ও নেতাকর্মীদের কাছে আহŸান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য। তার সাময়িক মুক্তিতে অনেকে আবেগ-আপ্লুত হবেন, তাকে একনজর দেখার জন্য তাঁর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। কিন্তু আজকে সমস্ত বিশ্বে প্রাণঘাতি মহাকারী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এতে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। সমগ্র বিশ্বে এটা একটা ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করেছে। এই অবস্থায় আমাদের দেশনেত্রী বের হয়ে আসলে আমাদের নেতাকর্মীরা আবেগে কাছে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। আমরা উনার স্বাস্থ্য এবং সকলের স্বাস্থ্যের জন্য শান্ত থাকতে বলেছি। পিজি (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে সামনে যেনো জমায়েত না হয় সেজন্য নেতাকর্মীদের অনুরোধ করছি। কারণ বার বার করে বলা হচ্ছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করার প্রধান মাধ্যম হলো নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা। এজন্য এ বিষয়টাকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের নেতাকর্মীরা যেনো তাদের আবেককে প্রকাশ করতে গিয়ে এমনটি না করেন। দয়া করে পিজি হাসপাতালের সামনে এবং ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) বাড়ির সামনে কেউ ভিড় করবেন না।
এতে উনার এবং প্রত্যেকের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ বেগম জিয়ার ৭৫ বছর বয়স এবং অ্যাজমার সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যাটি করোনাভাইরাসের জন্য মারাত্মক সমস্যা। তার মুক্তিতে সকলে স্বস্তি পেয়েছেন এখন দায়িত্বশীল হতে হবে। দায়িত্বশীল হয়ে ভিড় এড়াতে হবে।
লন্ডন থেকে স্কাইপেতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বৈঠকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নাল আবেদীন, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য প্রফেসর আব্দুল কুদ্দুসও উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন