শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রক্তাক্ত দুই কিশোরীকে ধর্ষণের পর চারজনকেই গলা কেটে হত্যা

ধর্ষণ মামলায় ৯ মাস জেল খাটে সম্প্রতি জামিন পায় পারভেজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০৩ এএম

ধারালো বটি দিয়ে গৃহবধূ ও তার কিশোরী কন্যাসহ চারজনকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করার পর দুই কিশোরীকে ধর্ষণ করে ঘাতক পারভেজ। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের পর একে এক চারজনকেই গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে সে। এর আগেও এই ঘাতক এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছিল বলে অভিযোগে জানা গেছে। গাজীপুরের চাঞ্চল্যকর প্রবাসি কাজলের স্ত্রী ও তার তিন সন্তান খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত পারভেজের আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তমুলক জবানবন্দিতে বেরিয়ে এসেছে চার খুনের রোমহর্ষক বর্ণনা।

মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার আবদার গ্রামের একটি দোতলা বাড়িতে। গত বৃহস্পতিবার ২৩ এপ্রিল ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলার কক্ষ থেকে একই পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এই চারজন হলেন ফাতেমা আক্তার (৪০), তার বড় মেয়ে সাবরিনা নূরা (১৬), ছোট মেয়ে মোছা. শাওরিন (১২) ও ছোট ছেলে ফাদিল সামদানি (৮)।

স্বীকারোক্তমুলক জবানবন্দিতে সে বলেছে, মুঠোফোন চুরি করতে রাতের আঁধারে ওই বাড়িতে ঢুকেছিল। তারপর একে একে কুপিয়েছে বাড়ির চার বাসিন্দাকে। রক্তাক্ত অবস্থায় ধর্ষণ করেছে দুই কিশোরীকে। এই নির্মমতা থেকে রেহাই পায়নি আট বছরের প্রতিবন্ধী শিশুও। পিবিআই এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিমা সুলতানা দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ঘটনার পর থেকে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করা নিহত শিশুদের বাবা রেজোয়ান হোসেন কাজলের সঙ্গে তারা নিয়মিত যোগাযোগ করছিলেন। আর রেজোয়ানের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই পিবিআই গত সোমবার তাকে গ্রেফতারের জিজ্ঞাসাবাদ করে।

তিনি আরো বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে পারভেজ (১৭) পুলিশকে জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৪০ মিনিটে সে ওই বাড়ির পাশে যায়। এরপর বাড়ির ওয়ালে বের হয়ে থাকা ইটে পাড়া দিয়ে দোতলার ছাদে ওঠে। পরে বেøড দিয়ে ছাদে কাপড় শুকানোর রশি কেটে ছাদের একটি গ্রিলের সঙ্গে বাঁধে। পরে ওই রশি বেয়ে দোতলার বাথরুমের ভেন্টিলেটরের ফাঁকা জায়গা দিয়ে ভেতরে ঢোকে। বাথরুমে রাখা ওয়াশিং মেশিনের ওপর পা রেখে সে নিচে নামে। পরে দুই কিশোরী নূরা ও শাওরিনের কক্ষে যায়।

তখনও নূরা জেগে থাকায় ঘাতক খাটের নিচে লুকিয়ে পড়ে। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা লুকিয়ে থাকার পর সবাই ঘুমিয়ে পড়লে সে খাটের নিচ থেকে বের হয়। এসময় সে নিচতলায় গিয়ে গৃহবধূ স্মৃতি ফাতেমার রুমে দরজা খোলার চেষ্টা করে। এসময় ফাতেমা ভেতর থেকে দরজা খুলে বের হলে ঘাতক দরজার পেছনে গিয়ে লুকায়। কিন্তু গৃহবধূ কাউকে দেখতে না পেয়ে পুনরায় রুমে ঢোকার সময় বটি দিয়ে তার মাথা ও ঘাড়ে আঘাত করে ঘাতক।

এতে গৃহবধূ ফাতেমা অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এই শব্দ পেয়ে নূরা ঘুম থেকে জেগে তার কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসে। তখন কিশোরীকেও এলোপাতাড়ি কোপায় সে। এরপর জেগে ওঠে নূরার প্রতিবন্ধী ভাই ফাদিল। সে ঘরের এদিক-সেদিক দৌড়াদৌড়ি করছিল। তাকেও কুপিয়ে হত্যা করে। ঠিক তখন শাওরিনের ঘুম ভেঙে গেলে সে চিৎকার করে ওঠে। ঘাতক পারভেজ তাকেও বটি দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। এরপর দুই বোনকে রক্তাক্ত অবস্থায় ধর্ষণ করে।

আর ধর্ষণের পর ছুরি দিয়ে সবাইকে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে পারভেজ। ফাতেমা আক্তারের গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন, দুটি কানের দুল, একটি কানফুল, একটি নাকফুল এবং দুই বোনের আলমারি খুলে দুটি স্বর্ণের চেইন, একটি আংটি, একটি লাল রঙের ডায়েরি নিয়ে নেয়। আর ফাতেমার ঘর থেকে দুটি মুঠোফোন নিয়ে সে হাতমুখ ধুয়ে ফেলে। এরপর বাড়ির পেছনের গেট খুলে ফজরের আজানের সময় তার বাড়িতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
সূত্র জানায়, ঘাতক বাড়িটিতে পাঁচ ঘণ্টা অবস্থান করে। গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার বাড়ির আলনায় অন্যান্য কাপড়ের সঙ্গে রাখা তার রক্তমাখা গেঞ্জি উদ্ধার করে পিবিআই। আর লুট করা স্বর্ণের গহনা ও দুটি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে।

পিবিআইয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, এই কিশোরের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় হওয়া মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রও দেয়া হয়েছে। ৯ মাস জেল খাটার পর কিছুদিন আগে সে জামিনে ছাড়া পেয়েছে। গ্রেফতারকৃত পারভেজ স্থানীয় একটি মক্তবে পড়ত। তার বাবা রিকশাচালক। সে দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (15)
ইলিয়াস ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫৭ এএম says : 0
সময় ক্ষেপণ না করে একে প্রকাশ্যে মৃত্যুদন্ড দেয়া হোক
Total Reply(0)
Najmul Hosan Arafat ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ২:১১ এএম says : 0
আমার কাছে ব্যাপক সন্দেহ লাগছে, এর পিছনে কোন পেশাদার খুনি জড়িত নয় কি, একা চারজনকে হত্যা ও দুজনকে ধর্ষণ, কোন মতেই সম্ভব না, কাউকে আড়াল করার চেষ্টা নয়তো, এত বড় অপরাধ থেকে, এটি আমার প্রশ্ন?
Total Reply(0)
Ekramul Karim ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ২:১২ এএম says : 0
ওর জীবন্ত অব্যস্থায় শরীর থেকে প্রত্তেকটা অঙ্গ ছিড়ে পেলা উচিৎ তাহলে চারটি জীবনের আত্বা কিছুটা সস্তিপেতো।
Total Reply(0)
Md Abdul Alim Bappi ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ২:১২ এএম says : 0
বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে একটি ছোট্ট বাচ্চা এই ধরনের কাজ করতে পারে!
Total Reply(0)
টয়া ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ২:১৩ এএম says : 0
অপরাধী নিজের মুখে তার অপরাধ স্বীকার করেছে তাই তাদেরকে যত দ্রুত সম্ভব তাদেরকে ফাঁসি দেয়া হক জাতি তাদের ফাঁসি দেখে সব অপরাধীরা কেঁপে ওঠে এবং পরবর্তীতে যাতে এই রকম কোনো অঘটন ঘটাতে না পারে।
Total Reply(0)
Enamul Kabir ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ২:১৪ এএম says : 0
মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে,, এর দ্রুত বিচার প্রার্থনা করছি,,
Total Reply(0)
Fuzlul Bari ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ২:১৪ এএম says : 0
আমাদের শক্ত প্রমান থাকার পরেও আসামীরা জামিন এবং পযায়ক্রমে খালাস পায় বিধায় অপরাধ কমছে না।
Total Reply(0)
Md Jewel ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ২:১৫ এএম says : 0
খুনের পিছনে কারা জড়িত প্রত্যেকে বের করা উচিত। একার পক্ষে কখনই চারজনকে খুন করা সম্ভব নয় তাও আবার সাথে ধর্ষণ।
Total Reply(0)
Hafij morad ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ৪:৩২ এএম says : 0
শুধু চারজন, তারমধ্যে একজন বয়ষ্ক মহিলা যাকে প্রথম আঘাত করা হয়েছে, একজন জেল খাটা আসামি এটা করতেই পারে। ইসলামে একটা ছেলে চৌদ্দ বছরে বালেগ গণ্য হতে পারে, করতো সতেরো বছর, ওকে স্টেডিয়ামে এনে পাথর মেরে লাইভ দেখানো উচিত।
Total Reply(0)
আবু মুহাম্মদ বরকতুল্লাহ বুখারী ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ৫:১৪ এএম says : 0
আমাদের দেশে আইনের ফাঁক ফোকরে অপরাধীরা ছাড়া পাওয়ার কারণে এমন অপরাধ বারবার সংঘটিত হয়
Total Reply(0)
মোঃআলী হোসেন ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ৮:০৭ এএম says : 0
এই ধরনের খুনীদের ফাঁসিহওয়া দরকার এবং আমাদের দেশের বিচার ব্যাবস্থা আরো ভালো হওয়াদরকার খুনীদের জামিন হয় কি ভাবে?
Total Reply(0)
ash ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ৮:৩২ এএম says : 0
AMI BUJI NA KHUNER ASHAMI R 9 MASH PORE KI VABE JAMIN PAY ?? AKHON JE 4 JON KE KHUN KORLOOO , ER JONNY KI PROSHASHON DAI E NOY??? OKE 18 SHALE JAMIN DEWA HOESILO KENO????
Total Reply(0)
শাহাদাত হোসেন ১ মে, ২০২০, ২:৩৭ এএম says : 0
আমার মতে ওকে ফাসি দিলে বেপারটা হালকা হয়ে যায়, ওকে জন সম্মুকে সারা শরীরের চামড়া তুলে লবন দিয়ে মৃতু নিশ্চিত হওয়ার আগপর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখা জোক।
Total Reply(0)
শাহাদাত হোসেন ১ মে, ২০২০, ২:৩৭ এএম says : 0
আমার মতে ওকে ফাসি দিলে বেপারটা হালকা হয়ে যায়, ওকে জন সম্মুকে সারা শরীরের চামড়া তুলে লবন দিয়ে মৃতু নিশ্চিত হওয়ার আগপর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখা জোক।
Total Reply(0)
শাহাদাত হোসেন ১ মে, ২০২০, ২:৩৮ এএম says : 0
আমার মতে ওকে ফাসি দিলে বেপারটা হালকা হয়ে যায়, ওকে জন সম্মুকে সারা শরীরের চামড়া তুলে লবন দিয়ে মৃতু নিশ্চিত হওয়ার আগপর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখা জোক।
Total Reply(1)
mohammad Tareq ২ মে, ২০২০, ৭:০৭ পিএম says : 0
I think he should be killed right away.

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন