বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

ঈমানদার কখনো আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় না

মাওলানা শিব্বির আহমাদ | প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫১ পিএম

দুনিয়ার এ জীবনে বিপদ আসেই। নানান সময় নানান দিক থেকে বিপদ এসে হামলে পড়ে আমাদের ওপর। অর্থসম্পদ, সন্তানাদি, সম্মান-মর্যাদা আক্রান্ত হয় সব কিছুই। দুনিয়ার জীবনে এ বিপদের মুখে পড়ার কথা অবশ্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে- ‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব সামান্য ভয় ও ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফসলের কিছুটা ক্ষতি দিয়ে।’ আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও- যাদের ওপর কোনো মুসিবত এলে বলে- ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। অর্থাৎ নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর আর অবশ্যই আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাব।’ (সূরা বাকারা : ১৫৫-১৫৬)।
বোঝা গেল, বিপদ আসবেই। বিপদের মুহূর্তে কী করতে হবে সেই নির্দেশনাও দেয়া আছে এ আয়াতে। কিন্তু বিপদ যখন কিছুটা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তা কেটে যাওয়ার মতো কোনো স্বাভাবিক সম্ভাবনা যখন মানুষের সামনে থাকে না, তখন আঘাত হানে হতাশা। হতাশা তাকে আল্লাহর রহমতের কথা ভুলিয়ে দিতে চায়।

আল্লাহর কুদরত থেকে তার দৃষ্টিকে সরিয়ে দিতে চায়। আল্লাহর সীমাহীন অনুগ্রহ এবং দয়াকে আড়াল করে দিতে চায়। অথচ পবিত্র কোরআনের ভাষ্য মতে, ‘মুমিন কখনোই হতাশ হতে পারে না। কোরআনে বর্ণিত ঘটনা। হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম যখন বার্ধক্যে উপনীত, আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে একদল ফেরেশতা এসে তখন তাঁকে এক জ্ঞানী পুত্রের সুসংবাদ শোনাল।

বিস্ময়ভরা কণ্ঠে হযরত ইবরাহিম (আ.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমাকে তো বার্ধক্য পেয়ে বসেছে, এরপরও তোমরা আমাকে এ সুসংবাদ দিচ্ছ?! কিসের ভিত্তিতে তোমরা এ সুসংবাদ দিচ্ছ? ফেরেশতারা বলল, আমরা তো সত্য কথাই বলছি। আপনাকে সত্য সুসংবাদই দিচ্ছি। বার্ধক্য আপনাকে স্পর্শ করেছে করুক, এ বৃদ্ধ বয়সেই আপনার সন্তান হবে। আপনি নিরাশদের দলে যাবেন না। হযরত ইবরাহিম (আ.) তাদের কথার জবাবে বললেন, পথভ্রষ্টরা ছাড়া আর কে আপন প্রতিপালকের রহমত থেকে নিরাশ হতে পারে?’ (সূরা হিজর, ৫৩-৫৬ নং আয়াত দ্রষ্টব্য)।
আরেকজন নবীর আরেকটি ঘটনা। হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালামের সর্বাধিক প্রিয় সন্তান ছিলেন হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম। কিন্তু তাঁর ভাইয়েরা বাবার এই আদরকে সহজে মেনে নিতে পারেনি, তাই কৌশলে তাঁকে একদিন বাবার কাছ থেকে নিয়ে গিয়ে ক‚পে ফেলে দিলো। আল্লাহর অসীম কুদরতে ক‚প থেকে উঠে এসে একদিন তিনি মিসরের ধনভান্ডারের দায়িত্বশীল হলেন।

আর যে ভাইয়েরা তাঁকে নিয়ে চক্রান্ত করেছিল, দুর্ভিক্ষের শিকার হয়ে তারা খাবার আনতে হাজির হলো তাঁর কাছে। এরপর এক কৌশলে তিনি তাঁর সহোদর বিনইয়ামীনকে নিজের সঙ্গে রেখে দিলেন।

দুই ছেলে হারিয়ে বাবা হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম অন্য ছেলেদের বললেন, (তরজমা) ‘হে আমার ছেলেরা! তোমরা যাও, ইউসুফ ও তার ভাইয়ের সন্ধান করো। তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চিত জেনে রেখ, আল্লাহর রহমত থেকে তো কাফের ছাড়া অন্য কেউ নিরাশ হতে পারে না।’ (সূরা ইউসুফ : ৮৭)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
মশিউর ইসলাম ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৪ এএম says : 0
আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল; তিনি ক্ষমা করাকে ভালোবাসেন। মানুষের কামণা আল্লাহ তাআলা তাদের জীবনে সব গোনাহ মাফ করে দিবেন। হাদিসে আরো এসেছে, ‘বান্দা তাঁর (আল্লাহর) সম্পর্কে যেমন ধারণা করে, তিনি তেমন।’
Total Reply(0)
কল্যাণমূলক চেতনা ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৫ এএম says : 0
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জীবনে সব গোনাহ থেকে মুক্তি পেতে তাওবা করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর রহমত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
Total Reply(0)
মরিয়ম বিবি ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৫ এএম says : 0
ইসলাম ও ঈমান মানুষের আশা আকাংখাকে উৎসাহিত করে, পক্ষান্তরে হতাশা বা নিরাশাকে, করে নিরুৎসাহিত।
Total Reply(0)
তোফাজ্জল হোসেন ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৫ এএম says : 0
প্রকৃতপক্ষে যিনি আল্লাহকে প্রভু, রাসূলকে (সা.) অনুসরণীয় অনুকরণীয় নেতা ও ইসলামকে দ্বীন বা জীবনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করেছে তার কি কোনো হতাশা থাকতে পারে? না, কখনো না, হতাশা-নিরাশা তাকে স্পর্শ করতে পারে না।
Total Reply(0)
জোহেব শাহরিয়ার ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৬ এএম says : 0
হতাশা বা নিরাশার কারণ- আমরা যদি একটু মনোযোগসহ লক্ষ্য করি তাহলে দেখতে পাব আমাদের প্রত্যেকের জীবনে কিছু না কিছু এমন ঘটনা রয়েছে বা আমাদরে কম-বেশি হতাশায় ভোগায়।
Total Reply(0)
শওকত আকবর ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১০:০৬ এএম says : 0
ইংশাআল্লাহ।এ মহামারী কেটে যাবে। আমার মৃর্ত যদি লেখা থাকে করোনা ভাইরাসে,কেউ তা খন্ডন করতে পারবেনা।আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া যাবেনা।মাহে রমজান আমাদের জন্য বরকতময় ।এ মাসেই আল্লাহ রহমত দান করবেন।ইংশআল্লাহ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন