সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কর্ণফুলী দূষণে বিপর্যস্ত

বিলুপ্তির পথে ৩০ প্রজাতির অর্থকরী মাছ

রফিকুল ইসলাম সেলিম : | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০২০, ১২:০২ এএম

বেপরোয়া দূষণে বিষিয়ে উঠেছে দেশের অর্থনীতির প্রাণপ্রবাহ লুসাই কন্যা কর্ণফুলী। চট্টগ্রাম মহানগরীর ৭০ লাখ মানুষের গৃহস্থালী ও পয়ঃবর্জ্য খাল, নালা হয়ে পড়ছে নদীতে। পলিথিন, আবর্জনা, আমদানি পণ্যের বক্সের সঙ্গে আসা ককশিট, হাসপাতাল বর্জ্যরে সাথে যোগ হয়েছে করোনা চিকিৎসার বর্জ্য। দুইপাড়ের সাড়ে তিনশ কারখানার ক্ষতিকর বর্জ্যও পড়ছে।

লকডাউনের প্রথম একমাসে দূষণ কিছুটা কমলেও ফের বাড়ছে। দূষণে বিপর্যস্ত দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দরের ধারক কর্ণফুলীর এখন মরণদশা। বেপরোয়া দূষণে নদী তার স্বাভাবিক বৈশিষ্ট হারিয়েছে অনেক আগে। বিপন্ন পরিবেশ ও প্রতিবেশ। প্রায় ৩০ প্রজাতির অর্থকরী মাছ বিলুপ্তির পথে।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম ওয়াসার সুষ্ঠু বর্জ্য এবং পয়ঃব্যবস্থাপনা না থাকায় কর্ণফুলী তরল ও কঠিন বর্জ্যরে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার টন বর্জ্য নদীতে পড়ছে। নদী দখল করে স্থাপনার কারণেও দূষণ বাড়ছে। তলদেশে কয়েক ফুট পলিথিনের স্তর জমেছে।

লকডাউনের মধ্যেই নদী পাড়ের কলকারখানা চালু হয়েছে। বেশির ভাগ কারখানার ইটিপি না থাকায় বর্জ্য পড়ছে নদীতে।
নৌযান চলাচলও বাড়ছে। সড়কে গণপরিবহন বন্ধ। নদীপথে বেড়েছে যাতায়াত। নৌযানের জ্বালানি তেল পড়ছে নদীতে। লকডাউনমুখী ব্যবস্তায় প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদফতরের অভিযান বন্ধ। এই সুযোগে অবাধে নদীতে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে।
নগরীর নালা নর্দমা থেকে ময়লা অপসারণও প্রায় বন্ধ। এসব আবর্জনা জোয়ার ভাটার টানে নদীতে পড়ছে। চাক্তাই, মহেশখালসহ ছোট বড় অসংখ্য খাল, নালা, ছড়া হয়ে নদীতে বর্জ্য জমছে। ভাটার সময় তরল বর্জ্যে নদীর পানি ভয়ানক কালো রঙ ধারণ করে। চাক্তাই খালে নৌকা ট্রলারে মালামাল বোঝাইয়ে ব্যস্ত লোকজনকে দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চেপে ধরতে হচ্ছে।

কর্ণফুলী বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. ইদ্রিস আলী বলেন, লকডাউনের শুরুতে কলকারখানা ও নৌযানের বর্জ্য কমে যাওয়ায় নদী কিছুটা দূষণমুক্ত ছিলো। কর্ণফুলী সেতু এলাকায়ও ডলফিনের নাচন দেখা গেছে। তবে কারখানা ও নৌযান চালুর পর দূষণ বাড়ছে। মহানগরীতে বর্জ্য ও পয়ঃব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা এবং পাহাড় কাটা ও পলিথিন নিষিদ্ধ না হলে এ নদী বাঁচানো যাবে না। কর্ণফুলী প্রাকৃতিক সম্পদ, বন্দরের ধারক এ নদীকে বহুমাত্রিক দূষণের কবল থেকে রক্ষায় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত জরুরি। কারণ কর্ণফুলী বাঁচলেই দেশ বাঁচবে অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।
পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রামের পরিচালক নূর উল্লাহ নূরী বলেন, মার্চের তুলনায় এপ্রিলে নদী দুষণ কিছুটা কমেছে। পানিতে অক্সিজেনের প্রবাহও বেড়েছে। করোনায় অভিযান শিথিল হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, তবে কোন অভিযোগ পেলেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন