সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

ফেরেশতারাও বান্দার জন্য দোয়া করে

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

যেসব ভাগ্যবান বান্দারা সর্বদিক থেকে বিমুখ হয়ে, সারা পৃথিবীর যাবতীয় পথ ও পন্থা পরিহার করে আল্লাহ তায়ালার আনুগত্যকেই নিজেদের জীবনপদ্ধতি সাব্যস্ত করে নিয়েছে, সূরা মু’মিনে তাদের সম্পর্কেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহ তায়ালার সার্বক্ষণিক নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ আল্লাহ তায়ালার হামদ ও তাসবীহ’র সাথে সাথে তাদের পূর্বপুরুষ এবং পরিবার-পরিজনের জন্যও সর্বক্ষণ কল্যাণ প্রার্থনা করতে থাকে। কোরআন মাজীদে তাদের সেসব দোয়ার শব্দাবলীও উদ্ধৃত করা হয়েছে।

‘হে পরওয়ারদেগার, তোমার জ্ঞান এবং তোমার রহমত সর্ববিষয়ে পরিব্যাপ্ত। সুতরাং তোমার সেসব বান্দাকে ক্ষমা করে দাও যারা তোমার প্রতি নিবিষ্ট হয়েছে, তোমার হেদায়ত অনুসরণ করেছে এবং তোমার প্রদর্শিত পথে চলেছে এবং দোজখের আজাব থেকে তাদেরকে অব্যাহতি দান করো। হে পরওয়ারদেগার, তাদেরকে সে অবিনশ্বর জান্নাতসমূহে পৌঁছে দাও, যার ওয়াদা তুমি তাদের সাথে করেছ।

আর তাদের পিতামাতা, তাদের পরিবার-পরিজন ও তাদের সন্তানাদির মধ্যে যারা ভালো তাদেরকেও তাদের সাথে জান্নাতে রেখো। নিঃসন্দেহে তুমি মহা বিজ্ঞানময়। তাদেরকে কষ্ট ও অকল্যাণ থেকে রক্ষা করো। আর কেয়ামতের দিন তুমি যাদেরকে কষ্ট থেকে রক্ষা করবে তাদের প্রতিই তোমার রহমত হলো। আর এটিই হলো তাদের জন্য মহা সাফল্য।’ (সূরা মু’মিন : আয়াত ৭-৯)।

বলতে গেলে আল্লাহ তায়ালার এসব উচ্চ মর্যাদাশীল ফেরেশতাগণ যেন আল্লাহ তায়ালার বন্দেগী ও আনুগত্যপরায়ণ জীবন যাপনকারী বান্দাদের জন্য তার দরবারে কল্যাণ প্রার্থনায় নির্দেশিত। বলাই বাহুল্য, যে আল্লাহ তাদেরকে এ দোয়া প্রার্থনার নির্দেশ দিয়ে থাকবে এবং তাদের হামদ ও তাসবীহের সাথে নেককার বান্দাদের কল্যাণ প্রার্থনাকে তাদের নিয়মিত ওযীফা সাব্যস্ত করে দিয়ে থাকবেন, তিনি তাদের সে দোয়াকে কেন গ্রহণ করবেন না।

বরং কোরআন মাজীদে এ দোয়ার কথা এজন্যই উল্লেখ করা হয়েছে, যাতে মানুষ বুঝতে পারে, যেসব বান্দা আল্লাহ তায়ালার অনুগত জীবন যাপন করে এবং এ জগৎ-সংসারে তার হেদায়তের অনুবর্তী হয়ে চলে, আল্লাহ তায়ালার নিকট তাদের সম্মান ও মর্যাদা হলো এই যে, তিনি তার নিজের নিকটবর্তী ফেরেশতাদেরকে তাদের জন্য দোয়া প্রার্থী বানিয়ে দিয়েছেন। তাদের জন্য কল্যাণ প্রার্থনাকে নিজের হামদ ও সানা তথা প্রশংসা-কীর্তনেরই মতো নিয়মিত ওজীফা বা জপমালা সাব্যস্ত করা হয়েছে।

পক্ষান্তরে যেসব হতাভাগ্য আল্লাহ তায়ালার হেদায়ত এবং তার নাজিলকৃত শরীয়তের স্থলে নিজেদের রৈপিক কামনা-বাসনার আনুগত্য করে, তাদের বঞ্চনা ও ধ্বংসের কথা কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে এভাবে, ‘আর তাদের চাইতে ভ্রষ্ট-বিভ্রান্ত আর কে হতে পারে, যারা আল্লাহ তায়ালার হেদায়ত থেকে সরে গিয়ে নিজেদের রৈপিক কামনা-বাসনার আনুগত্য করে? আল্লাহ তায়ালা এ ধরনের জালেমকে হেদায়ত দান করেন না।’ (সূরা কাসাস : আয়াত ৫০)।

সূরা ফুরকানে ইরশাদ হয়েছে, ‘সেসব হতভাগ্যের প্রতি একটু লক্ষ্য করে দেখ, যারা (আল্লাহ তায়ালার বন্দেগি এবং তার হেদায়েতের আনুগত্য পরিহার করে) নিজেদের রৈপিক কামনা-বাসনার উপাসনায় লিপ্ত হয়ে গেছে। তোমরা কি তাদের সামলানোর দায়দায়িত্ব গ্রহণ করতে পার? (কক্ষণও ওরা সংশোধিত হবে না)। তোমাদের কি ধারণা, তাদের অনেকে অনেক কিছু শোনে ও বোঝে? না তা নয়, ওরা তো একান্তই বোধহীন পশুর মতো; বরং ওরা তাদের চাইতেও অধিক পথভ্রষ্ট। (সূরা ফুরকান : আয়াত ৪৩-৪৪)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (13)
তুষার আহমেদ ৩ জুন, ২০২০, ২:৫২ এএম says : 0
হে আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করো।
Total Reply(0)
কাওসার আহমেদ ৩ জুন, ২০২০, ২:৫৩ এএম says : 0
এই সুন্দর তথ্যবহুল লেখাটির জন্য লেখক উবায়দুর রহমান খান নদভী সাহেবকে অসংখ্য মোবারকবাদ জানাচ্ছি
Total Reply(0)
রফিক ৩ জুন, ২০২০, ২:৫৮ এএম says : 0
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করে দুনিয়া ও পরকালে কল্যাণ লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
Total Reply(0)
জাবেদ ৩ জুন, ২০২০, ২:৫৯ এএম says : 0
আল্লাহ তা’আলা আমাদের ঐসব নেক ‘আমল করার তাওফীক্ব দিন -আমীন।
Total Reply(0)
পারভেজ ৩ জুন, ২০২০, ৩:০০ এএম says : 0
শেষ বিদায়ের আগে আমার ইস্তিগফার কি দরবারে ইলাহীতে গৃহীত হয়েছে? নিষ্পাপ ফেরেশতাগণ কি একবারের জন্যও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে আমার জন্য মাগফিরাত প্রার্থনা করছে? এটাই হোক জীবন সায়াহ্নের শেষ জিজ্ঞাসা এবং সে মোতাবেক চলা।
Total Reply(0)
শওকতআকবর ৩ জুন, ২০২০, ৯:৫৮ এএম says : 0
প্রানাবন্ত লেখার শুভেচ্ছা মোবারকবাদ।
Total Reply(0)
তানবীর আলম ৩ জুন, ২০২০, ৭:১৬ পিএম says : 0
শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম বিভাগের এই লেখাগুলোর জন্য নিয়মিত ইনকিলাব পড়ি।
Total Reply(0)
Mamun ৩ জুন, ২০২০, ৭:১৮ পিএম says : 0
Thanks a lot for this article with the reference of Quran And Hadish
Total Reply(0)
Farjana ৩ জুন, ২০২০, ৭:১৯ পিএম says : 0
For those type of article i love The Daily Inqilab very much
Total Reply(0)
মোঃ তোফায়েল হোসেন ৩ জুন, ২০২০, ৭:৩৭ পিএম says : 0
এই পৃথিবীতে ঐ সকল মানুষই সুভাগ্যবান যাদের জন্য আসমানে দোয়া করা হয়। অর্থাৎ ফেরেশতারা দোয়া করেন। আর ফেরেশতারা হচ্ছে নিষ্পাপ, যারা সব সময় আল্লাহর ইবাদাতে মশগুল থাকে। আল্লাহ তাদেরকে বিশেষ ভাবে তৈরি করেছেন এবং বিশেষ কিছু ক্ষমতার অধিকারী করেও তাঁদেরকে বানিয়েছেন।
Total Reply(0)
কায়সার মুহম্মদ ফাহাদ ৩ জুন, ২০২০, ৭:৩৭ পিএম says : 0
রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পবিত্র অবস্থায় (ওজূ অবস্থায়) ঘুমায় তার সাথে একজন ফেরেশতা নিয়োজিত থাকেন। অতঃপর সে ব্যক্তি ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার সাথেই আল্লাহ তাআলার সমীপে ওই ফেরেশতা প্রার্থনায় বলে থাকেন, হে আল্লাহ! তোমার অমুক বান্দাকে ক্ষমা করে দাও, কেননা সে পবিত্রাবস্থায় ঘুমিয়েছিল।’ (সহীহ ইবনে হিব্বান)
Total Reply(0)
জোবায়ের আহমেদ ৩ জুন, ২০২০, ৭:৩৭ পিএম says : 0
আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মাঝে কোনো ব্যক্তি যখন ওযূ অবস্থায় সালাতের অপেক্ষায় বসে থাকে সে যেন সালাতেই রত। তার জন্য ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে ক্ষমা করো, হে আল্লাহ! তুমি তার প্রতি দয়া করো।’ (সহীহ মুসলিম ৬১৯)
Total Reply(0)
মোহাম্মদ মোশাররফ ৩ জুন, ২০২০, ৭:৩৮ পিএম says : 0
‘যে ব্যক্তি রাসূল (সা.)এর উপর দুরূদ পাঠ করবে আল্লাহতালা তার ওপর সত্তর বার দয়া করেন ও তার ফেরেশতারা তার জন্য সত্তরবার ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন