শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

আমফান আতঙ্ক : উৎকন্ঠায় উপকূলের কোটি মানুষ

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০২০, ৫:৪৭ পিএম

জ্যৈষ্ঠের অমাবশ্যার ভড়া কোটালে ভর করে ঘূর্ণিঝড় আমফান ১৩ বছর আগের সুপার সাইক্লোন ‘সিডর’-এর তীব্রতা নিয়ে ধেয়ে আসছে দক্ষিণ উপকূলে। উপকূলজুড়ে ক্রমশ বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। করোনা শঙ্কার মধ্যে প্রকৃতির আরেক আঘাত সহ্য করতে প্রস্তুতি গ্রহন করছে উপকূলের মানুষ। তবে ১৩ বছর আগে সিডর আঘাত হেনেছিল সোয়া ২শ’ কিলোমিটার বেগে ১৫ নভেম্বর রাতে। আর ২০১৩ সালের ১৬ মে প্রভাতে ঘূর্ণিঝড় ‘মহাশেন’-এর তীব্রতা ছিল ১২০ কিলোমিটার।
এবার যথেষ্ঠ সময় নিয়ে শক্তি সঞ্চার করে দ্বিতীয় সুপার সাইক্লোন হিসেবে দেশের দক্ষিণ উপকূলে এগিয়ে আসছে আমফান। আজ মঙ্গলবার দুপুরের পরে দক্ষিণ উপকূলের বরগুনা, পটুযাখলী, পিরোজপুর, ঝালকাঠী ও বরিশালে বিচ্ছিন্নভাবে হালকা বৃষ্টির সাথে বাতাসের গতি ছিল ১০-২৮ কিলোমিটার। আজ বিকেল থেকে আকাশ ক্রমশ কালো হয়ে আসছিল। তবে অমফানে ভর করে বৃষ্টি এখনো উপকূলে পৌছেনি।
ইতোমধ্যে দক্ষিণ উপকূলে এ ঘূর্ণিঝড় ও তার ভয়াবহতা সম্পর্কে রেডক্রিসেন্টের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)র স্বেচ্ছাসেবকগণ সতর্ক করে দিচ্ছেন। অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে নারী ও শিশুসহ বয়োবৃদ্ধদের আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানন্তর শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে আরো বেশি সংখ্যক মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে সরিয়ে আনা হচ্ছে।
সিপিপির ৭টি আঞ্চলিক কেন্দ্রের আওতায় পূর্বে টেকনাফ থেকে পশ্চিমে সুন্দরবন সংলগ্ন দুবলারচর পর্যন্ত উপকূলীয় ৪১টি উপজেলার সাড়ে ৩শ’ ইউনিয়নের ৩ হাজার ৬৯০টি ইউনিটের প্রায় ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক আমফানের হাত থেকে মানুষকে হেফজতে উদ্ধার তৎপরতাসহ দুর্যোগ পরবর্তী যেকোন পরিস্থিতির জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। উপকূলভাগে সাইরেন ও মেগাফোন দিয়ে প্রচারনার পাশাপশি সতর্কতামূলক লাল-কালো পতাকাও উত্তোলন করা হয়েছে। সিপিপি’র সদর দফতর থেকে বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জোনাল হেডকোয়াটারের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিটের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। যেকোন পরিস্থিতিতে উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার অন্তত ১৫ লাখ নারী, শিশু ও বয়োজেষ্ঠসহ অপেক্ষাকৃত দুর্বল মানুষদের সাড়ে ৪ হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে সরিয়ে নিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবকদের।
বরগুনায় ৫০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র, ভোলায় প্রায় ১ হাজার ১০৫টি, ঝালকাঠীতে ২৭৬টিসহ পটুয়াখালী, বরিশাল ও পিরোজপুরের সব আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনায় নিয়ে এসব আশ্রয় কেন্দ্র পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে।
তবে আবহাওয়া পর্যবেক্ষকদের মতে আগামীকাল বুধুবারর দুপুরের আগে আমফান বাংলাদেশে উপকূলে নাও পৌছতে পারে। সেক্ষেত্রে ইতিহাসের দ্বিতীয় সুপার সাইক্লোন আমফান যদি অমাবশ্যার ভড়া জোয়ার ভর করে রাতে আঘাত হানে তবে তা হবে আরো ভয়াবহ। এ পর্যন্ত আমফান যে গতিতে উত্তর দিকে এগিয়ে আসছে তাতে বুধবার বিকেলে আগে তা বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানার সম্ভবনা কম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন