সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

রোজা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যম

মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০২ এএম

বান্দার শোকর ও কৃতজ্ঞতা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের বড় পছন্দ। তিনি চান বান্দা প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর শোকর আদায় করুক, যাতে তিনি নেয়ামত-অনুগ্রহে তাকে ভরিয়ে দিতে পারেন এবং যা দিয়েছেন, বাড়তি দান দ্বারা তাকে পরিপূর্ণ করে তুলতে পারেন। যত শোকর ততোধিক দান- এটাই তাঁর বিধান। তিনি এর নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন, তুমি যদি শোকর আদায় করো, আমি তোমাকে আরো বেশি দেবো। শোকরগোজার হওয়ার জন্য এটা এক ঐশী প্রণোদনা।

এ রকম অনুপ্রেরণাদায়ী আয়াত কোরআন মাজীদের পাতায় পাতায় চোখে পড়ে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসও আছে প্রচুর। জ্ঞানবান ও বুদ্ধিমানের জন্য তাতে শোকরগোজারের যথেষ্ট সবক রয়েছে। কিন্তু দয়াময় আল্লাহ বান্দাকে তো জানেন। আলস্য ও উদাসীনতা তার মজ্জায় মেশানো। বড় আনমনা। মনের সংযোগ ছাড়া তো সবক হাসিল হয় না। তাই মনোযোগ সৃষ্টির জন্য চোখের সামনে খুলে দিয়েছেন নানা দৃশ্যপট, যা দেখলেই মনে কৃতজ্ঞতা জাগার কথা।

প্রতিটি মানুষের সামনেই এমন কত দৃশ্যই না বিরাজ করে, যা তার বহুবিধ সম্পন্নতা স্মরণ করিয়ে দেয়, যেন বলে দেয়-আহা, চেয়ে দেখো তোমার কত আছে! শিক্ষানবিস মন ঠিকই তা থেকে সবক গ্রহণ করে। সে কৃতজ্ঞতায় আনত হয়ে বলে ওঠে- রাব্বুল আলামিনের শিক্ষা কারিকুলাম বড় বিচিত্র এবং তা অতি পূর্ণাঙ্গ। তিনি ছবির সাহায্যে শিক্ষা দিয়েই ক্ষান্ত হননি। তিনি বান্দাকে হাতে-কলমেও শোকরের তালিম দিয়েছেন। বাস্তব প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শোকরগোজার রূপে গড়ে তোলার ব্যবস্থা করেছেন।

দৈনন্দিন জীবনের ঘটনাপ্রবাহ ও বয়ে চলা জিন্দেগির চড়াই-উতড়াইয়ের প্রতি লক্ষ করুন না, একি কেবলই প্রাকৃতিক আয়ু পূরণের চলমানতা? এর ভেতর কি কোনো পরিকল্পিত নির্মাণ নেই? এ কালক্ষয় নয়, নাকি কোনো পূর্ণতা বিধানের সুব্যবস্থিত প্রক্রিয়া? আচরিত জীবনে বান্দা যত অবস্থার সম্মুখীন হয়, তার প্রতিটি দ্বারাই মহান আল্লাহ মূলত বান্দাকে তাঁর সত্যিকারের বান্দারূপে গড়ে তোলার বাস্তব প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।

বান্দা যদি তাতে নিজ ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করে, তবে এ প্রশিক্ষণের সুফল সে পাবেই। ওই ইচ্ছাশক্তির প্রয়োগটুকু তার দরকার, যেহেতু সে জড় নয়, বুদ্ধিমান জীব। বান্দা ইচ্ছা করলে তার প্রতিটি হাল থেকেই নিজেকে কৃতজ্ঞরূপে গড়ে তোলার প্রশিক্ষণ নিতে পারে। কিন্তু পার্থিব জীবনে মোহাচ্ছন্ন মানুষ বড় স্থ‚লদর্শী।

আপাতদৃষ্টির সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে সে নিজেকে আরো বিস্তার ও আরো গভীরে নিয়ে যেতে পারে না বা নিয়ে যেতে চায় না। ফলে সে কুদরতি প্রশিক্ষণের সুফল ভোগ থেকে বঞ্চিত থেকে যায়। কিন্তু সে কি চিরবঞ্চিতই থেকে যাবে? দয়াময় আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা সে রকম নয়। তিনি দিতেই চান।

সুতরাং পরবর্তী ধাপরূপে তিনি বাধ্যতামূলক কিছু কর্মসূচি দিয়েছেন, যা পালন করলে মানুষ বাস্তবিক শোকরগোজার বান্দা হয়ে উঠতে পারে। সেই কর্মসূচির অন্যতম প্রধান অঙ্গ রমজানের রোজা।

রোজার অপর নাম সবর। রোজায় সবরের প্রশিক্ষণ হয় সরাসরি এবং তা অতি স্পষ্ট। কিন্তু এতে যে শোকরেরও সবক এবং প্রশিক্ষণ রয়েছে, সেদিকে নজর কমই যায়। অথচ এ প্রশিক্ষণও অস্পষ্ট নয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
NAdim Ahmed ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ১:২৯ এএম says : 0
রোজা শুধু আল্লাহর জন্য। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিজের সঙ্গে রোজার সম্পর্ক ঘোষণা করেছেন। এমনিভাবে তিনি সব ইবাদত-বন্দেগি থেকে রোজাকে আলাদা মর্যাদা দিয়েছেন।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩০ এএম says : 0
রোজার এত মর্যাদার কারণ কী, তা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ভালো জানেন। তবে আমরা যা দেখি তা হলো, রোজা এমন একটি আমল, যাতে লোকদেখানো ভাব থাকে না। এটি বান্দা ও আল্লাহর মধ্যকার একটি অতি গোপন বিষয়।
Total Reply(0)
নাঈম বি এস এল ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩০ এএম says : 0
নামাজ, হজ, জাকাতসহ অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগি কে সম্পাদন করল তা দেখা যায়। পরিত্যাগ করলেও বোঝা যায়। কিন্তু রোজার ক্ষেত্রে লোকদেখানো বা শোনানোর সুযোগ থাকে না। ফলে রোজার মধ্যে ইখলাস, আন্তরিকতা বা আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠতা নির্ভেজাল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
Total Reply(0)
হৃদয়ের ভালোবাসা ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩০ এএম says : 0
হাদিসে এসেছে, 'রোজা হলো ঢাল ও জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার মজবুত দুর্গ। ' (মুসনাদে আহমদ-৯২১৪)
Total Reply(0)
কায়সার মুহম্মদ ফাহাদ ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩১ এএম says : 0
রোজার হিকমত, লক্ষ্য ও উপকারিতা ১. তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জন। ২. শয়তান ও কুপ্রবৃত্তির ক্ষমতা দুর্বল করা। ৩. রোজা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ ও তাঁর দাসত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। ৪. ইমানকে দৃঢ় করা, মোরাকাবা ও আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করার সুন্দর পন্থা। ৫. ধৈর্য, সবর ও দৃঢ় সংকল্প সৃষ্টির মাধ্যম। ৬. নিজেকে আখিরাতমুখী করার অনুশীলন। ৭. আল্লাহর অনুগ্রহের প্রতি শুকরিয়া ও সৃষ্ট জীবের সেবা করার দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেয়। ৮. জাগতিকভাবে শারীরিক শক্তি ও সুস্থতা অর্জনের উত্তম উপায়।
Total Reply(0)
Mohammad Sirajullah, M.D. ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ৮:৪৪ পিএম says : 0
We face this question everyday and can not answer with our very limited knowledge of Islam. Question is what will happen to millions of people who did not hear about Prophet Muhammad (SA) and his prophethood. Even in Bangladesh people did not hear about the prophethood of Muhammad (SA) until 600 years after his death. What would happen to these fore fathers of ours. They lived in the period of Muhammad (SA) ‘s Nobuyat but did not hear his name even. Same is true for the millions of people who lived in American Continents. Next question comes the Bush men in Andaman, Australia, Newzealand and Amazon (They stay naked) who were not visited by any body from Tabligee Jamat. Will they go to heaven ? or get burnt in Hell. Also What will happen to Hijras. Will any body with better religious knowledge please write an article on this subject for our education. Islam says education is mandatory for all the Muslims and Muslimas.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন