সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

এই রমজান মাসেও হতভাগা কে?

মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ | প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০২০, ১২:০২ এএম | আপডেট : ১২:০৫ এএম, ১১ মে, ২০২০

হযরত কা’ব ইবনে উজরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের বললেন, তোমরা মিম্বরের কাছে সমবেত হও। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিম্বরে আরোহণ করলেন।

মিম্বরে আরোহণের সময় প্রথম সিঁড়িতে যখন পা রাখলেন তখন বললেন, আমিন। দ্বিতীয় সিঁড়িতে যখন পা রাখলেন তখন বললেন, আমিন। এভাবে তৃতীয় সিঁড়িতে পা রেখেও বললেন, আমিন। নামাজে যখন ইমাম সাহেব সূরা ফাতেহা শেষ করলে আমরা বলি ‘আমিন’। নিজেরাও যখন নামাজ পড়ি বা তেলাওয়াত করি তখনো সূরা ফাতেহার শেষে আমিন বলি। এটা সুন্নত। ‘আমিন’ অর্থ, হে আল্লাহ, আপনি কবুল করুন।

এ জন্যই আমরা দোয়াতে আমিন বলি। সূরা ফাতেহার শেষে আমরা আমিন বলি, কিন্তু সূরা ফাতেহার শেষে কোরআন শরীফে এটা লেখা নেই। এটা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। হাদিসে সূরা ফাতেহার শেষে আমিন পড়ার কথা এসেছে। এর ফায়দা কী?

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তির ‘আমিন’ ফেরেশতাদের আমিনের সঙ্গে মিলে যায়, তার পূর্বের সকল গোনাহ মাফ করে দেয়া হয়। জামে তিরমিযী : ২৪৮।

হাদিসে বলা হয়েছে, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিম্বরে ওঠার সময় ‘আমিন’ বললেন। এখানে তো দোয়া করা হয়নি বা সূরা ফাতেহা তেলাওয়াত করা হয়নি, তাহলে আমিন বললেন কেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বর থেকে নামার পর সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! মিম্বরে আরোহণের সময় আমরা আপনাকে এমন কিছু বলতে শুনেছি, যা আর কখনো শুনিনি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি মিম্বরে ওঠার সময় জিব্রাইল আলাইহিস সালাম এসেছিলেন, তিনটি বদদোয়া করেছেন। আমি সে বদদোয়াগুলোর পর আমিন বলেছি।

প্রথম বদদোয়া হলো : আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হোক ওই ব্যক্তি যে রমজান পেল, কিন্তু গোনাহ মাফ করাতে পারল না। দ্বিতীয় বদদোয়া হলো : ওই ব্যক্তি আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হোক, যার সামনে আপনার নাম আলোচিত হয়েছে, অথচ সে দুরূদ পাঠ করেনি। জিব্রাইল আলাইহিস সালাম তৃতীয় বদদোয়া করেছিলেন : ওই ব্যক্তি আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হোক যে তার বাবা-মা উভয়কে বা তাদের একজনকে বৃদ্ধ অবস্থায় পেয়েছে, কিন্তু তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারেনি। মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদিস নং : ১৭৩১৭।

হজরত জিব্রাইল আ. পরপর এ তিনটি বদদোয়া করেছেন। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিটি দোয়ার শেষে বলেছেন আমিন। অর্থাৎ হে আল্লাহ! আপনি কবুল করুন। সাইয়িদুল মালাইকা ফেরেশতাকুলের সরদার দোয়া করলেন আর সাইয়িদুল কাওনাইন সমগ্র সৃষ্টি জগতের সরদার বলেছেন আমিন। এ বদদোয়া যে কবুল হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এখন চিন্তা করে দেখি, আমি আবার এ বদদোয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলাম না তো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Md Masud Hawlader ১১ মে, ২০২০, ১২:৫০ এএম says : 0
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের জন্য বারটি মাস টাইম ফ্রেম তৈরি করে দিয়েছেন। প্রতিটি মাসের জন্য আলাদা আলাদা মর্যাদা, শান-শওকত নির্ধারণ করেছেন। আর একটি মাসকে রেখেছেন শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট। এই মাসে আপনি করতে চান; যেভাবে পালন করতে চান; সবকিছুই সম্ভব। আপনি যদি সফলতা লাভ করতে তাও সম্ভব; আর যদি ব্যর্থ হতে চান তাও সম্ভব। এসব কিছু করার কর্মের স্বাধীনতাও আল্লাহ আপনাকে দিয়েছেন। এখন সিদ্ধান্ত আপনার আপনি কি করতে চান।
Total Reply(0)
Yusuf Mollah ১১ মে, ২০২০, ১২:৫১ এএম says : 0
এ পৃথিবীকে আল্লাহ আমাদের জন্য পরীক্ষাগার করে হিসেবে তৈরি করেছেন। প্রশ্ন তৈরি করে তার উত্তরপত্র মহাজীবন ব্যবস্থা গাইড স্বরূপ আল কোরআনকে আমাদের জন্য পেশ করেছেন। তাও আবার এই বরকতময় মাসে। তাইতো এ মাসকে কোরআন নাযিলের মাস বলা হয়।
Total Reply(0)
Kausar Ahmed Chowdhury ১১ মে, ২০২০, ১২:৫২ এএম says : 0
যে ব্যক্তি রমজান পেল এবং রমজানের রোজা পেলো কিন্তু নিজেকে গুনাহ মুক্ত করতে পারল না তার মতো অভাগা আর কেউ নাই। আর যে ব্যক্তি পবিত্র রমজান পেল এবং তার হদসমূহ সঠিকভাবে পালন করল। সে এমন পাপমুক্ত হল যেন সে সদ্য মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ট হল।
Total Reply(0)
Jahangir Alam ১১ মে, ২০২০, ১২:৫৩ এএম says : 0
রমজান মাসের রোজা হচ্ছে সকল মন্দ ও গুনাহের কাফ্ফার। এবং প্রত্যেক ভাল কাজ মন্দ কাজের গুনাহ সমূহকে মিটিয়ে দেয়। যেমন আল্লাহ বলেন- ইন্নাল হাসানাতি ইউজহিব্নাস সাইয়্যিআত। (সুরা হুদ : আয়াত ১১৪)
Total Reply(0)
Hajarat Nur Ahammed Karim ১১ মে, ২০২০, ১২:৫৩ এএম says : 0
মুসলিম উম্মাহর উচিত রমযানের রাত দিন হারাম কথা যথা- গীবত, পরনিন্দা ও হারাম দৃষ্টি থেকে নিজেকে হেফাজত করা, যার কুফল অন্যান্য সময়ের চেয়ে রমজানে বেড়ে যায়। আল্লাহ আমাদের হিদায়াত ও সঠিক পথে থাকার তাওফিক দান করে রমজানে নিজেদের পাপ মোচনের তাওফিক দান করুন। আমীন।
Total Reply(0)
Anwar ১১ মে, ২০২০, ১২:১৮ পিএম says : 0
যে ব্যক্তি রমজান পেল এবং রমজানের রোজা পেলো কিন্তু নিজেকে গুনাহ মুক্ত করতে পারল না তার মতো অভাগা আর কেউ নাই।
Total Reply(0)
shki ১ এপ্রিল, ২০২২, ২:৩১ পিএম says : 0
হাদসের নাম্বার ভুল দেন কেন না জানা থাকলে দিয়েননা মানুষকে শুধ শুধু হয়রানি করেন কেন ফালতু
Total Reply(0)
Abul khaer ১৪ এপ্রিল, ২০২২, ১০:৫৪ এএম says : 0
হাদিসটির আরবি দিলে ভালো হতো।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন