শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

চট্টগ্রামে করোনার মধ্যেই ডেঙ্গুর হানা

রফিকুল ইসলাম সেলিম : | প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০২০, ১২:০৫ এএম

চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণের মধ্যেই শুরু হয়েছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। জনমনে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-আতঙ্ক। সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় বিপজ্জনক ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। ইতোমধ্যে করোনার সাথে ডেঙ্গু আক্রান্ত একজন মারা গেছেন। নগরীর আরও কয়েকটি এলাকায় ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়েছে।

এডিস মশাবাহিত এ রোগ প্রতিরোধে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া শঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এবার বসন্তের প্রথম দিক থেকেই মশার উপদ্রব খুব বেশি হওয়ায় ডেঙ্গুর প্রকোপ গত বছরের তুলনায় বাড়বে বলে জানান তারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে আগে থেকেই মশক নিধন কার্যক্রম জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে গত ৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সে তিনি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধন জোরদার করতে বলেন। মেয়রও প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েছিলেন এবার চট্টগ্রাম ডেঙ্গুমুক্ত থাকবে।

তবে বাস্তব চিত্র উল্টো। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার দুইদিন পর গত ৯ এপ্রিল মেয়র ক্রাশ প্রোগ্রাম উদ্বোধন করেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই কর্মসূচি থমকে গেছে। এখন রাতে দিনে মশার যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ ৭০ লাখ নগরবাসী। অভিজাত এলাকা থেকে বস্তি সর্বত্রই মশার উৎপাত। পবিত্র মাহে রমজানে মানুষ মশার উপদ্রবে ত্যক্ত বিরক্ত ক্ষুদ্ধ।

গত ১০ মে নগরীর পাথরঘাটায় কাঞ্চন দত্ত ও তার পুত্র এলিন দত্তের ডেঙ্গু ধরা পড়ে।
বুধবার জেনারেল হাসপাতালে মারা যান আকবর শাহ এলাকার এক করোনা রোগী। হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব জানান, তিনি করোনাভাইরাসের সাথে ডেঙ্গুতেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। হালিশহরেও দুইজনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে হাসপাতাল, চিকিৎসকের চেম্বারেও রোগী বাড়ছে।

এবিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. ফজলে রাব্বি বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেওয়ার আগেই সিটি কর্পোরেশনকে মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করতে বলেছি। এসময়ে ডেঙ্গু হলে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে। বিএমএ চট্টগ্রামের সভাপতি প্রফেসর ডা. মজিবুল হক খান বলেন, করোনার মধ্যে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বিপজ্জনক। মশক নিধনের পাশাপাশি জনগণকে সচেতন করতে হবে। তা না হলে ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না।

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা বলেন, মশক নিধন অব্যাহত আছে। প্রয়োজনীয় তিন কোটি টাকার ওষুধ কেনা হয়েছে। লোকবল এবং যন্ত্রপাতিরও কোন সঙ্কট নেই। মশার উপদ্রব কমে আসবে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সহ-সভাপতি সমাজসেবী মো. খোরশেদ আলম বলেন, করোনা আতঙ্কে ভেঙ্গেপড়া চিকিৎসা ব্যবস্থায় ডেঙ্গুর প্রকোপ জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। এনিয়ে সচেতন নাগরিকরা উদ্বিগ্ন। সিটি মেয়র তদারকি বাড়ালে মশক নিধন কার্যক্রম সফল হবে। স্বাস্থ্যবিভাগের হিসাবে গত বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় চার হাজার, আর মারা গেছেন ১০ জন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ